ভ্রমণে ভোজন
ঈদের আগে চাপটা থাকে শপিংমলে; আর পরে সেটা গিয়ে পড়ে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। ঈদের ছুটিতে সবাই নিজের পছন্দমতো জায়গায় পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বেড়াতে যান, চেষ্টা করেন সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ছুটির এই দিনগুলো উপভোগ করতে। ভ্রমণের একটি অংশ থাকে খাবার-দাবারের বিষয়। সবাই চেষ্টা করেন ঘুরতে এসে সেখানকার প্রসিদ্ধ কোনো খাবারের স্বাদ নিতে। কিংবা নামকরা রেস্তোরাঁর খাবার চেখে দেখতে। তবে কোন রেস্তোরাঁ আসলেই ভালো আর কোনটি নয়, সেটাও আবার বোঝার তেমন কোনো উপায় নেই। তার মধ্যেও থাকে ভালো কিছু। যেখানে ভিড় জমান ভ্রমণার্থীরা। এবারের ঈদ আয়োজনে দেয়া হলো ঢাকার
বাইরের বিখ্যাত সব পর্যটন স্পটের জনপ্রিয় কয়েকটি রেস্তোরাঁর খোঁজ।
সিলেট
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম পছন্দের জায়গা। আর সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারগুলো আকর্ষণ করতে পারে পর্যটকদের। সিলেট ঘুরতে গেলে যে দুটি জায়গার খাবার মিস করা চলবেই না, তা হলোÑ পাঁচভাই রেস্টুরেন্ট ও পানসী রেস্টুরেন্ট। পাঁচভাই রেস্টুরেন্টের নাম সিলেটের সবার মুখে মুখেই শোনা যায়। নগরীর দাঁড়িয়া মোড়ে বড় সাইনবোর্ডে দেখা যাবে এই রেস্টুরেন্টের নাম। হোটেলের সামনের লাইন দেখেই আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন এটাই সেই পাঁচভাই রেস্তোর্রা। ভর্তা, ভাজি থেকে শুরু করে মাংস, কলিজা ভুনা সবকিছুই মিলবে একেবারে সুলভমূল্যে। আর খাবারের শেষে আয়েশ করে ডেজার্ট হিসেবে খেতে পারেন দই কিংবা ফালুদা। বিশেষ করে পাঁচভাই-এর ফালুদার অতুলনীয় স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো।
আরেক রেস্টুরেন্ট পানসীর অবস্থান জিন্দাবাজারের জাল্লারপার রোডে। পাঁচভাই-এর মতোই এখানে পাবেন দেশি সব রকমের খাবার। তাও আবার সাধ্যের মধ্যেই। সিলেট ভ্রমণে গিয়ে এই দুটি জায়গায় খাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখা আবশ্যক। তা নাহলে সেই আফসোস হয়তো বয়ে বেড়াতে হবে আরেকবার সিলেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
শ্রীমঙ্গল
জেলা নয়, একটি উপজেলাই দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্রÑ শ্রীমঙ্গলের ক্ষেত্রে কথাটি প্রযোজ্য সবক্ষেত্রে। একদিকে লাউয়াছড়ার গহিন অভয়ারণ্য আর অন্যদিকে মাধবপুর লেকের নির্জন পরিবেশ; সবকিছুই যেন প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে সাজিয়েছে। এছাড়া চা-বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তো রয়েছেই শ্রীমঙ্গলজুড়ে। এই সবুজের দেশে এসে একটু ভালো আর মজাদার খাবারে উদরপূর্তির ইচ্ছে তো হতেই পারে। আর সেই আয়োজন নিয়েই শ্রীমঙ্গল সদরে রয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট। সিলেটি খাবারের অসাধারণ আয়োজন; আরামদায়ক আর আড্ডা দেয়ার মতো পরিবেশ; সবমিলিয়ে মন ভালো করে দিতে বাধ্য কুটুমবাড়ি। দেয়ালে লাগানো অসাধারণ কিছু আলোকচিত্র, সোফায় পা মুড়ে বসার সুযোগ আর গানের জলসা প্রতিরাতেই শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মুগ্ধ করতে সক্ষম। আর খাবারের বেলাতেও ঠিক তাই। বাংলা খাবার থেকে শুরু করে নানা রকমের মেন্যু থেকে বাছাই করার সুযোগ রয়েছে। সিলেটের বিখ্যাত সাতকড়া দিয়ে তৈরি নানা রেসিপি আগত খাদ্যরসিকদের মুগ্ধ করবে নিশ্চিতভাবে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন রকমের সেট মেন্যু, যা বেশ সাশ্রয়ীও।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে অগণিত। সেসব চেখে দেখার অন্যতম একটি জায়গা হতে পারে হোটেল জামান। চট্টলার খাবারের স্বাদ বহুদিন ধরেই গর্ব ও সফলতার সঙ্গে বহন করে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি। বিখ্যাত মেজবানি মাংস, পায়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবারের স্বাদ পেতে চট্টগ্রামে গিয়ে জামান হোটেলে অবশ্যই ঢুঁ মারতে পারেন। মিলবে প্রকৃত চাটগাঁইয়া রসনার স্বাদ।
