প্রিন্টার কেনার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

প্রিন্টার কেনার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন
ছবি: সংগৃহীত

অনেকসময় কাঙ্ক্ষিত বইয়ের হার্ডকপি হাতে না মিললেও পেয়ে গেলেন পিডিএফ ভার্সন! অথবা কোনো ডিজাইনকৃত আমন্ত্রণপত্র ছাপাতে শখ হলো! এমন আরও অনেক কাজেই মনে হয়, একটা নিজস্ব প্রিন্টার থাকলে মন্দ হতো না!

শিক্ষার্থী জীবনে এই ভাবনা আরও বেশি আসে। কেননা কয়েকদিন পর পরই অ্যাসাইনমেন্ট সাবমিশনের জন্য দোকানে লাইন ধরতে হয়। আর আজকাল ছাপার দামও বাড়ছে। তাই এসব ঝুটঝামেলা থেকে বাঁচতে অনেকেই এখন প্রিন্টার কিনছেন।

বাজারে প্রিন্টারের সংখ্যা অনেক। সেখান থেকে নিজের বাজেট অনুযায়ী ঠিক প্রিন্টার খুঁজে নিতে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার।

ইংকজেট নাকি লেজার?

প্রিন্টার কেনার আগে খুব সহজ একটি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যে– 'কোন প্রিন্টার কিনবেন?' যদিও সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা অনেকের জন্য একটু মুশকিল। প্রিন্টার ব্যবহার করে আপনি কী প্রিন্ট করবেন এবং কতটুকু প্রিন্ট করবেন– সেই হিসাবটা প্রিন্টার কেনার পরে নয় বরং আগেই করে নিতে হয়। এটি নির্ভর করে প্রিন্টারের প্রকৃতির উপর। দরদাম, কাগজ, কালি ও আনুষঙ্গিক সব মাপকাঠিকেই ইংকজেট ও লেজার– এই দুই ধরন দিয়ে পরিমাপ করা যায়।

ইংকজেট প্রিন্টারে কালির কার্তুজ ব্যবহার করা হয়। যা কাগজে ভেজা অবস্থায় প্রয়োগ করতে হয় এবং খুব দ্রুত শুকিয়ে যায়। অন্যদিকে লেজার প্রিন্টারগুলোতে টোনার ব্যবহার করা হয়। টোনার একধরনের শুকনো কালি, যা দ্রুত কাগজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। ইংকজেট প্রিন্টারগুলো কম দামে কেনা গেলেও নিয়মিত ব্যবহার করার বিষয়টি বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। কেননা এর কালির দাম অনেক। তাই ছোটখাটো কাজের জন্য ইংকজেট ব্যবহার করা গেলেও অনেক বেশি পরিমাণে ছাপার কাজের জন্য এটি ততটা উপযোগী হবে না। এক্ষেত্রে লেজার প্রিন্টারই ভালো হবে। লেজার প্রিন্টারের দাম ইংকজেট থেকে বেশি হলেও প্রাতিষ্ঠানিক পরিসরে এটির ব্যবহার অপেক্ষাকৃত সাশ্রয়ী। ক্রেতার চাহিদাকে এভাবে ভাগ করে নিয়ে দেখতে হবে, কোন ধরনের প্রিন্টার কেনা যায়।

প্রিন্টারের আকার

কোন পরিসরে কাজ করার জন্য প্রিন্টার কেনা হচ্ছে, সেটির ওপর আকারের বিষয় সরাসরি নির্ভর করছে। বাজারে বিভিন্ন আকার ও আকৃতির প্রিন্টার পাওয়া যায়। কারো যদি একেবারেই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য প্রিন্টার প্রয়োজন হয়, তবে 'কমপ্যাক্ট' প্রিন্টার এক্ষেত্রে ভালো হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে স্ক্যানিং ও কপি করার সুবিধা পাওয়া যাবে না। জায়গা কম এবং মাঝে মাঝে ব্যবহার করবেন, শুধু এমন ক্রেতাদের জন্য এই প্রিন্টার মানানসই। আর না হলে সাধারণত কিছুটা বড় আকারের প্রিন্টার কেনাই ভালো হবে। প্রিন্টার কিংবা অন্য যেকোনো পণ্যের ক্ষেত্রেই যা খেয়াল রাখা দরকার, তা হলো– মানানসই নয় এমন কোনো পণ্য কেনা উচিত নয়। তাই প্রিন্টার রাখার জায়গাটা কেমন, তার ওপর ভিত্তি করেই প্রিন্টারের আকার-আকৃতি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

প্রিন্টের মান

দরকারি কোনো কাগজ ছাপার পর যদি অস্পষ্ট কালিতে লেপা কিছু হরফ চোখের সামনে ভাসতে থাকে, তবে কারোই ভালো লাগবে না। তাই প্রিন্টার কেনার আগে এর ছাপার মান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। প্রিন্টের মান প্রিন্টহেডের ডিজাইন, প্রিন্টারের ড্রাইভার এবং কালির মান– এসব বিষয়ের ওপর সমন্বিতভাবে নির্ভর করে। প্রিন্টের মান বোঝার জন্য এর 'ডিপিআই' (ইঞ্চিপ্রতি ডটের সংখ্যা) জানতে হবে। এক বর্গ ইঞ্চি কাগজে ঠিক কতগুলো 'ডট' বা বিন্দু ছাপতে পারে, সেটিই একটি প্রিন্টারের ডিপিআই সংখ্যা। ছাপাইকৃত লেখা কতটুকু তীক্ষ্ণ এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ, সেটিও প্রিন্টারের মান ঠিক করে দেয়। দোকানে গিয়ে প্রিন্টার কেনার সময় এই সবকিছুই খেয়াল করতে হবে।

প্রিন্টের গতি

একাধিক পৃষ্ঠা ছাপাতে চাইলে প্রিন্টের গতি ভালো থাকা খুব জরুরি। নির্দিষ্টভাবে পিপিএম বা পেইজ পার মিনিট এর সংখ্যা এবং কাগজের দুইদিকেই ছাপানোর সুবিধাটা ইংকজেট ও লেজার প্রিন্টারের মধ্যে আলাদা হতে পারে। লেজার প্রিন্টারের গতি অপেক্ষাকৃত বেশি ভালো। প্রিন্টারের মডেলের ওপর ভিত্তি করে এতে ২০ থেকে ৫০ বা এর চেয়েও বেশি পিপিএম পাওয়া সম্ভব। অন্যদিকে মডেলভিত্তিক হিসেবে ইংকজেট প্রিন্টারের পিপিএম রেটিং সাধারণত ৫ থেকে ২৫ বা এর একটু বেশি থাকে। তাই গতির দিকে নজর দিলে লেজার প্রিন্টার কেনাই ভালো হবে।

Comments

The Daily Star  | English

US tariff talks: First day ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington, DC, yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

3h ago