লিটনের ব্যাটিং উপভোগ করেছে বাংলাদেশ দল

ছবি: এএফপি

গত বছর নভেম্বরে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ পান লিটন দাস। তার দীর্ঘ ছয় বছরের অপেক্ষা শেষ হয় ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে, পাকিস্তানের বিপক্ষে আগের সিরিজে। এককে দুইতে উন্নীত করতে বেশি সময় নিলেন না তিনি। ক্রাইস্টচার্চে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিদেশের মাটিতেও সেঞ্চুরি পেয়ে গেলেন লিটন। বাংলাদেশের অন্য ব্যাটাররা যেখানে ইনিংস বড় করতে ভুগলেন, সেখানে বাহারি সব শটে কিউই বোলারদের পাল্টা জবাব দিলেন তিনি। তার নান্দনিক ব্যাটিং ভীষণ উপভোগ করার কথা জানালেন অধিনায়ক মুমিনুল হক।

হ্যাগলি ওভালে নিউজিল্যান্ড রানের পাহাড় গড়ার পর বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে একদম হতাশ করে। গুটিয়ে যায় কেবল ১২৬ রানে। ম্যাচের ফল তখনই অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যায়। মঙ্গলবার টেস্টের তৃতীয় দিনে সেই অনুমিত পথেই এগিয়েছে ম্যাচ। ফলো-অনে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে সফরকারীরা পৌঁছাতে পারে ২৭৮ পর্যন্ত। ইনিংস ও ১১৭ রানের বিশাল হারে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছে বাংলাদেশ। এর আগে ছন্দে থাকা লিটন উপহার দেন নজরকাড়া ব্যাটিং। চোখ ধাঁধানো নৈপুণ্যে আরেকবার তিনি প্রমাণ রাখেন নিজের সামর্থ্য ও দক্ষতার।

ডানহাতি ব্যাটার লিটন যখন ক্রিজে যান, তখন বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ১০৫। অল্প সময়ের মধ্যে তাকে রেখে সাজঘরে ফিরে যান মুমিনুল আর ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বিও। সেই ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নুরুল হাসান সোহানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি গড়েন শতরানের জুটি। ড্রাইভ, পুল, কাট- নানা রকম শটে মুগ্ধ করেন স্টেডিয়াম উপস্থিত ও টেলিভিশনের পর্দায় খেলা দেখতে থাকা দর্শকদের। অন্যপ্রান্তে সঙ্গী হারানো চলতে থাকলেও তিনি ঠিকই তুলে নেন তার দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি।

প্রথম ৩০ বলে লিটনের রান ছিল ৬। সময় নিয়ে মানিয়ে নেওয়ার পর হাত খোলেন তিনি। ঝুঁকি না নিয়ে বলের গুরুত্ব মেপে খেলেন শট। ৬৯ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর তিন অঙ্কে পৌঁছান মাত্র ১০৬ বলে। মাঝে আঙুলে বল লাগায় ম্যাজিক স্প্রে ব্যবহার করতে হয় তাকে, পেঁচাতে হয় টেপও। সেঞ্চুরি করার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেননি লিটন। নিউজিল্যান্ডের পেসার কাইল জেমিসনের ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান। রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। তার ১১৪ বলে ১০২ রানের ইনিংসে ছিল ১৪ চার ও ১ ছক্কা।

ম্যাচের শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলনেতা মুমিনুলের কণ্ঠে ঝরে লিটনকে নিয়ে স্তুতি, 'ওর ব্যাটিং দেখলে যেটা মনে হয়, ও টেকনিক্যালি অনেক দারুণ। আপনারা সবাই সেটা জানেন। ওর ব্যাটিং দেখলে মনে হয়, (বল মারার আগে) ও অনেক সময় পায়, বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের মতো। আমার মনে হয়, খারাপ বল ছাড়া ও মারতে যায়নি। যেগুলোতে রান করার, সেগুলোতে রান না করলে রান হবে না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে করতে যখন খারাপ বলের পরিমাণ বেড়েছে, তখন সেই বলগুলো সে মেরেছে।'

দলের সবাই লিটনের ব্যাটিংয়ে খুব খুশি হয়েছে বলে জানান তিনি, '(লিটনের) ব্যাটিং দেখতে খুবই ভালো লাগছিল। আমরা অনেক বেশি খুশি হয়েছি। টানা দুটি সিরিজে ও একশ করেছে। দলের সবাই খুব খুশি হয়েছে। আমিও অনেক উপভোগ করেছি ওর ব্যাটিংটা।'

টেস্ট ক্রিকেটে ২৭ বছর বয়সী লিটনের সময়টা কাটছে দুর্দান্ত। সবশেষ ১৬ ইনিংসের নয়টিতে পঞ্চাশ পেরিয়েছেন তিনি। দুটিকে রূপ দিয়েছেন সেঞ্চুরিতে।

Comments

The Daily Star  | English

Unpacking the proposed reforms to our revenue system

The primary logic behind the separation of revenue tasks at issue is to inject an element of operational independence into the proposed bodies.

8h ago