রমজানের পণ্যের দাম এখন কেন বাড়ছে?

আমরা উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি যে পবিত্র রমজান মাসের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখনই বাড়তে শুরু করেছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও ভোজ্য তেল, ছোলা, খেজুর ও চিনির দাম এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে।

এর জন্য আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছেন। খবরে বলা হচ্ছে, রপ্তানিকারক দেশগুলোতে উৎপাদনের ঘাটতির কারণে বিশ্ববাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে, যেখানে আমদানি করা পণ্য জাহাজে পরিবহনের খরচও বেড়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের জানুয়ারির মধ্যে পাম তেল, সয়াবিন তেল, চিনি, ছোলা ও অন্যান্য পণ্যের আমদানি খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। তবে তথ্য থেকে এটাও দেখা যাচ্ছে যে, ওই সময়ের মধ্যে ভোজ্য তেল ছাড়া অন্যান্য পণ্যের আমদানি বেড়েছে। উদাহরণ হিসেবে, ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারির মধ্যে ১ লাখ ৪৪ হাজার টন ছোলা ও ৩ লাখ ৫ হাজার টন শুকন মটরশুঁটি আমদানি করা হয়েছে। এর এক বছর আগেও একই সময়ের মধ্যে এই দুটি পণ্য আমদানি হয়েছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৩৩ হাজার টন ও ২ লাখ ৯২ হাজার টন। এই সময়ের মধ্যে চিনি আমদানিও বেড়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এর অর্থ দাঁড়ায়, পাইকারি বাজারে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে এই পণ্যগুলো মজুত আছে।

সরবরাহের এই চিত্র থেকে এটাই আশা করা যায় যে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ন্যায্য দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রি করবে এবং খুচরা বিক্রেতারা অযাচিতভাবে রমজান মাসে পণ্যের দাম বাড়াবে না। এমনটা হলে নিম্ন আয়ের মানুষ, যাদের পিঠ এরই মধ্যে দেয়ালে ঠেকে আছে তাদের ওপর আরও চাপ বাড়বে। অনেকেরই চাকরি হারিয়ে এবং মহামারি শুরু হওয়ার আগের আয়ে পৌঁছাতে না পেরে জীবনযাত্রার মান এখন নিম্নগামী। চাল, তেল, ডাল, সবজি, মাছ, মাংসের মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে ইতোমধ্যে তারা বিপাকে আছেন। এখন রমজানের আগে আরেক দফা দাম বাড়লে মানুষ বাঁচবে কীভাবে?

এই কঠিন সময়ে নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে সাহায্যের জন্য এখনই সরকারকে জনবান্ধব নীতি গ্রহণ করতে হবে। নজরদারি বাড়িয়ে বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে প্রতিটি পাইকারি ও খুচরা দোকানের সামনে ঝুলিয়ে দিলে ক্রেতাদের থেকে বাড়তি দাম আদায় বন্ধ হতে পারে। অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সময়টায় যেন মজুতদারি করতে না পারে সেটাও সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পক্ষে এটা করা সম্ভব বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

Comments

The Daily Star  | English
IMF sets new loan conditions

Bangladesh needs more time for fully flexible exchange rate, says IMF

Bangladesh is currently going through a transition towards a fully flexible exchange rate regime, and the process may take time, said the International Monetary Fund (IMF).

9h ago