যারা ভাবেন শুধু পুরান ঢাকার বিরিয়ানিই স্বাদে ও সৌরভে সেরা, তাদের ভুল ধারণ ভেঙে যাবে হোটেল জামান-এ এসে। জামান হোটেল বিখ্যাত বিরিয়ানির জন্য। বিফ, চিকেন কিংবা মাটন বিরিয়ানির স্বাদ অতুলনীয়। চট্টগ্রাম এখন রেস্টুরেন্ট কিংবা খাবার দোকানের দিক থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই রাজধানী ঢাকা থেকে। বিভিন্ন স্বাদ আর মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে শহরজুড়েই। এদের মধ্যে বিখ্যাত কিছু রেস্টুরেন্টের কথা বলতে চাইলে উঠে আসবে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা এবং হান্ডির নাম। রসনাবিলাসের দিক থেকে চট্টগ্রাম পিছিয়ে নেই কোনো দিক থেকেই। বরং বিভিন্ন রসনা আর স্বাদের সমন্বয় ভ্রমণের সঙ্গে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে বন্দরনগরীকে।
খাগড়াছড়ি
যারা খাগড়াছড়ি যাওয়ার প্ল্যান করছেন এই ঈদের ছুটিতে তাদের জন্য সিস্টেম রেস্টুরেন্টে খাওয়া অত্যাবশ্যক। বাঙালি খাবারের বাইরে গিয়ে পাহাড়ি পরিবেশে পাহাড়ি খাবার চেখে না দেখলে কি হয়?
কচি বাঁশের ভাজি থেকে শুরু করে উপজাতীয় কায়দায় রান্না করা নানা রকমের খাবারের স্বাদ পেতে সিস্টেম তুলনাহীন। এটা এখন বিখ্যাত হয়ে উঠেছে পর্যটকদের আকর্ষণের কারণেই। খাবারের স্বাদ এবং সুলভ মূল্যের খাবারের জন্যই রেস্টুরেন্টটি পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয়। তাই এই ঈদের ছুটিতে খাগড়াছড়ি বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে অন্তত একবারের জন্য হলেও সিস্টেমে খাওয়ার জন্য সময় রেখে দিতে ভুলবেন না। নিঃসন্দেহে সিস্টেমের খাবার পছন্দ করতে বাধ্য হবেন আপনি।
রাঙ্গামাটি
রাঙ্গামাটি দেশের পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর ঈদের ছুটিতে সেখানে বেড়াতে যাওয়ার মানুষের আনাগোনা বাড়বে সেটাই স্বাভাবিক। তাই খাবারের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আগেভাগেই। কাপ্তাই হ্রদের চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা পরিবেশের ছোট্ট এক টিলার ওপর পেদা টিং টিং-এর অবস্থান। চাকমা ভাষায় ‘পেদা টিং টিং’-এর অর্থ পেট টান টান, অর্থাৎ ক্ষুধা পেয়েছে। সত্যি লেকে ঘুরতে ঘুরতে রেস্টুরেন্টটি দেখে ক্ষুধা পেয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে চিন্তা নেই! পেদা টিং টিং-এর সাধারণ বাঁশে মুরগি কিংবা কাঁচকি মাছের চচ্চড়ি স্বাদের নতুন অনুভূতি দিতে পারে। সেইসঙ্গে পাহাড়ি বিভিন্ন রান্না তো রয়েছেই; যেমন- বিগল বিচি, কচি বাঁশের তরকারি, কেবাং। এসব খাবারই এই রেস্টুরেন্টের মেন্যুর বিশেষ আকর্ষণ। অন্যান্য সাধারণ রেস্টুরেন্টের তুলনায় পেদা টিং টিং-এর খাবারের খরচ কিছুটা বেশি; তবে বেড়াতে এসে ভালো আর ভিন্ন স্বাদ পেতে এটুকু খরচে কেউ কার্পণ্য করবেন না নিশ্চয়ই। রাঙ্গামাটি বেড়াতে এলে তাই পেদা টিং টিংকে বলা যায় এক রকমের মাস্ট হ্যাভ রেস্টুরেন্ট।
কক্সবাজার
