লিটনের ব্যাটে বাংলাদেশের প্রতিরোধ
আরেক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন লিটন দাস। এই ওপেনারকে চেনা আক্রমণাত্মক ঢঙে দেখা না গেলেও তিনি খেলছেন আস্থার সঙ্গে। তার ব্যাটে চড়ে চাপ সামলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় আছে বাংলাদেশ।
শুক্রবার হারারেতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে বোলিংয়ে নামা স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের শুরুটা হয় দারুণ। তাদের পেসারদের তোপে ১৯তম ওভারে ৭৪ রানে পৌঁছাতেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেছেন লিটন। এই প্রতিবেদন লেখার সময়, সফরকারীদের সংগ্রহ ৩১ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৬ রান। উইকেটে আছেন লিটন ৮২ বলে ৫৬ ও মাহমুদউল্লাহ ৩৮ বলে ১৮ রানে। তাদের অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেট জুটির সংগ্রহ ৭৪ বলে ৫২ রান।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন লিটন। তিনি ফিফটিতে পৌঁছান মুখোমুখি হওয়া ৭৮ বলে। তার ইনিংসে চার ৩টি। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিচ্ছেন অতীতে বাংলাদেশের অনেক চাপের মুহূর্তে নায়ক বনে যাওয়া মাহমুদউল্লাহ।
মূল পেসাররা আক্রমণ থেকে সরে যাওয়ায় শেষ কয়েক ওভারে নির্বিঘ্নে রান তুলছেন পিচে থাকা দুই ব্যাটার। মিডিয়াম পেসার লুক জঙ্গুই, লেগ স্পিনার রায়ান বার্ল ও অফ স্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরে চাপ জারি রাখতে পারছেন না। ফলে ১-১০ ও ১১-২০ ওভারে ঠিক ৩৮ রান করতে সমান ২টি করে উইকেট হারানো বাংলাদেশ ২১-৩০ ওভারে স্কোরবোর্ডে জমা করেছে ৪৮ রান, হারায়নি কোনো উইকেট।
এর আগে জিম্বাবুয়ে পেসাররা ইনিংসের শুরুতেই সাহায্য পান উইকেটের। তা কাজে লাগিয়ে ব্লেসিং মুজারাবানি ও টেন্ডাই চাটারা আদায় করে নেন বাড়তি বাউন্স ও মুভমেন্ট। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম দুই ওভারে হয়নি কোনো রান।
তৃতীয় ওভারের প্রথম ডেলিভারিতেই বিপদ ঘটে বাংলাদেশের। মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া লাফিয়ে ওঠা বলে কাট করতে গিয়ে উইকেট হারান তামিম। ৭ বল খেলে শূন্যতে সাজঘরে ফেরা এই ওপেনারের ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক রেজিস চাকাবা।
উইকেটে গিয়েই বাংলাদেশের নামের পাশে রান আনেন সাকিব। চমৎকার ড্রাইভে লং-অফ দিয়ে চার মারেন তিনি। পরে আরও বাউন্ডারি আদায় করে নিলেও থিতু হতে পারছিলেন তিনি। বেশ কয়েকবার ব্যাটে-বলে সংযোগ ঘটাতে ব্যর্থ হন তিনি।
সাকিব ও লিটনের জুটি যখন জমে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলছিল, তখনই ফের মঞ্চে আবির্ভূত হন মুজারাবানি। নির্বিষ ডেলিভারিতে নিজের দ্বিতীয় শিকার ধরেন তিনি। ছটফট করতে থাকা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান সাকিব জায়গায় দাঁড়িয়ে কাট করতে গিয়ে কভারে ক্যাচ দেন রায়ান বার্লের হাতে। মুশফিকুর রহিম পারিবারিক কারণে দেশে ফেরায় বাড়তি দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। কিন্তু ২৫ বলে ৩ চারে ১৯ রানে আউট হয়ে যান তিনি।
মাঠে নেমে চাপ আলগা করার প্রয়াস ছিল মিঠুনের মাঝে। কিন্তু যে কৌশল তিনি বেছে নিয়েছিলেন, তাতে শঙ্কাও থাকে। শেষ পর্যন্ত উল্টো চাপ বাড়িয়ে ফেরত যান তিনি। জায়গায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছু আক্রমণাত্মক শট খেলার পর চাকাবার তালুবন্দি হন। সে-ই জায়গায় দাঁড়িয়েই! এক প্রান্তে টানা বল করে যাওয়া চাটারা পান মিঠুনের উইকেট। ১৯ বলে ১৯ রান করেন তিনি। তার ব্যাট থেকে চার আসে ৪টি।
তৃতীয় পেসার হিসেবে আক্রমণে যাওয়া রিচার্ড এনগারাভা প্রথম দুই ওভারে তাল খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে গুছিয়ে নেন তিনি। এই বাঁহাতির সাধারণ মানের ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে আউট হন মোসাদ্দেক। তার ক্যাচও নেন চাকাবা। তিনি ১৫ বলে করেন ৫ রান।
Comments