অবসরে যাওয়ার একদিন আগের শিক্ষাসফর কোন কাজে আসবে?

স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিডি) জ্যেষ্ঠ সচিব অবসরের আগের দিন বিদেশ থেকে একটি 'শিক্ষাসফর' শেষ করে দেশে ফেরার বিষয়টি আমাদের অবাক করেছে। এতে প্রশ্ন ওঠে, এই সফরে তার অর্জিত জ্ঞান নাগরিকদের কী কাজে আসতে পারে? দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেদারল্যান্ডস ও স্পেনে তার এই ১০ দিনের সফরের সব খরচ বহন করা হয়েছে ৩টি সরকারি প্রকল্পের তহবিল থেকে।

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চলমান চাপের মধ্যে এই সফরে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়েছে। তাই অবসরের দ্বারপ্রান্তে থাকা একজন কর্মকর্তার এই  শিক্ষাসফরের পেছনে কোনো যুক্তি থাকলে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা যাক। 

খবরটি প্রকাশ হওয়ার পর কেউ কেউ এটিকে 'অবসরপূর্ব উপহার' হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু জনগণের খাতায় এটি অবশ্যই করদাতার অর্থের নির্লজ্জ অপচয় হিসেবে উল্লেখ থাকবে।

 

সাবেক একজন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের মতে, এটি অনৈতিক। তিনি বলেন, এই ধরনের শিক্ষাসফর তরুণ কর্মকর্তাদের জন্য হতে পারে। রাষ্ট্রকে সুসংগঠিত করতে বিভিন্ন প্রকল্পে তারা তাদের অর্জিত জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারেন। অবশ্যই একজন অবসরপ্রাপ্ত আমলা এই জ্ঞান আর কাজে লাগানোর সময় পেলেন না। 

প্রশ্নের মুখে অবশ্য ওই কর্মকর্তা তার সফরকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ওয়াসা ও এলজিইডির মতো সংস্থা যদি চায়, সেখানে তিনি তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবেন বলে মনে করছেন। 

কিন্তু এই জবাবটার ওপর ঠিক ভরসা করা যায় না। এছাড়াও, ১০ দিনের শিক্ষাসফরের জ্ঞান দিয়ে কীভাবে একজন কোনো একটা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে যেতে পারেন? 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সফরের অর্থায়ন ৩টি প্রকল্পের তহবিল থেকে এসেছে। এগুলো হলো- ঢাকার খাদ্য ব্যবস্থা (ডিএফএস) প্রকল্প, ইমারজেন্সি মাল্টি সেক্টর রোহিঙ্গা ক্রাইসিস রেসপন্স প্রজেক্ট (ইএমসিআরপি) এবং সিটি গভর্ন্যান্স প্রজেক্ট।

যেসব প্রকল্প থেকে উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধি দলের ভ্রমণ ব্যয় বহন করা হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে সফরের ঘোষিত উদ্দেশ্যের খুব একটা মিল পাওয়া যায় না। বিষয়টি জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের তহবিল ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

আমরা দৃঢ়ভাবে মনে করি, নৈতিক সীমা অতিক্রম করে জনগণের অর্থের এ ধরনের অপচয় অবশ্যই বন্ধ করা উচিত। 

এ প্রসঙ্গে, আমরা সরকার আরোপিত অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফরের ওপর সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করি এবং আশা করি যে এটি পাল্টাবে না। জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ কীভাবে ব্যবহার করে তা থেকে সর্বোত্তম সুবিধা নিশ্চিত করা যায়, সরকারকে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Polythene ban: A litmus test for will and eco-innovation

Although Bangladesh became the first country in the world to announce a complete ban on the use of polythene bags in 2002, strict enforcement of the much-lauded initiative has only started taking shape recently.

15h ago