ভ্রমণ নিয়ে কথা হবে, খাবার নিয়ে কথা হবে আর সেখানে কক্সবাজারের নাম থাকবে না তা কখনো হতে পারে? বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পর্যটন স্পটে এখন ফুড শপ আর রেস্টুরেন্টের ছড়াছড়ি। পর্যটকরাও নিজের পছন্দমতো সি-ফুড খেতে চলে যান রাস্তার পাশের দোকানগুলোয়। তবে এত ভিড়েও পৌষী রেস্টুরেন্ট ঠিকই খাবারের মান ও স্বাদে পর্যটকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। সাগরের তাজা মাছ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে একেবারে বিশুদ্ধ বাংলা খাবার খেতে চাইলে পৌষী হতে পারে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ। এই ধরনের আরেকটি রেস্তোরাঁ হলো ঝাউবন। অনেক পুরনো এই রেস্তোরাঁটি রূপচাঁদা ফ্রাইয়ের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও কক্সবাজারেও গড়ে উঠেছে নানা মানের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট। মারমেইড ক্যাফে, হান্ডির মতো রেস্তোরাঁতেও যাওয়া যেতে পারে ভিন্ন স্বাদের খোঁজে। তবে একটা দিনের খাবার পৌষীতে না খেলে কক্সবাজার ভ্রমণটাই বিফল
হতে পারে।
কুয়াকাটা
সবশেষে কোনো দোকান বা রেস্টুরেন্ট নয়, মজার এক খাবারের সন্ধান দিয়ে শেষ করি খাবারের এই ভ্রমণ। সাগরকন্যা কুয়াকাটা, দেশের অন্যতম পর্যটন স্থান। কক্সবাজারে বেশি মানুষের ভিড় এড়াতে অনেকেই এখন রওনা দেন কুয়াকাটার পথে। কুয়াকাটার অন্যতম স্থান লেবুর চর, যেখানে খুব বেশি পর্যটকের ভিড় থাকে না। তবে রসনাবিলাসীদের কোনোভাবেই উচিত হবে না কুয়াকাটা গিয়ে লেবুর চরের কাঁকড়া ভুনা না খেয়ে ফিরে আসা। লেবুর চরে ছোট্ট দুটি ছাউনিতে সাগরপাড়ে বড় হওয়া শিশুদের কাছ থেকে কাঁকড়া কিংবা মাছভাজি অনেকটাই অমৃতের কাছাকাছি, যা রসনাবিলাসীদের কোনোভাবেই মিস করা ঠিক হবে না।
ভ্রমণে গেলে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো চেখে দেখা পর্যটনেরই গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ। তাই যেখানেই ভ্রমণে যান, অন্তত একবার সেই এলাকার আকর্ষণীয় খাবারগুলোর স্বাদ নিন, আর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে পুরে নিন নতুন রসনাবিলাসের গল্প।
জান্নাতুল ইসলাম শিখা
ঈদের আগে চাপটা থাকে শপিংমলে; আর পরে সেটা গিয়ে পড়ে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। ঈদের ছুটিতে সবাই নিজের পছন্দমতো জায়গায় পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বেড়াতে যান, চেষ্টা করেন সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ছুটির এই দিনগুলো উপভোগ করতে। ভ্রমণের একটি অংশ থাকে খাবার-দাবারের বিষয়। সবাই চেষ্টা করেন ঘুরতে এসে সেখানকার প্রসিদ্ধ কোনো খাবারের স্বাদ নিতে। কিংবা নামকরা রেস্তোরাঁর খাবার চেখে দেখতে। তবে কোন রেস্তোরাঁ আসলেই ভালো আর কোনটি নয়, সেটাও আবার বোঝার তেমন কোনো উপায় নেই। তার মধ্যেও থাকে ভালো কিছু। যেখানে ভিড় জমান ভ্রমণার্থীরা। এবারের ঈদ আয়োজনে দেয়া হলো ঢাকার
বাইরের বিখ্যাত সব পর্যটন স্পটের জনপ্রিয় কয়েকটি রেস্তোরাঁর খোঁজ।
সিলেট
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম পছন্দের জায়গা। আর সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারগুলো আকর্ষণ করতে পারে পর্যটকদের। সিলেট ঘুরতে গেলে যে দুটি জায়গার খাবার মিস করা চলবেই না, তা হলোÑ পাঁচভাই রেস্টুরেন্ট ও পানসী রেস্টুরেন্ট। পাঁচভাই রেস্টুরেন্টের নাম সিলেটের সবার মুখে মুখেই শোনা যায়। নগরীর দাঁড়িয়া মোড়ে বড় সাইনবোর্ডে দেখা যাবে এই রেস্টুরেন্টের নাম। হোটেলের সামনের লাইন দেখেই আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন এটাই সেই পাঁচভাই রেস্তোর্রা। ভর্তা, ভাজি থেকে শুরু করে মাংস, কলিজা ভুনা সবকিছুই মিলবে একেবারে সুলভমূল্যে। আর খাবারের শেষে আয়েশ করে ডেজার্ট হিসেবে খেতে পারেন দই কিংবা ফালুদা। বিশেষ করে পাঁচভাই-এর ফালুদার অতুলনীয় স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো।
