মহাসড়কে ৩ চাকার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করুন

ছবি: ফাইল ফটো

সমস্যাটি যেভাবে সমাধান করা হচ্ছিল, তাতে কোনো ভুল ছিল না। প্রথমত, সরকার দুর্ঘটনা রোধে ২০১৫ সালের আগস্টে দেশের ২২টি প্রধান মহাসড়কে ৩ চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ করেছিল।

এরপর, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশের সব প্রধান মহাসড়কে এ ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়ে সেই নির্দেশকে আরও জোরদার করেন হাইকোর্ট। কিন্তু, সমস্যা দেখা দেয় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা নিয়ে।

নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর করার চেয়ে এর লঙ্ঘনই বেশি হয়েছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্যের বরাতে দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পরিস্থিতি এখন এতটাই ভয়াবহ যে ৩ চাকার যানবাহনের সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর ৩ গুণ বেড়েছে।

দুর্ঘটনার কারণগুলো ভালোভাবে চিহ্নিত, সংশোধনের ব্যবস্থার অনুমোদন ও সময়ে সময়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবুও প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে। প্রাসঙ্গিক আইন বাস্তবায়নের সক্ষমতার অভাবে বা কার্যকর করতে অনিচ্ছার কারণে প্রশাসনের সৎ উদ্দেশ্য ভেস্তে যাচ্ছে।

প্রশ্ন হলো, কেন? ৩ চাকার যানের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর অসহায়ত্বের কথা শোনার চেয়ে হতাশাব্যঞ্জক আর কিছু হতে পারে না। এটা মনে করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই যে আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করা আদেশ লঙ্ঘনের সমান।

মন্ত্রীর মতে, এর পেছনে দায়ী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারা সরকারি আদেশ বাস্তবায়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে সরকারের কর্তৃত্ব আরোপ করার ওপরই মানুষের জীবন-মৃত্যু নির্ভর করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনার সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে ৩ চাকার যানবাহনের সংখ্যাও সমান হারে বেড়েছে।

কিন্তু, শুধু অনুমোদিত ৩ চাকার যান এ সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলেনি। রাস্তা ও প্রধান মহাসড়কগুলোতে চলছে বিভিন্ন আকৃতির, তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বিভিন্ন উপায়ে চালিত যানবাহন। এসব অননুমোদিত যানবাহনের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

আমরা কি বিশ্বাস করি, দেশের আইন ও যে আইনের পেছনে আদালতের সমর্থন আছে, তা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের শক্তির কাছে পরাজিত হবে?

সড়ক নিরাপত্তার বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এই সমস্যা সমাধানে সরকারের গুরুত্ব নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে সরকারের ঢিলেমি তাদের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। আবার, এ খাত যারা পরিচালনা করেন সেই পরিবহন মালিকদের শক্তির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অসহায়ত্বের পরিচয়ও মেলে।

কিন্তু, এ পরিস্থিতিতে কোনো শিথিলতা গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত নয়। আইন ও বিধিবিধান কঠোর ও নিরপেক্ষভাবে প্রয়োগ করা উচিত, কারণ এটা মানুষের জীবনের প্রশ্ন।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia calls for unity

Institutionalise democracy, stay united

Urging people to remain united, BNP Chairperson Khaleda Zia has said the country must quickly seize the opportunity to institutionalise the democratic system.

1h ago