শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-দখলদারত্বের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধের আহ্বান
গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, 'সরকার আজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, প্রতিবাদহীন আন্দোলনহীন রাখতে চায়, যেন তাদের অন্যায়-অবৈধ শাসনের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন গড়ে না ওঠে।'
এ অবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-দখলদারত্ব ও ত্রাসের রাজত্বের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে 'ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গেস্টরুম-গণরুমের নামে শিক্ষার্থী নির্যাতনের' বিরুদ্ধে আজ সোমবার বিক্ষোভ মিছিল করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্রজোট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিন থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন চত্বর প্রদক্ষিণ করে অপরাজেয় বাংলায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে সেখানে তারা সমাবেশ করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি ছায়েদুল হক নিশান ও সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক তামজীদ হায়দার চৌধুরী চঞ্চল।
এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, 'সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ সারাদেশের শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন, দখলদারিত্বের রাজত্ব কায়েম করেছে। সমসাময়িক জাতীয় পত্র-পত্রিকাগুলোতেও প্রতিদিনই ছাত্রলীগের দুষ্কর্মের চিত্র দেখা যায়। অপ্রকাশিত চিত্রগুলো সামনে না এলেও তার ভয়াবহতা যে কেউ অনুমান করতে পারে।'
'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরের মতোই তার দায় এড়িয়ে যাচ্ছে এবং সন্ত্রাসীদের মদদ দিচ্ছে' উল্লেখ করে তারা বলেন, 'একদিকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা প্রতিদিন প্রতিটি ক্যাম্পাসে গেস্টরুমের নামে শিক্ষার্থীদের সারারাত বর্বর কায়দায় নির্যাতন করছে, অপরদিকে ছাত্রলীগ র্যাগিং বিরোধী র্যালি করে তাদের হাতে নির্যাতনের শিকার ইবি শিক্ষার্থী ফুলপরীকে 'তাদের প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর' বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মতো ধৃষ্টতাও দেখাচ্ছে। এই ধৃষ্টতার উপযুক্ত জবাব একদিন শিক্ষার্থীরা দেবে।'
ছাত্রজোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, 'সরকার তাদের অন্যায় অবৈধ শাসনের বিরুদ্ধে কোনো আন্দোলন যেন গড়ে না ওঠে, সেজন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানকে নিয়ে নতুন চক্রান্তের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সচেতন শিক্ষার্থীরা সেই চক্রান্তকে রুখে দিয়েছে। এই অবৈধ শাসন তারা বেশিদিন গায়ের জোরে ধরে রাখতে পারবে না। মানুষের বিবেক একদিন জাগ্রত হবেই।'
নেতৃবৃন্দ ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সবাইকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস-নির্যাতন-যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শামিল হওয়ার আহ্বান জানান এবং একইসাথে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের মতো ন্যায়ের পক্ষে, মানুষের পক্ষে বলিষ্ঠ অবস্থান নেওয়া শিক্ষকদের ওপর চক্রান্তের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সহবত শোভন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি অংকন চাকমা।
Comments