সরকারি প্রকল্পে বাড়তি সময় ও ব্যয়ের অপসংস্কৃতি বন্ধ করুন

সরকারি কর্তৃপক্ষের ক্রমাগত ব্যর্থতার কারণে বিভিন্ন প্রকল্পে বার বার ব্যয় ও সময় বাড়ানোয় আমরা বিস্মিত। কোনো প্রকল্প ৩ বারের বেশি সংশোধন না করা এবং প্রকল্পের প্রশ্নবিদ্ধ সংশোধন নীরিক্ষার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছিলেন। অথচ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বছরের প্রথম সভায় উপস্থাপন করা ১০টি প্রকল্পের মধ্যে ৭টিই সংশোধীত প্রস্তাব।

গতকাল দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সভায় উপস্থাপন করা ১০টি প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৯৯ কোটি টাকা। এখন তা বাড়িয়ে ১৪ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা করা হয়েছে।

বিভিন্ন সময়ে মেয়াদ বৃদ্ধির পরেও কিছু প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ১ বছর থেকে পুরো ১ দশক পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব আনে। ৭টি প্রকল্পের মধ্যে একটি দরিদ্র ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প। ২০১০ সালের জুনে প্রকল্পটি শুরু হয় এবং ২০১৪ সালে সেটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ প্রকল্প এ পর্যন্ত ৩ বার সংশোধন করা হয়েছে। এখন আবার এ প্রকল্পের জন্য আরও সময় ও অর্থ চাওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ১৬৯ দশমিক ১৮ কোটি টাকা। কিন্তু এখন তা বেড়ে ১১ হাজার ১৪২ দশমিক ৮ কোটি টাকা হয়েছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল মীরসরাই-১ম পর্যায় প্রকল্প গত বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। অথচ এ প্রকল্পের জন্য আরও ৫৫২ কোটি টাকা এবং আরও ২ বছর অতিরিক্ত সময় চাওয়া হয়েছে।

বছরের প্রথম একনেক সভায় প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির এসব প্রস্তাব আনা বেশ দুঃখজনক। একইভাবে, বছরের পর বছর ধরে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প শেষ না হতে দেখাও বেদনাদায়ক। প্রকল্পের বাড়তি খরচ করদাতা নাগরিকদের বহন করতে হলেও, তারা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কোনো পরিবর্তন না আসাটা অগ্রহণযোগ্য। জবাবদিহির অভাবের কারণেই বারবার প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাব করা হয় বলে আমরা বিশ্বাস করি। প্রকল্পের মেয়াদ বা ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা বা বেসরকারি পরামর্শদাতাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনতে বা তাদের দোষী সাব্যস্থ করতে আমরা খুব কমই দেখেছি। এ ধরনের সময় ও খরচ বৃদ্ধি এড়াতে অবশ্যই এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে।

সেই সঙ্গে এ ধরনের চর্চা বা মনোভাব পরিবর্তন করার বার্তা প্রকল্পের কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। যদি তাদের মধ্যে পরিবর্তন না আসে বা যদি জনগণের কাছে প্রতিশ্রুত প্রাথমিক প্রকল্প প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে তারা ব্যর্থ হয়, তাহলে এর জন্য তাদের দায়বদ্ধ করা উচিত।

Comments

The Daily Star  | English

Israel strikes Iran military targets, Tehran says damage 'limited'

Israel struck military sites in Iran early on Saturday, saying it was retaliating against Tehran's strikes on Israel this month, the latest attack in the escalating conflict between the heavily armed rivals

5h ago