তেল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে শুধু অভিযানেই কাজ হবে না

বোতলের গায়ে লেখা দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করা অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে সরকারের যে অভিযান চলছে আমরা তার প্রশংসা করি। ঈদুল ফিতরের আগে দেশজুড়ে খুচরা দোকান থেকে রান্নার তেল প্রায় উধাও হয়ে যায়। নতুন দাম ঘোষণার আগেই বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পূর্বে কম দামে কিনে রাখা তেল মজুদদাররা অনেক বেশি দামে বিক্রি শুরু করে। এতে চরম দুর্ভোগ তৈরি হয় সাধারণ মানুষের জন্য, যারা ইতোমধ্যে মূল্যবৃদ্ধির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কিনতেই হিমশিম খাচ্ছেন।

এমন পরিস্থিতিতে সরকার মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে এবং গত সপ্তাহে সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার সারাদেশে বিভিন্ন গুদাম ও দোকান থেকে ৬ লাখ ৩৪ হাজার লিটারের বেশি ভোজ্যতেল জব্দ করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর (ডিএনসিআরপি) এই অভিযান পরিচালনা করছে, যেখানে মজুদদারদের জরিমানাও করা হচ্ছে। এই ধরনের অভিযান নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা অবৈধ মজুদদারদের দমাতে এবং খুচরা পর্যায়ে দাম কমানোর জন্য যথেষ্ট কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

গত এক বছরে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ৮ বার। সর্বশেষ দাম বৃদ্ধির পর, অনেক গ্রাহক সরিষার তেলের মতো বিকল্প উৎসের দিকে ঝোঁকেন, কারণ স্থানীয় পণ্য বলে এটি সয়াবিন এবং অন্যান্য তেলের তুলনায় তুলনামূলকভাবে সস্তা ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে কোম্পানিগুলো এখন অতিরিক্ত মুনাফা করতে এই তেলের দামও বাড়িয়েছে। জানা গেছে, স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সরিষার তেলের দাম লিটারে ৭০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে।

পরিস্থিতি সত্যিই উদ্বেগজনক এবং সরকারকে অবশ্যই রান্নার তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সম্ভাব্য সব কিছু করতে হবে। মজুদদারদের সুযোগ নেওয়া থামাতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে দেশের সব জেলায় নিয়মিত অভিযান চালাতে হবে, নিয়ম লঙ্ঘন করে ইচ্ছেমতো দাম না বাড়াতে তেল উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে কঠোর নির্দেশ দিতে হবে।

একইসঙ্গে সরকারকে এই ধরনের কৃত্রিম সংকট তৈরির জন্য দায়ী সিন্ডিকেটগুলোকে চিহ্নিত করে এসবের মূল পরিকল্পনাকারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যে পরিমাণ তেল জব্দ করা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে ব্যবসায়ী, ডিলার ও আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করে তারা এসব অবৈধ মজুদ করেছে। এ ছাড়াও, সরকারের উচিত ওএমএস কর্মসূচির মাধ্যমে দরিদ্রদের কাছে ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্যতেল বিক্রি করা এবং কম দামে আমদানির জন্য বিকল্প বাজার খোঁজা।

Comments

The Daily Star  | English

Palak admits shutting down internet deliberately on Hasina's order

His testimony was recorded by the International Crime Tribunal's investigation agency following a questioning session held yesterday

19m ago