এইচএসসি-সমমান: পাসের হার সর্বোচ্চ মাদরাসা বোর্ডে, সর্বনিম্ন ময়মনসিংহে
২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হারে সবচেয়ে এগিয়ে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এই হিসাবে সবচেয়ে পিছিয়ে ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৬৩ দশমিক ২২ শতাংশ।
এ ছাড়া, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ২১ শতাংশ, রাজশাহী বোর্ডে ৮১ দশমিক ২৪ শতাংশ, কুমিল্লা বোর্ডে ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ, যশোর বোর্ডে ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, চট্টগ্রাম বোর্ডে ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ, বরিশাল বোর্ডে ৮১ দশমিক ৮৫ শতাংশ, সিলেট বোর্ডে ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, দিনাজপুর বোর্ডে ৭৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৮৮ দশমিক ০৯ শতাংশ।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে প্রকাশিত এ পরীক্ষার ফলাফল থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮। গতবার এই হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪। এ বছর পাসের হার কমেছে দশমিক ৮৬ শতাংশ।
এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডের দুই হাজার ৬৯৫টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩ লাখ ৩১ হাজার ৫৮ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬ লাখ ৬৬ হাজার ১৩ জন ও ছাত্রী ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৪৫ জন।
২০২৪ এ জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ শিক্ষার্থী। ২০২৩ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৯২ হাজার ৫৯৫ জন শিক্ষার্থী। সে তুলনায় এবার জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে ৫৩ হাজার ৩১৬ জন।
ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৮ হাজার ৫৪৮, রাজশাহী বোর্ডে ২৪ হাজার ৯০২, কুমিল্লা বোর্ডে সাত হাজার ৯২২, যশোর বোর্ডে নয় হাজার ৭৪৯, চট্টগ্রাম বোর্ডে ১০ হাজার ২৬৯, বরিশাল বোর্ডে চার হাজার ১৬৭, সিলেট বোর্ডে ছয় হাজার ৬৯৮, দিনাজপুর বোর্ডে ১৪ হাজার ২৯৫, ময়মনসিংহ বোর্ডে চার হাজার ৮২৬ জন।
এ ছাড়া, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে নয় হাজার ৬১৩ ও কারিগরি বোর্ডে চার হাজার ৯২২ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এবারের পরীক্ষায় শতভাগ পাস করেছে এক হাজার ৩৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং ৬৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি।
ঘরে বসে যেভাবে জানা যাবে ফলাফল
সারা দেশের শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষাবোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারবেন। এর পাশাপাশি প্রার্থীরা অনলাইনে বা মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে তাদের ফলাফল জানতে পারবেন।
মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে HSC লিখে স্পেস দিয়ে বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে আবার স্পেস দিয়ে পাসের বছর লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
উদাহরণ—HSC DHA 123456 2024 লিখে পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। ফিরতি এসএমএসে জানা যাবে ফলাফল।
এ ছাড়া, http://www.educationboardresults.gov.bd, http://www.eduboardresults.gov.bd ওয়েবসাইট থেকেও ফলাফল জানা যাবে। রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে প্রবেশ করে ফলাফল শিট ডাউনলোড করা যাবে।
২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ৩০ জুন। সাতটি পরীক্ষা হওয়ার পর সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে কয়েক দফায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। তখন পর্যন্ত ছয়টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি ছিল। এ ছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষাও বাকি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাকি পরীক্ষা পিছিয়ে ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন সরকার। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর পরীক্ষা এক মাস পিছিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচিতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
যদিও বাকি পরীক্ষা আর নেওয়া সম্ভব হয়নি। গত ২০ আগস্ট সচিবালয়ের ভেতরে ঢুকে কিছু পরীক্ষার্থী বিক্ষোভ ও ঘেরাও করলে এবারের এইচএসসি বা সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা বিভাগ।
যেসব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর পূর্ণ নম্বরের ভিত্তিতে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে মাঝপথে বাতিল করা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল তৈরি হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে।
Comments