৫০ বছর পর বোরো চাষের আওতায় অনাবাদি ৫০ একর জমি

‘আমাদের গ্রামের জমিগুলোতে গত ৫০ বছর ধরে চাষ হয় না। মাঝে মধ্যে শুধু একটা ফসল করতাম। বছরের বেশিরভাগ সময় জমিগুলো পরিত্যাক্ত থাকতো। কিন্তু কোনদিন বোরো করতে পারিনি। তবে এবার থেকে আমরা বোরো চাষ শুরু করেছি।’
৫০ বছর পর চাষের আওতায় এসেছে গুতগুতি গ্রামের ৫০ একর জমি। ছবি: স্টার

'আমাদের গ্রামের জমিগুলোতে গত ৫০ বছর ধরে চাষ হয় না। মাঝে মধ্যে শুধু একটা ফসল করতাম। বছরের বেশিরভাগ সময় জমিগুলো পরিত্যাক্ত থাকতো। কিন্তু কোনদিন বোরো করতে পারিনি। তবে এবার থেকে আমরা বোরো চাষ শুরু করেছি।'

কথাগুলো বলছিলেন মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার গুতগুতি গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী রজব আলী।

তিনি বলেন, 'নিজেও অবাক হচ্ছি, তবে ভালো লাগছে।'

গুতগুতির আরেক কৃষক চন্দন মল্লিক (৪৫) বলেন, 'আমার বাবা বলেছিলেন, ব্রিটিশ পিরিয়ডে এখানে একবার বোরো চাষ হয়েছিল। এরপর থেকে বেশিরভাগ সময় জমিগুলো পতিত থাকতো। এবারই প্রথম চাষের আওতায় আসলো।'

তিনি বলেন, 'চাষের সময় কাজের মানুষও পাওয়া যায় না। এটা নতুন কিছু না। কিন্তু নতুন পদ্ধতি সব দিকে থেকেই সহজ, খরচ কম ও মেশিন নির্ভর।'

তিনি আরও বলেন, 'এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষক আসছেন এই পদ্ধতি দেখতে। সবাই অবাক হচ্ছেন, কীভাবে এই পতিত জমি চাষের আওতায় আসছে সেটা দেখে।'

চম্পুক মিয়া বলেন, 'এই জমি চাষের আওতায় আসলে এলাকার অনেক গরিব মানুষকে আর চাল কিনে খেতে হবে না।'

কুলাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোমিন বলেন, 'কুলাউড়া উপজেলার লক্ষীপুর-গুদগুদি গ্রামের পতিত জমিগুলো প্রথমবারের মতো পাশ ফানাই নদী থেকে পানি সংগ্রহ করে ১০০ জন কৃষক ও তাদের প্রায় ৫০ একর জমিতে সীড শোয়িং মেশিনের মাধ্যমে ট্রেতে বোরো ধানের বীজ রোপণ করা শুরু হয়েছে। বাকি জমিগুলোও এই পদ্ধতের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।'

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, '"এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না" প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনাকে বাস্তবায়ন করতে সামাজিক আন্দোলন শুরু করা হয় কুলাউড়া থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রথমবারের মতো কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের গুতগুতি গ্রামের অনাবাদি ৫০ একর জমি বোরো ধানের সমলয় চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Who are giving us earthquake data?

BMD ill-equipped, still relies on manual system with no seismologist or geologist involved

11h ago