অলিম্পিক দেখতে ৩৪ লাখ টাকার টিকেট কিনেছেন এক জাপানি

কাজুনোরি তাকিশিমা। নিজ দেশ জাপানকে সমর্থন দিতে গত ১৫ বছর ধরে অলিম্পিক আয়োজক সব দেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন। আর এবার তো ঘরেই হচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় এ আসর। এটা কি দেখে থাকা পারা যায়? তাই নিজ দেশের প্রায় সব ইভেন্টের টিকেট সংগ্রহ করেছেন তিনি। এর জন্য তাকে খরচ করতে হয়েছে ৪০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৪ লাখ টাকা। কিন্তু তার স্বপ্নে বড় ধাক্কা লেগেছে আয়োজকদের নতুন সিদ্ধান্তে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় গত সপ্তাহে এবারের অলিম্পিকে দর্শক ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে আয়োজকরা। তাতেই যেন মাথায় বাজ পড়েছে তাকিশিমার। নিজ দেশে অলিম্পিক আয়োজন হবে, আর তাকে তা দেখতে হবে টেলিভিশনে। ৩৪ লাখ টাকা খরচ করে ১৯৭টি টিকেট কিনেও একটি ইভেন্টও মাঠে দেখা হবে না তার, 'এর (টিকেট সংগ্রহ) জন্য কেবল টাকাই খরচ হয়নি, অবিশ্বাস্য পরিমাণ সময়, প্রচেষ্টা এবং আবেগও জড়িত রয়েছে।'

৪৫ বছর বয়সী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী তাকিশিমার সামনে অবিশ্বাস্য এক রেকর্ড গড়ার সুযোগ ছিল। এবার যদি সে বুক করা সব ইভেন্টগুলো মাঠে বসে দেখতে পারতেন, তাহলে গিনেস বুকে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়তে পারতেন। সবচেয়ে অলিম্পিক ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা ব্যক্তি হতে পারতেন তিনি। অলিম্পিক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক্রয় করা টিকেটের অর্থ ফেরত পাবেন। কিন্তু নিজেকে এমন উচ্চতায় তুলে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার কষ্ট ভুলতে পারছেন না এ জাপানি।

তাই যখনই টিকেটগুলোর দিকে তাকান, তখনই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাকিশিমা, 'অলিম্পিক নিয়ে আমি এতটাই আগ্রহী ছিলাম যে এটা খুব কঠিন এবং চ্যালেঞ্জিং হলেও আমি টিকিট কেনার প্রক্রিয়াটি উপভোগ করেছি। আমার এখন যা কিছু আছে তা হলো দুঃখ এবং যতবার আমি টিকিটের দিকে তাকাই, কান্নাকাটি করি। আমি খুবই কষ্ট পাচ্ছি।।'

২০০৫ সালে ফিগার স্কেটিংয়ের একটি ইভেন্ট দেখে অলিম্পিকের প্রেমে পড়েন তাকিশিমা। তৎক্ষণাৎ ২০০৬ তুরিন অলিম্পিকের (শীতকালীন) টিকেট কিনেন। তারপর থেকেই অলিম্পিকের নিয়মিত দর্শক তিনি। কিন্তু এবার নিজ দেশে মাঠে দর্শক না হতে পারার হতাশ গোপন করতে পারেননি তাকিশিমা, 'দর্শকদের নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত (আক্রান্তের) সংখ্যার চেয়ে আবেগের ভিত্তিতে হয়েছে। আমি মনে করি যে ইউরোপীয় দেশগুলোতে যেখানে ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আমি সরকার এবং টোকিও অলিম্পিকের আয়োজক কমিটির উপর সত্যিই হতাশ।'

টোকিও অলিম্পিক গত বছরই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এক বছর পিছিয়ে আনা হয়। শুরুতে দর্শক ঢোকার অনুমতি থাকলেও গত সপ্তাহে তা নিষিদ্ধ করেছে আয়োজক কমিটি। কেবল মাত্র সীমিত সংখ্যক সাংবাদিক ও নির্বাচিত কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারবেন মাঠে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় জাপানের চারটি শহরে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এক সপ্তাহেই নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে হাজারের উপরে। 

Comments

The Daily Star  | English

Cybergangs breaking into NBR server at will

On May 20, 2024, Chattogram Custom House Deputy Commissioner Mohammad Zakaria was in Kolkata, India, where he had gone for treatment a week earlier.

15h ago