আরেক রেস্টুরেন্ট পানসীর অবস্থান জিন্দাবাজারের জাল্লারপার রোডে। পাঁচভাই-এর মতোই এখানে পাবেন দেশি সব রকমের খাবার। তাও আবার সাধ্যের মধ্যেই। সিলেট ভ্রমণে গিয়ে এই দুটি জায়গায় খাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখা আবশ্যক। তা নাহলে সেই আফসোস হয়তো বয়ে বেড়াতে হবে আরেকবার সিলেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
শ্রীমঙ্গল
জেলা নয়, একটি উপজেলাই দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্রÑ শ্রীমঙ্গলের ক্ষেত্রে কথাটি প্রযোজ্য সবক্ষেত্রে। একদিকে লাউয়াছড়ার গহিন অভয়ারণ্য আর অন্যদিকে মাধবপুর লেকের নির্জন পরিবেশ; সবকিছুই যেন প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে সাজিয়েছে। এছাড়া চা-বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তো রয়েছেই শ্রীমঙ্গলজুড়ে। এই সবুজের দেশে এসে একটু ভালো আর মজাদার খাবারে উদরপূর্তির ইচ্ছে তো হতেই পারে। আর সেই আয়োজন নিয়েই শ্রীমঙ্গল সদরে রয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট। সিলেটি খাবারের অসাধারণ আয়োজন; আরামদায়ক আর আড্ডা দেয়ার মতো পরিবেশ; সবমিলিয়ে মন ভালো করে দিতে বাধ্য কুটুমবাড়ি। দেয়ালে লাগানো অসাধারণ কিছু আলোকচিত্র, সোফায় পা মুড়ে বসার সুযোগ আর গানের জলসা প্রতিরাতেই শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মুগ্ধ করতে সক্ষম। আর খাবারের বেলাতেও ঠিক তাই। বাংলা খাবার থেকে শুরু করে নানা রকমের মেন্যু থেকে বাছাই করার সুযোগ রয়েছে। সিলেটের বিখ্যাত সাতকড়া দিয়ে তৈরি নানা রেসিপি আগত খাদ্যরসিকদের মুগ্ধ করবে নিশ্চিতভাবে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন রকমের সেট মেন্যু, যা বেশ সাশ্রয়ীও।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে অগণিত। সেসব চেখে দেখার অন্যতম একটি জায়গা হতে পারে হোটেল জামান। চট্টলার খাবারের স্বাদ বহুদিন ধরেই গর্ব ও সফলতার সঙ্গে বহন করে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি। বিখ্যাত মেজবানি মাংস, পায়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবারের স্বাদ পেতে চট্টগ্রামে গিয়ে জামান হোটেলে অবশ্যই ঢুঁ মারতে পারেন। মিলবে প্রকৃত চাটগাঁইয়া রসনার স্বাদ।
যারা ভাবেন শুধু পুরান ঢাকার বিরিয়ানিই স্বাদে ও সৌরভে সেরা, তাদের ভুল ধারণ ভেঙে যাবে হোটেল জামান-এ এসে। জামান হোটেল বিখ্যাত বিরিয়ানির জন্য। বিফ, চিকেন কিংবা মাটন বিরিয়ানির স্বাদ অতুলনীয়। চট্টগ্রাম এখন রেস্টুরেন্ট কিংবা খাবার দোকানের দিক থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই রাজধানী ঢাকা থেকে। বিভিন্ন স্বাদ আর মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে শহরজুড়েই। এদের মধ্যে বিখ্যাত কিছু রেস্টুরেন্টের কথা বলতে চাইলে উঠে আসবে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা এবং হান্ডির নাম। রসনাবিলাসের দিক থেকে চট্টগ্রাম পিছিয়ে নেই কোনো দিক থেকেই। বরং বিভিন্ন রসনা আর স্বাদের সমন্বয় ভ্রমণের সঙ্গে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে বন্দরনগরীকে।
খাগড়াছড়ি
যারা খাগড়াছড়ি যাওয়ার প্ল্যান করছেন এই ঈদের ছুটিতে তাদের জন্য সিস্টেম রেস্টুরেন্টে খাওয়া অত্যাবশ্যক। বাঙালি খাবারের বাইরে গিয়ে পাহাড়ি পরিবেশে পাহাড়ি খাবার চেখে না দেখলে কি হয়?
