মাধেভেরের ফিফটি ও বার্লের ঝড়ে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৬৭
ওপেনার ওয়েসলি মাধেভেরে এক প্রান্ত আগলে খেললেন ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। তার গড়ে দেওয়া ভিত কাজে লাগিয়ে শেষে ঝড় তুললেন রায়ান বার্ল। তাদের কল্যাণে বাংলাদেশকে চ্যালঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল জিম্বাবুয়ে।
শুক্রবার হারারেতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৬ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। অসাধারণ ইনিংসে ৭৩ রান আসে ডানহাতি মাধেভেরের ব্যাট থেকে। ৫৭ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৫ চার ও ৩ ছক্কা। সমান ২টি করে চার ও ছয়ে বার্ল অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ৩৪ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে শরিফুল ৩ উইকেট নেন ৩৩ রানে।
একাদশে অলরাউন্ডারের ছড়াছড়ি থাকায় সাত বোলার ব্যবহার করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা যাতে মানিয়ে নিতে না পারেন, সেজন্য ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাদের আক্রমণে আনা হয়। তবে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো এবং ফিল্ডিং আশানুরূপ না হওয়ায় জিম্বাবুয়ে পেয়েছে লড়াইয়ের পুঁজি।
আগের ম্যাচে ৮ উইকেটের অনায়াস জয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে সফরকারীরা। এদিন ১৬৭ রানের লক্ষ্য টপকে গেলে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নেবে তারা।
শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন শেখ মেহেদী হাসান। এই অফ স্পিনারের প্রথম দুই ডেলিভারিতে যথাক্রমে ছয় ও চার মারেন মাধেভেরে। তবে পঞ্চম ডেলিভারিতে আরেক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে বোল্ড করে দেন তিনি।
১৫ রানে জিম্বাবুয়ের ওপেনিং জুটি ভেঙে পরের ওভারেই ফের উইকেট প্রাপ্তির উল্লাস করতে পারত বাংলাদেশ। তবে মোস্তাফিজুর রহমানের বদলে একাদশে ফেরা তাসকিন আহমেদের বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান রেজিস চাকাভা। ভুল বোঝাবোঝিতে বল পড়ে শরিফুল ও শেখ মেহেদীর মাঝে।
আগের ম্যাচে ঝড় তোলা চাকাভা অবশ্য সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে এসেই তাকে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে মিড-অফে শরিফুলের হাতে ধরা পড়লে থামে তার ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংস।
২ উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে বেশ ভালো গতিতে রান আনে স্বাগতিকরা। স্কোরবোর্ডে ৪৮ রান জমা করায় মূল কৃতিত্ব ছিল মাধেভেরের।
উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো হলেও জিম্বাবুয়ের তৃতীয় উইকেট জুটিতে রানের চাকায় লাগাম টানে বাংলাদেশ। মাধেভেরে ও মায়ার্স ৫৭ রান যোগ করতে খেলেন ৪৯ বল। তাদের বিচ্ছিন্ন করে দলকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু দেন শরিফুল। ডিপ পয়েন্টে শেখ মেহেদীর তালুবন্দি হওয়া মায়ার্স ২১ বলে করেন ২৬ রান।
এই জুটি ভাঙার সুযোগ বেশ কয়েকবার পেয়েছিল বাংলাদেশ। দশম ওভারে দুই ব্যাটসম্যানকেই রানআউটের সুযোগ হাতছাড়া হয়। সাকিবের পরের ওভারে শর্ট মিড অফে মাধেভেরের সহজ ক্যাচ ফেলেন মাহমুদউল্লাহ। তখন তিনি ছিলেন ৪৪ রানে।
মায়ার্সের আউটের দুই বল আগে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন মাধেভেরে। আগ্রাসী শুরুর পর কিছুটা খোলসে ঢুকে পড়ায় ৪৫ বল লেগে যায় তারা। তবে ব্যক্তিগত মাইলফলক পেরিয়েই ফের ঝড় তোলেন তিনি। তাসকিন ও সাকিবকে তাদের শেষ ওভারে ছক্কা মেরে বিদায় জানান তিনি।
অধিনায়ক সিকান্দার রাজা সৌম্য সরকারের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ টেকেননি মাধেভেরেও। ১৮তম ওভারে বড় শট খেলতে গিয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। মিড-অফে আফিফ হোসেন নেন দুর্দান্ত ক্যাচ।
ছয়ে নামা বাঁহাতি বার্লের আগ্রাসনে শেষ ৬ ওভারে ৬৫ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে তিনি ক্যাচ তুললেও হাতে জমাতে পারেননি সৌম্য। শেষ বলে লুক জঙ্গুয়ের ক্যাচ সাকিব লুফে নিলে তৃতীয় উইকেটের দেখা পান শরিফুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৬৬/৬ (মারুমানি ৩, মাধেভেরে ৭৩, চাকাভা ১৪, মায়ার্স ২৬, রাজা ৪, বার্ল ৩৪*, জঙ্গুয়ে ২; তাসকিন ০/২৮, শেখ মেহেদী ১/১১, শরিফুল ৩/৩৩, সাইফউদ্দিন ০/৩৬, সাকিব ১/৩২, সৌম্য ০/১৬, শামীম ০/৭)।
Comments