‘স্যার বল’ শিক্ষার্থীর ওপর চড়াও ঢাবি সহকারী প্রক্টর

শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

শিক্ষকের সঙ্গে আলাপের সময় 'স্যার' না বলে শুধু 'ভিসি, প্রক্টর' বলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছেন এক সহকারী প্রক্টর।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সহকারী প্রক্টর শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলছেন।

ঢাবিতে অনিয়ম বন্ধে ৮ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন করা শিক্ষার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ আজ বুধবার অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাকে দেখতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আজ বুধবার সকালে সেখানে যান। তখন হাসনাতের সঙ্গে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা তাকে বলেন, 'ভিসি ও প্রক্টর এলে হাসনাত অনশন ভাঙতেন।'

এ কথার পর তিনি ওই শিক্ষার্থীর ওপর চড়াও হয়ে বলেন, 'এই ব্যাটা তোর কথায় আসবে? ভিসি কে? স্যার বল।'

শিক্ষার্থী হয়রানিসহ নানা অনিয়ম বন্ধে ৮ দফা দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে অনশন কর্মসূচি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী হাসনাত।

এসব দাবি নিয়ে মঙ্গলবার সকালে তিনি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করেন।

তবে হাসনাতের দাবি, প্রতিবাদ করায় উপাচার্য অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এরপর তিনি অনশন শুরু করেন। 

এরপর আজ বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান এসে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে অনশন ভাঙেন হাসনাত।

অনশন ভাঙার পর একদল শিক্ষার্থী হাসনাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এখন তিনি সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসনাতের সঙ্গে অবস্থান নেওয়া আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আরমানুল হক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা "স্যার" না বলায় সহকারী প্রক্টর আমাদের ওপর চাড়াও হন। আমরা একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করিনি।'

জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি অনশনরত শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে গিয়েছিলাম। আমরা ইতোমধ্যে বেশিরভাগ দাবির সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছি। আমি তাকে অনশন ভাঙতে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু কিছু শিক্ষার্থী আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। আমার সঙ্গে তর্ক করে।'

গত ৩০ আগস্ট প্রথমবারের মতো অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন হাসনাত। এরপর ১০ কার্যদিবসের মধ্যে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন যে অ্যাকাডেমিক সেবা নিতে রেজিস্ট্রার ভবনে গেলে কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।

হাসনাতের দাবিগুলোর মধ্যে আছে- প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করতে একটি অভিযোগ সেল গঠন করা, অল্প সময়ের মধ্যে সব প্রশাসনিক কার্যক্রমের ডিজিটালাইজেশন নিশ্চিত করা এবং সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সব কার্যালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা।

 

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

7h ago