বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে আমলাতন্ত্রের হস্তক্ষেপ বেআইনি: ছাত্র ফেডারেশন

দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা কমিটিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিয়োগ দিতে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। 
ছাত্র ফেডারেশন

দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা কমিটিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিয়োগ দিতে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। 

সরকারের এ সিদ্ধান্তকে 'বেআইনি' আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে যত শিগগির সম্ভব সরে আসতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড ও সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, 'বর্তমান সরকার অবৈধ ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে।' 

এতে বলা হয়, 'সম্প্রতি সরকার বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের সিন্ডিকেটে (বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম) জেলা প্রশাসকদের যুক্ত করার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে যা বেআইনি।'

'সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তার নিয়ন্ত্রণ আরও নিরঙ্কুশ করতেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী এটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ইউজিসি আইন অনুযায়ী, সিন্ডিকেট সদস্য হবেন অন্তত যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার সরকারি কর্মকর্তা। কিন্তু ডিসিরা হলেন উপসচিব পদমর্যাদার,' বিবৃতিতে বলা হয়।

ছাত্র ফেডারেশনের বক্তব্য, 'দেশের ৫৭টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যুগ্ম-সচিব পদমর্যাদার নিচের কাউকে সিন্ডিকেট সদস্য রাখার সুযোগ নেই।'

নেতৃবৃন্দ বলেন, 'ডিসি সম্মেলনে ডিসিদের দাবি অনুযায়ী এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এটি বাস্তবায়ন করতে ইউজিসিকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। ডিসিরা নিজেদের যুক্ততার স্বপক্ষে যেসব যুক্তি ও বিবেচনা তুলে ধরেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা তার ভেতরে সমাধানের জন্যে প্রয়োজনীয় গণতান্ত্রিক সংস্কারের উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো সমস্যাকে পুঁজি করে আমলাতন্ত্রের হস্তক্ষেপের সুযোগ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চলছে।'

বিবৃতিতে বলা হয়, 'আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমান অবৈধ কর্তৃত্ববাদী সরকারের সঙ্গে যোগসাজশে রাষ্ট্রের আমলাতন্ত্র নানা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করছে। সামনে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমলাতন্ত্রকে খুশি রাখতেই সরকারের এই অপচেষ্টা।'

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। অন্যথায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে সংগঠনটি।

Comments