রাবি শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতার শাস্তি দাবি

রাবিতে শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ, ছাত্রলীগ নেতার শাস্তি দাবি
আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে প্যারিস রোডে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থীকে কক্ষে আটকে রেখে মারধর ও চাঁদা আদায়ের ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতার শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

গত শুক্রবার মতিহার হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে হলে আটকে রেখে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ তোলেন অর্থনীতি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সামছুল ইসলাম। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, 'বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্ষে আটকে রেখে আমাকে মারধর ও ২০ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়।'

'এমনকি এ ঘটনা কাউকে বললে আবরারের যে অবস্থা হয়েছে, সে অবস্থা হবে বলেও আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে,' বলেন তিনি। 

এ ঘটনায় আজ রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে প্যারিস রোডে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করেন।

সমাবেশে বক্তারা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহাকে হল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। পাশাপাশি দ্রুত ঘটনার তদন্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়।

অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসাইন বলেন, 'এমন নির্যাতনের ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে অন্তরালে কীভাবে বিচার করে আদৌও আমরা জানিনা। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে থাকি এ ঘটনা আমাদের সঙ্গেও ঘটতে পারে। আগে যে নির্যাতনের ঘটনাগুলো ঘটেছে তার বিচার হয়েছে কিনা আমরা কেউ জানিনা। যারা এমন নির্যাতন করে তারা কিন্তু ক্যাম্পাসে বুক ফুলিয়ে হাঁটাচলা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিক কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তাই এসব শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনাগুলো প্রতিনিয়ত ঘটছে।'

সমাবেশে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিতে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, 'প্রকাশ্যে একটি কক্ষে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তারপরও তাকে সেই হলেই রাখা হয়েছে। দ্রুত অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে হল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। তদন্ত শেষে ওই শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীকে হল থেকে সরিয়ে তদন্ত করা হয়। কিন্তু অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকে হলেই রাখা হয়েছে। তাকে হলে রেখে তদন্তকাজ সুষ্ঠু হবে না। আমরা জেনেছি যে, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইতোমধ্যে ওই শিক্ষার্থীর কক্ষে গিয়ে নানাভাবে বুঝিয়েছেন। একজন শিক্ষার্থী ভয়ের বেড়াজাল ভেঙে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিল, সেখানে কীভাবে ছাত্রলীগ গেল?' 

'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিন্তু ভুক্তভোগীকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি। তার যদি কোনো ক্ষতি হয়, সেই দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে,' বলেন তিনি।

এদিকে এ ঘটনায় ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন, কমিটির আহ্বায়ক সহকারী প্রক্টর এবং তড়িৎ ও বৈদ্যুতিক প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরিফুর রহমান।

তিনি বলেন, 'তদন্তের জন্য অভিযোগকারী ও অভিযুক্তকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।' 

তবে এ ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা। তিনি বলেন, 'এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমি কাউকে রুমে ডাকিনি, কাউকে মারধর ও করিনি।'

 

Comments

The Daily Star  | English

Climate finance: COP29 draft proposes $250b a year

COP29 draft deal says rich nations should pay the amount to fight climate change

1h ago