কচি বাঁশের ভাজি থেকে শুরু করে উপজাতীয় কায়দায় রান্না করা নানা রকমের খাবারের স্বাদ পেতে সিস্টেম তুলনাহীন। এটা এখন বিখ্যাত হয়ে উঠেছে পর্যটকদের আকর্ষণের কারণেই। খাবারের স্বাদ এবং সুলভ মূল্যের খাবারের জন্যই রেস্টুরেন্টটি পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয়। তাই এই ঈদের ছুটিতে খাগড়াছড়ি বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে অন্তত একবারের জন্য হলেও সিস্টেমে খাওয়ার জন্য সময় রেখে দিতে ভুলবেন না। নিঃসন্দেহে সিস্টেমের খাবার পছন্দ করতে বাধ্য হবেন আপনি।
রাঙ্গামাটি
রাঙ্গামাটি দেশের পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর ঈদের ছুটিতে সেখানে বেড়াতে যাওয়ার মানুষের আনাগোনা বাড়বে সেটাই স্বাভাবিক। তাই খাবারের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আগেভাগেই। কাপ্তাই হ্রদের চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা পরিবেশের ছোট্ট এক টিলার ওপর পেদা টিং টিং-এর অবস্থান। চাকমা ভাষায় ‘পেদা টিং টিং’-এর অর্থ পেট টান টান, অর্থাৎ ক্ষুধা পেয়েছে। সত্যি লেকে ঘুরতে ঘুরতে রেস্টুরেন্টটি দেখে ক্ষুধা পেয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে চিন্তা নেই! পেদা টিং টিং-এর সাধারণ বাঁশে মুরগি কিংবা কাঁচকি মাছের চচ্চড়ি স্বাদের নতুন অনুভূতি দিতে পারে। সেইসঙ্গে পাহাড়ি বিভিন্ন রান্না তো রয়েছেই; যেমন- বিগল বিচি, কচি বাঁশের তরকারি, কেবাং। এসব খাবারই এই রেস্টুরেন্টের মেন্যুর বিশেষ আকর্ষণ। অন্যান্য সাধারণ রেস্টুরেন্টের তুলনায় পেদা টিং টিং-এর খাবারের খরচ কিছুটা বেশি; তবে বেড়াতে এসে ভালো আর ভিন্ন স্বাদ পেতে এটুকু খরচে কেউ কার্পণ্য করবেন না নিশ্চয়ই। রাঙ্গামাটি বেড়াতে এলে তাই পেদা টিং টিংকে বলা যায় এক রকমের মাস্ট হ্যাভ রেস্টুরেন্ট।
কক্সবাজার
ভ্রমণ নিয়ে কথা হবে, খাবার নিয়ে কথা হবে আর সেখানে কক্সবাজারের নাম থাকবে না তা কখনো হতে পারে? বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পর্যটন স্পটে এখন ফুড শপ আর রেস্টুরেন্টের ছড়াছড়ি। পর্যটকরাও নিজের পছন্দমতো সি-ফুড খেতে চলে যান রাস্তার পাশের দোকানগুলোয়। তবে এত ভিড়েও পৌষী রেস্টুরেন্ট ঠিকই খাবারের মান ও স্বাদে পর্যটকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। সাগরের তাজা মাছ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে একেবারে বিশুদ্ধ বাংলা খাবার খেতে চাইলে পৌষী হতে পারে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ। এই ধরনের আরেকটি রেস্তোরাঁ হলো ঝাউবন। অনেক পুরনো এই রেস্তোরাঁটি রূপচাঁদা ফ্রাইয়ের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও কক্সবাজারেও গড়ে উঠেছে নানা মানের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট। মারমেইড ক্যাফে, হান্ডির মতো রেস্তোরাঁতেও যাওয়া যেতে পারে ভিন্ন স্বাদের খোঁজে। তবে একটা দিনের খাবার পৌষীতে না খেলে কক্সবাজার ভ্রমণটাই বিফল
হতে পারে।
কুয়াকাটা
