প্রযুক্তির দুয়ারে তালা দিলে যে কেউ খুলে ফেলতে পারে: ভিপিএন প্রসঙ্গে মোস্তাফা জব্বার
'প্রযুক্তির দুয়ারে কোনো তালা দেওয়া হলে সেই তালা যেকোনো মুহূর্তে যে কেউ খুলে ফেলতে পারে'—দেশে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের (ভিপিএন) ব্যবহার সম্পর্কে এই মন্তব্য করেছেন সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
সোমবার টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, 'বিষয়টি খুব স্বাভাবিক যে যখন কোথাও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়, তখন মানুষের প্রবণতাই থাকবে সেই প্রতিবন্ধকতা কীভাবে ডিঙ্গানো যায়। এটা খুব স্বাভাবিক যে প্রযুক্তির দুয়ারে কোনো তালা দেওয়া হলে সেই তালা যেকোনো মুহূর্তে যে কেউ খুলে ফেলতে পারে।'
'ভিপিএন তো এমন না যে একজন-দুইজন মানুষ ব্যবহার করে। সারা দুনিয়াতে কোটি কোটি মানুষ এটা ব্যবহার করে। অতএব সেটার প্রভাব বাংলাদেশে আগেও ছিল এখনো আছে', বলেন তিনি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট বিক্ষোভ-সহিংসতার জেরে সরকার ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে বিধি-নিষেধ আরোপ করায় দেশে ভিপিএনের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ও নিউজ ওয়েবসাইটগুলোতে অ্যাক্সেস সীমিত করা হয়েছে, যাতে বিক্ষোভকারীরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে না পারে এবং উসকে দেওয়ার মতো তথ্যের প্রচার রোধ করা যায়। তবে, এর ফলে ভিপিএনের ব্যবহার বেড়েছে। কারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার ও নিরাপদে যোগাযোগের বিকল্প উপায় খুঁজছেন।
ভিপিএনমেন্টরের গবেষক দল জানিয়েছে, গত সপ্তাহে বাংলাদেশে ভিপিএনের চাহিদা বিস্ময়করভাবে পাঁচ হাজার ১৬ শতাংশ বেড়েছে। ২২ জুলাই থেকে এর ব্যবহার শুরু হয়ে তিন দিন পর ২৫ জুলাই তা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। ১২০ ঘণ্টা বন্ধ রাখার পর মঙ্গলবার ২৩ জুলাই রাত ৯টার দিকে 'অগ্রাধিকারভিত্তিতে বাছাইকৃত এলাকায়' ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়। এরপর ২৫ জুলাই থেকে ভিপিএনের ব্যবহার কমতে থাকে। তবে এখনো তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে আড়াই হাজার শতাংশ বেশি আছে।
তবে ভিপিএন ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, 'এই মুহূর্তে অনেকেই বিভিন্নভাবে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করছেন। আমরা অনুরোধ করব তারা যেন ভিপিএন ব্যবহার না করেন। কারণ ভিপিএনের ব্যবহার ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও তথ্য নিরাপত্তার জন্য আমাদের ভিপিএন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।'
তবে, পলক নিজে প্রতিনিয়ত ফেসবুক ব্যবহার করছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব অ্যাকাউন্ট চালু রেখেছি যাতে গণমাধ্যম ও জনগণ নির্ভুল তথ্য পায়।'
Comments