অর্থপাচারে যারা সাহায্য করে, তারাও দেশের শত্রু

ছবি: স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

অর্থপাচার বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতি বছর দেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রায় ২০ শতাংশ অর্থ অবৈধ পথে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, অবৈধ পথে দেশের টাকা বাইরে চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষ ৩০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি।

চলতি বছর ৬ মার্চ হাইকোর্ট অর্থ পাচারকারীদের ধরতে এবং তাদের আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক ব্যর্থতার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) তিরস্কার করেছেন।

দুদককে অবশ্যই সমস্যাটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে। যে সব ফাঁক-ফোকর দিয়ে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, সেগুলো বন্ধ করতে দুদককে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

আবারও বলতে হয় যে অর্থপাচার একটি ভয়ানক জায়গায় পৌঁছেছে এবং দেশের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে দোর্দণ্ড অসামরিক হুমকি হয়ে উঠেছে।

এ অবস্থায় প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক যে কেন আমাদের চোখের সামনে প্রতিনিয়ত অর্থপাচারের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। কীভাবে জনৈক ব্যক্তি তৃতীয় কোনো দেশে হাজার কোটি টাকা স্থানান্তর করতে পেরেছেন, কেন একজন অর্থ পাচারকারীর ফ্লাইট ছাড়ার ১৫ মিনিট পর তার দেশ ত্যাগের আদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়, কীভাবে ব্যাংকগুলোর অর্থ লোপাট করে বিদেশে পাচার হয়ে যায়? অথচ কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে কিছুই করার থাকে না।

এ সব ঘটনা আমরা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখেছি। সংশ্লিষ্ট সংস্থার ভূমিকা নিয়ে এগুলো যথেষ্ট প্রশ্ন তোলে।

পানামা পেপারস, প্যারাডাইস পেপারসে ধনী ও ধূর্ত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ হয়েছে। এই ব্যক্তিরা অর্থ লেনদেন ব্যবস্থাপনায় কারসাজি ও নিয়ম লঙ্ঘন করে অর্থপাচার করতে সক্ষম হয়েছেন। তাদের এসব জঘন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টিকেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

উল্লিখিত ২টি পেপারের প্রতিবেদন তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আমরা জানতে চাই। যাদের নাম এসেছে ওই পেপারে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?

অর্থপাচার রোধে তদন্তকারী সংস্থাগুলোর তো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে গোয়েন্দা তথ্য ও সন্দেহজনক কার্যকলাপের প্রতিবেদন দিতে বাধ্য থাকার কথা।

এই বিপর্যয় মোকাবিলা করতে সংস্থাগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা এবং লোকবল আছে। অর্থপাচার রোধ যদি নাই করা গেল, তবে এসব নির্দেশনা ও সংস্থাগুলো থেকেই বা লাভ কি?

অর্থ পাচারকারীরা যে জনগণের শত্রু, হাইকোর্টের এমন পর্যবেক্ষণ যথাযথই ছিল। তবে আমরা আরও যোগ করতে চাই যে, এই প্রক্রিয়ায় তাদের যারা সাহায্য করে, তারাও দেশের শত্রু।

Comments

The Daily Star  | English

NBR officials call off shutdown after govt warning

Officials of the National Board of Revenue have withdrawn their shutdown, following a stern government warning and mounting pressure from the country’s top business leaders.

2h ago