সবশেষে কোনো দোকান বা রেস্টুরেন্ট নয়, মজার এক খাবারের সন্ধান দিয়ে শেষ করি খাবারের এই ভ্রমণ। সাগরকন্যা কুয়াকাটা, দেশের অন্যতম পর্যটন স্থান। কক্সবাজারে বেশি মানুষের ভিড় এড়াতে অনেকেই এখন রওনা দেন কুয়াকাটার পথে। কুয়াকাটার অন্যতম স্থান লেবুর চর, যেখানে খুব বেশি পর্যটকের ভিড় থাকে না। তবে রসনাবিলাসীদের কোনোভাবেই উচিত হবে না কুয়াকাটা গিয়ে লেবুর চরের কাঁকড়া ভুনা না খেয়ে ফিরে আসা। লেবুর চরে ছোট্ট দুটি ছাউনিতে সাগরপাড়ে বড় হওয়া শিশুদের কাছ থেকে কাঁকড়া কিংবা মাছভাজি অনেকটাই অমৃতের কাছাকাছি, যা রসনাবিলাসীদের কোনোভাবেই মিস করা ঠিক হবে না।
ভ্রমণে গেলে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো চেখে দেখা পর্যটনেরই গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ। তাই যেখানেই ভ্রমণে যান, অন্তত একবার সেই এলাকার আকর্ষণীয় খাবারগুলোর স্বাদ নিন, আর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে পুরে নিন নতুন রসনাবিলাসের গল্প।
ঈদের আগে চাপটা থাকে শপিংমলে; আর পরে সেটা গিয়ে পড়ে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। ঈদের ছুটিতে সবাই নিজের পছন্দমতো জায়গায় পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বেড়াতে যান, চেষ্টা করেন সর্বোচ্চটুকু দিয়ে ছুটির এই দিনগুলো উপভোগ করতে। ভ্রমণের একটি অংশ থাকে খাবার-দাবারের বিষয়। সবাই চেষ্টা করেন ঘুরতে এসে সেখানকার প্রসিদ্ধ কোনো খাবারের স্বাদ নিতে। কিংবা নামকরা রেস্তোরাঁর খাবার চেখে দেখতে। তবে কোন রেস্তোরাঁ আসলেই ভালো আর কোনটি নয়, সেটাও আবার বোঝার তেমন কোনো উপায় নেই। তার মধ্যেও থাকে ভালো কিছু। যেখানে ভিড় জমান ভ্রমণার্থীরা। এবারের ঈদ আয়োজনে দেয়া হলো ঢাকার
বাইরের বিখ্যাত সব পর্যটন স্পটের জনপ্রিয় কয়েকটি রেস্তোরাঁর খোঁজ।
সিলেট
ভ্রমণপিপাসুদের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম পছন্দের জায়গা। আর সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারগুলো আকর্ষণ করতে পারে পর্যটকদের। সিলেট ঘুরতে গেলে যে দুটি জায়গার খাবার মিস করা চলবেই না, তা হলোÑ পাঁচভাই রেস্টুরেন্ট ও পানসী রেস্টুরেন্ট। পাঁচভাই রেস্টুরেন্টের নাম সিলেটের সবার মুখে মুখেই শোনা যায়। নগরীর দাঁড়িয়া মোড়ে বড় সাইনবোর্ডে দেখা যাবে এই রেস্টুরেন্টের নাম। হোটেলের সামনের লাইন দেখেই আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন এটাই সেই পাঁচভাই রেস্তোর্রা। ভর্তা, ভাজি থেকে শুরু করে মাংস, কলিজা ভুনা সবকিছুই মিলবে একেবারে সুলভমূল্যে। আর খাবারের শেষে আয়েশ করে ডেজার্ট হিসেবে খেতে পারেন দই কিংবা ফালুদা। বিশেষ করে পাঁচভাই-এর ফালুদার অতুলনীয় স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো।
আরেক রেস্টুরেন্ট পানসীর অবস্থান জিন্দাবাজারের জাল্লারপার রোডে। পাঁচভাই-এর মতোই এখানে পাবেন দেশি সব রকমের খাবার। তাও আবার সাধ্যের মধ্যেই। সিলেট ভ্রমণে গিয়ে এই দুটি জায়গায় খাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখা আবশ্যক। তা নাহলে সেই আফসোস হয়তো বয়ে বেড়াতে হবে আরেকবার সিলেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত।
