খোলাবাজারে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি করুন

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিম্ন ও মধ্যমআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায়, সরকারের ভর্তুকি দেওয়া খোলাবাজারের (ওএমএস) সামনে মানুষের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।
আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সঙ্গতি রাখতে না পেরে মধ্যবিত্তরাও বাধ্য হয়ে দাঁড়ান ওএমএসের ট্রাকের পেছনে। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিম্ন ও মধ্যমআয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায়, সরকারের ভর্তুকি দেওয়া খোলাবাজারের (ওএমএস) সামনে মানুষের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

স্থানীয় বাজারে চাল, সয়াবিন তেল, মসুর ডাল, চিনি, আটা ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সীমিতআয়ের মানুষ তা কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন।

প্রথম দিকে শুধু নিম্নআয়ের মানুষেরা খোলা বাজারের বিক্রয়কেন্দ্রগুলো ও টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনতেন। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন দেখা গেছে, এখন নিম্ন ও মধ্যমআয়ের মানুষ খোলাবাজার ও টিসিবির ট্রাক থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন।

গত কয়েক মাস ধরে অধিকাংশ প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশচুম্বী হয়েছে, যা দেশের বহু সংখ্যক মধ্যম ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এ সব মানুষের পক্ষে দিনে ৩ বেলা ঠিকমতো খাবার জোটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। উপায় না পেয়ে মানুষ ভর্তুকিমূল্যের নিত্যপণ্যের বিক্রয়কেন্দ্রগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইন ধরে দাঁড়াচ্ছে।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, যথেষ্ট পরিমাণ পণ্যের সরবরাহ না থাকায় তাদের অনেককে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। আমাদের প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে, রাজধানীর কাজীপাড়ায় এক অন্তঃসত্ত্বা নারী ২ বার ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয়বারের মতো টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কেনার আশায় এসেছিলেন।

স্পষ্টতই, সরকারের খোলা বাজারে পণ্য বিক্রয় ব্যবস্থায় কিছু পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়েছে। তার কারণ কর্তৃপক্ষ এসব নিম্ন ও মধ্যমআয়ের মানুষের কাছে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ করতে পারছে না।

প্রায়শই দেখা যাচ্ছে, যারা এসব দীর্ঘ সারির শেষ প্রান্তে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের অনেকেই কিছু না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন। খোলাবাজারে বিক্রয়কেন্দ্রগুলোর অব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন কারসাজির কারণে ভর্তুকিমূল্যের পণ্য কিনতে মানুষের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।

এমন প্রেক্ষাপটে, সমস্যা সমাধানে সরকারকে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। অনেক ভোক্তা ও ভোক্তা অধিকারকর্মী সরকারকে পুনরায় রেশন কার্ড চালুর পরামর্শ দিয়েছেন। যাতে সবচেয়ে দরিদ্ররা সারা বছর সরকারি সহায়তা পেতে পারেন।

দরিদ্রদের জন্য রেশন কার্ড চালু করা হলে ওএমএস পয়েন্ট ও টিসিবির ট্রাক থেকে একাধিকবার পণ্য কেনার অপব্যবহার বন্ধ হবে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ বিক্রয়কেন্দ্রগুলোয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সক্ষম হবে। বাংলাদেশ কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন এর আগেও সরকারকে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিল।

সরকারের উচিত আরও বেশি সংখ্যক দরিদ্র মানুষকে ওএমএস কর্মসূচির আওতায় আনতে এর পরিধি বাড়ানো। এ ছাড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে তাদের এই কঠিন সময়ে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত।

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

6h ago