অনলাইনে নিরাপত্তা সহায়ক ৫ টুল

ছবি: সংগৃহীত

অনেকেরই দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে অনলাইনে। এ কারণে প্রাত্যহিক জীবনের নানা ধরনের নিরাপত্তার মতো অনলাইনে নিরাপদ থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। 

ব্যক্তিগত পরিসর হোক বা প্রাতিষ্ঠানিক, অনলাইন জীবনে নিরাপত্তায় সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে এই ৫টি টুল। 

অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার

অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম এমন এক ধরনের সিকিউরিটি টুল, যা আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ অন্যান্য সফটওয়্যার থেকে সুরক্ষা দেয়। কম্পিউটারে অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ইনস্টল করার পর এটি ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকে এবং কোনো ঝুঁকি আছে কি না, তা যাচাই করে দেখে। এবং কখনো যদি অ্যান্টিভাইরাসের ঝুঁকি শনাক্ত হয়, তবে তা ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সেটি ব্যবহারকারীর সিদ্ধান্তের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, তিনি সেটা এড়িয়ে যাবেন, নাকি মুছে ফেলবেন। 

কম্পিউটার, নেটওয়ার্ক এবং আইটি সিস্টেমকে ম্যালওয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতেই অ্যান্টিভাইরাসের আগমন। বেশিরভাগ অ্যান্টিভাইরাসেই অটো-আপডেট ফিচার থাকে, এবং নিয়মিত নতুন ভাইরাসের উপস্থিতি যাচাই করে দেখে। এতে ই-মেইল স্ক্যান করার মতো বাড়তি সুবিধাও পাওয়া যায়, যাতে করে ওয়েব লিংক বা অন্যান্য ই-মেইল সংযুক্তি থেকে আক্রান্ত না হতে হয়। ব্যবহৃত ডিভাইসের ধরন, বাজেট এবং প্রয়োজনীয় সুরক্ষার পর্যায়– এই সবকিছু মাথায় রেখেই উপযোগী অ্যান্টিভাইরাস বেছে নিতে হবে।

পাসওয়ার্ড ম্যানেজার 

চাবি ছাড়া যেমন তালা খোলা যায় না, তেমনি অনলাইন যেকোনো প্ল্যাটফর্মেই তালা খোলার চাবি হচ্ছে পাসওয়ার্ড। আর এসব পাসওয়ার্ড বা চাবিকে এক স্থানে গুছিয়ে রাখার বিষয়টিকেই উপস্থাপন করা যায় পাসওয়ার্ড ম্যানেজার হিসেবে। মানুষের স্মৃতি বেশ প্রতারক স্বভাবের, আর তাই পাসওয়ার্ডের জন্য শুধু স্মৃতির ওপর ভরসা করলে যে ঝামেলায় পড়তে হবে, তাতে আর সন্দেহ কী! তবে এ ক্ষেত্রে রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের। এটি ব্যবহার করলে প্রতিটি অনলাইনের প্রোফাইলের জন্যই আলাদা আলাদা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করা যাবে এবং সেইসঙ্গে তা সংরক্ষণও করা যাবে। একটি নিরাপদ স্থানে ব্যাংকিং কার্ড, সামাজিক মাধ্যম প্রোফাইল, বিনোদন মাধ্যম ইত্যাদি সবকিছুর পাসওয়ার্ডই শ্রেণিবদ্ধ করে তাকে গুছিয়ে রাখা যায় পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে।

টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন

টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন বা ডুয়াল ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন নামে পরিচিত এই বিষয়টি মূলত একটি নিরাপত্তা প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের সময় ব্যবহারকারীরা নিজেদের পরিচয় যাচাই করে নিতে পারেন। এতে করে অন্য কোনো পক্ষ সেসব প্ল্যাটফর্মে অনধিকার প্রবেশ করতে চাইলে বাধাপ্রাপ্ত হবে। 

ব্যক্তির গোপনীয়তা ধরে রাখতে টু-এফএ জরুরি। এর মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই এসএফএ বা সিঙ্গেল ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের চাইতে বেশি নিরাপত্তা পাওয়া যায়। বেশিরভাগ সময় এ ক্ষেত্রে মোবাইলে কল বা টেক্সটের মাধ্যমে একটি ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পাঠানো হয়। এর ফলে অন্য কেউ পাসওয়ার্ড জেনে ফেললেও ওটিপির ব্যারিকেডে এসে আটকে যাবে। 

ভিপিএন 

ইন্টারনেটের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ায় বহু ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান, যা কি না খুব সহজেই আক্রমণ ঘটাতে পারে কম্পিউটার বা মুঠোফনে জমা রাখা সব ধরনের তথ্যে– অর্থাৎ, ব্যক্তির গোপনীয়তায়। আর ইন্টারনেটের এসব ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় থেকে সুরক্ষা প্রদানে অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন সিকিউরিটি এবং প্রাইভেসি টুল হচ্ছে ভিপিএন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক। যখনই পাবলিক ওয়াইফাই সংযোগ বা অনিরাপদ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়, তখন ব্যবহারকারীর আইপি অ্যাড্রেস এবং ব্রাউজিং সংক্রান্ত সব কার্যকলাপ চাইলেই একজন হ্যাকার দেখতে পারেন। ডিভাইস এবং ওয়েবসাইটের মধ্যে একটি এনক্রিপ্টেড সংযোগ তৈরি করার মাধ্যমে ভিপিএন তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করে। ভিপিএন ব্যবহারকারীর সমস্ত অনলাইন ট্রাফিক নিরাপদ সার্ভারের মধ্য দিয়ে সক্রিয় করে এবং এর ফলে কারও জন্য ট্রাফিকের মূল উৎস খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। 

অ্যাড ব্লকার

অ্যাড ব্লকার এমন একটি অ্যাপ বা ব্রাউজার এক্সটেনশন, যার মাধ্যমে বিজ্ঞাপনজাতীয় লিংক মুছে ফেলা যায়। যেকোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর অ্যাড ব্লকিং সফটওয়্যার ওয়েব পেজের ডোমেইন নাম যাচাই করে দেখে এবং বিজ্ঞাপনের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে অ্যাড ব্লকার খুবই কাজের জিনিস। 

তথ্যসূত্র: এমইউও, জাভাটিপয়েন্ট, টেকটার্গেট
 

Comments

The Daily Star  | English

Trump arrives at US Capitol for inauguration

He will be sworn in as the 47th president of the United States

1h ago