শ্রীমঙ্গল
জেলা নয়, একটি উপজেলাই দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্রÑ শ্রীমঙ্গলের ক্ষেত্রে কথাটি প্রযোজ্য সবক্ষেত্রে। একদিকে লাউয়াছড়ার গহিন অভয়ারণ্য আর অন্যদিকে মাধবপুর লেকের নির্জন পরিবেশ; সবকিছুই যেন প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে সাজিয়েছে। এছাড়া চা-বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য তো রয়েছেই শ্রীমঙ্গলজুড়ে। এই সবুজের দেশে এসে একটু ভালো আর মজাদার খাবারে উদরপূর্তির ইচ্ছে তো হতেই পারে। আর সেই আয়োজন নিয়েই শ্রীমঙ্গল সদরে রয়েছে কুটুমবাড়ি রেস্টুরেন্ট। সিলেটি খাবারের অসাধারণ আয়োজন; আরামদায়ক আর আড্ডা দেয়ার মতো পরিবেশ; সবমিলিয়ে মন ভালো করে দিতে বাধ্য কুটুমবাড়ি। দেয়ালে লাগানো অসাধারণ কিছু আলোকচিত্র, সোফায় পা মুড়ে বসার সুযোগ আর গানের জলসা প্রতিরাতেই শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মুগ্ধ করতে সক্ষম। আর খাবারের বেলাতেও ঠিক তাই। বাংলা খাবার থেকে শুরু করে নানা রকমের মেন্যু থেকে বাছাই করার সুযোগ রয়েছে। সিলেটের বিখ্যাত সাতকড়া দিয়ে তৈরি নানা রেসিপি আগত খাদ্যরসিকদের মুগ্ধ করবে নিশ্চিতভাবে। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন রকমের সেট মেন্যু, যা বেশ সাশ্রয়ীও।
চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী খাবার রয়েছে অগণিত। সেসব চেখে দেখার অন্যতম একটি জায়গা হতে পারে হোটেল জামান। চট্টলার খাবারের স্বাদ বহুদিন ধরেই গর্ব ও সফলতার সঙ্গে বহন করে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি। বিখ্যাত মেজবানি মাংস, পায়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় খাবারের স্বাদ পেতে চট্টগ্রামে গিয়ে জামান হোটেলে অবশ্যই ঢুঁ মারতে পারেন। মিলবে প্রকৃত চাটগাঁইয়া রসনার স্বাদ।
যারা ভাবেন শুধু পুরান ঢাকার বিরিয়ানিই স্বাদে ও সৌরভে সেরা, তাদের ভুল ধারণ ভেঙে যাবে হোটেল জামান-এ এসে। জামান হোটেল বিখ্যাত বিরিয়ানির জন্য। বিফ, চিকেন কিংবা মাটন বিরিয়ানির স্বাদ অতুলনীয়। চট্টগ্রাম এখন রেস্টুরেন্ট কিংবা খাবার দোকানের দিক থেকে কোনো অংশেই পিছিয়ে নেই রাজধানী ঢাকা থেকে। বিভিন্ন স্বাদ আর মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে শহরজুড়েই। এদের মধ্যে বিখ্যাত কিছু রেস্টুরেন্টের কথা বলতে চাইলে উঠে আসবে বারকোড ক্যাফে, মিলেঞ্জ রেস্টুরেন্ট, গ্রিডি গাটস, ক্যাফে ৮৮, সেভেন ডেইজ, ধাবা এবং হান্ডির নাম। রসনাবিলাসের দিক থেকে চট্টগ্রাম পিছিয়ে নেই কোনো দিক থেকেই। বরং বিভিন্ন রসনা আর স্বাদের সমন্বয় ভ্রমণের সঙ্গে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে বন্দরনগরীকে।
খাগড়াছড়ি
যারা খাগড়াছড়ি যাওয়ার প্ল্যান করছেন এই ঈদের ছুটিতে তাদের জন্য সিস্টেম রেস্টুরেন্টে খাওয়া অত্যাবশ্যক। বাঙালি খাবারের বাইরে গিয়ে পাহাড়ি পরিবেশে পাহাড়ি খাবার চেখে না দেখলে কি হয়?
কচি বাঁশের ভাজি থেকে শুরু করে উপজাতীয় কায়দায় রান্না করা নানা রকমের খাবারের স্বাদ পেতে সিস্টেম তুলনাহীন। এটা এখন বিখ্যাত হয়ে উঠেছে পর্যটকদের আকর্ষণের কারণেই। খাবারের স্বাদ এবং সুলভ মূল্যের খাবারের জন্যই রেস্টুরেন্টটি পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে জনপ্রিয়। তাই এই ঈদের ছুটিতে খাগড়াছড়ি বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে অন্তত একবারের জন্য হলেও সিস্টেমে খাওয়ার জন্য সময় রেখে দিতে ভুলবেন না। নিঃসন্দেহে সিস্টেমের খাবার পছন্দ করতে বাধ্য হবেন আপনি।
রাঙ্গামাটি
রাঙ্গামাটি দেশের পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। আর ঈদের ছুটিতে সেখানে বেড়াতে যাওয়ার মানুষের আনাগোনা বাড়বে সেটাই স্বাভাবিক। তাই খাবারের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন আগেভাগেই। কাপ্তাই হ্রদের চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা পরিবেশের ছোট্ট এক টিলার ওপর পেদা টিং টিং-এর অবস্থান। চাকমা ভাষায় ‘পেদা টিং টিং’-এর অর্থ পেট টান টান, অর্থাৎ ক্ষুধা পেয়েছে। সত্যি লেকে ঘুরতে ঘুরতে রেস্টুরেন্টটি দেখে ক্ষুধা পেয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে চিন্তা নেই! পেদা টিং টিং-এর সাধারণ বাঁশে মুরগি কিংবা কাঁচকি মাছের চচ্চড়ি স্বাদের নতুন অনুভূতি দিতে পারে। সেইসঙ্গে পাহাড়ি বিভিন্ন রান্না তো রয়েছেই; যেমন- বিগল বিচি, কচি বাঁশের তরকারি, কেবাং। এসব খাবারই এই রেস্টুরেন্টের মেন্যুর বিশেষ আকর্ষণ। অন্যান্য সাধারণ রেস্টুরেন্টের তুলনায় পেদা টিং টিং-এর খাবারের খরচ কিছুটা বেশি; তবে বেড়াতে এসে ভালো আর ভিন্ন স্বাদ পেতে এটুকু খরচে কেউ কার্পণ্য করবেন না নিশ্চয়ই। রাঙ্গামাটি বেড়াতে এলে তাই পেদা টিং টিংকে বলা যায় এক রকমের মাস্ট হ্যাভ রেস্টুরেন্ট।
কক্সবাজার
ভ্রমণ নিয়ে কথা হবে, খাবার নিয়ে কথা হবে আর সেখানে কক্সবাজারের নাম থাকবে না তা কখনো হতে পারে? বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই পর্যটন স্পটে এখন ফুড শপ আর রেস্টুরেন্টের ছড়াছড়ি। পর্যটকরাও নিজের পছন্দমতো সি-ফুড খেতে চলে যান রাস্তার পাশের দোকানগুলোয়। তবে এত ভিড়েও পৌষী রেস্টুরেন্ট ঠিকই খাবারের মান ও স্বাদে পর্যটকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। সাগরের তাজা মাছ তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে একেবারে বিশুদ্ধ বাংলা খাবার খেতে চাইলে পৌষী হতে পারে পর্যটকদের প্রথম পছন্দ। এই ধরনের আরেকটি রেস্তোরাঁ হলো ঝাউবন। অনেক পুরনো এই রেস্তোরাঁটি রূপচাঁদা ফ্রাইয়ের জন্য বিখ্যাত। এছাড়াও কক্সবাজারেও গড়ে উঠেছে নানা মানের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট। মারমেইড ক্যাফে, হান্ডির মতো রেস্তোরাঁতেও যাওয়া যেতে পারে ভিন্ন স্বাদের খোঁজে। তবে একটা দিনের খাবার পৌষীতে না খেলে কক্সবাজার ভ্রমণটাই বিফল
হতে পারে।
কুয়াকাটা
সবশেষে কোনো দোকান বা রেস্টুরেন্ট নয়, মজার এক খাবারের সন্ধান দিয়ে শেষ করি খাবারের এই ভ্রমণ। সাগরকন্যা কুয়াকাটা, দেশের অন্যতম পর্যটন স্থান। কক্সবাজারে বেশি মানুষের ভিড় এড়াতে অনেকেই এখন রওনা দেন কুয়াকাটার পথে। কুয়াকাটার অন্যতম স্থান লেবুর চর, যেখানে খুব বেশি পর্যটকের ভিড় থাকে না। তবে রসনাবিলাসীদের কোনোভাবেই উচিত হবে না কুয়াকাটা গিয়ে লেবুর চরের কাঁকড়া ভুনা না খেয়ে ফিরে আসা। লেবুর চরে ছোট্ট দুটি ছাউনিতে সাগরপাড়ে বড় হওয়া শিশুদের কাছ থেকে কাঁকড়া কিংবা মাছভাজি অনেকটাই অমৃতের কাছাকাছি, যা রসনাবিলাসীদের কোনোভাবেই মিস করা ঠিক হবে না।
ভ্রমণে গেলে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো চেখে দেখা পর্যটনেরই গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ। তাই যেখানেই ভ্রমণে যান, অন্তত একবার সেই এলাকার আকর্ষণীয় খাবারগুলোর স্বাদ নিন, আর অভিজ্ঞতার ঝুলিতে পুরে নিন নতুন রসনাবিলাসের গল্প।
জান্নাতুল ইসলাম শিখা
ছবি : সংগ্রহ
ছবি : সংগ্রহ
Comments