প্রযুক্তিপণ্যের বাজারে যেভাবে জাপানের শ্রেষ্ঠত্ব খর্ব হলো
জাপানের ইলেক্ট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রি একসময় বিশ্বে শীর্ষ ছিল। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার ইলেকন্ট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও জাপান তার এই শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল। অথচ জাপানের সেই শ্রেষ্ঠত্ব এখন আর দেখাই যায় না। জাপান কেন উদ্ভাবন বন্ধ করে দিলো? কী হয়েছে জাপানের?
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন সনির সাবেক বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ার মিয়াজাওয়া কাজুমাসা। তিনিই সনির বিখ্যাত ভায়ো সিরিজের কম্পিউটারের অন্যতম প্রধান কারিগর ছিলেন।
এ ছাড়া, এডি ডিজিটাল কারেন্সিরও কুশীলব ছিলেন এই ইঞ্জিনিয়ার। সাক্ষাৎকারটি মূলত জাপানিজ ভাষায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। পরে তার ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করে নিপ্পনডটকম।
অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস একবার বলেছিলেন, আইপডের সাফল্যের পেছনে জাপানের কনজ্যুমার ইলেক্ট্রনিকস কোম্পানিগুলোর ব্যর্থতাও কিছুটা দায়ী। ইলেক্ট্রনিক ম্যানুফেকচারিংয়ে জাপানের যে শ্রেষ্ঠত্ব ছিল, সেটিকে হটিয়ে আইপডের পর আইফোন নিয়ে আসে অ্যাপল। বর্তমানে অ্যাপলের মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ৩২৬ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ২.৩৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার) আর সনির মাত্র ১৪ ট্রিলিয়ন ইয়েন। জাপান কেন স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের মতো উদ্ভাবনী ডিভাইস নিয়ে আসতে পারলো না?
মিয়াজাওয়া কাজুমাসা: আইপড, আইফোন ও আইপ্যাডের মতো ডিভাইস তৈরি করা উচিত ছিল সনির, এ ব্যাপারে আমি একমত। কিন্তু সনি তখন মেমরি স্টিক ওয়াকম্যান বাজারে ছেড়েছিল। এখানে বেশ কয়েকটি ভুল উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। প্রথমটি হচ্ছে, সনির ডিজিটাল রাইটস ব্যবস্থাপনা, নকল ঠেকানোর শক্তিশালী প্রযুক্তি, যার ফলে ডাউনলোড করা মিউজিক এক ডিভাইস থেকে আরেক ডিভাইসে কপি করা সম্ভব ছিল না। মিউজিকের সাউন্ড কোয়ালিটি নিয়েও সনি অনেক সতর্ক ছিল। সাউন্ড কোয়ালিটি যাতে উন্নত হয়, সেজন্য সনি এটিআরএসি বা অ্যাডাপটিভ ট্রান্সফর্ম অ্যাক্যুস্টিক কোডিং প্রযুক্তি তৈরি করেছিল।
কিন্তু এই ওয়াকম্যানটি মানুষ সেভাবে গ্রহণ করেনি। তখন এমপিথ্রি মিউজিক ফরম্যাট জনপ্রিয়তা পাচ্ছিল। কিন্তু কিছু কিছু এমপিথ্রি ফরম্যাট অবৈধ হওয়ায় সনি মিউজিকের মূল প্রতিষ্ঠান সনি নকল ঠেকানোর জন্য কঠিন ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়।
অন্যদিকে অ্যাপল তখন শিথীল শর্তে এমপিথ্রি ফরম্যাটের মিউজিক ব্যবহার করত। অ্যাপলের মূল লক্ষ্য ছিল ডিভাইসটি যাতে ব্যবহারকারীরা সহজে ব্যবহার করতে পারে এবং ইচ্ছামতো গান শুনতে পারে। এমনকি এক ডিভাইস থেকে মিউজিক কপি করে অন্য ডিভাইসে নেওয়ার সুযোগও ছিল আইপডে। এই সিদ্ধান্তই অ্যাপল ও সনির মধ্যে ব্যাপক ব্যবধান তৈরি করে দেয়। সনি পোর্টেবল মিউজিক প্লেয়ারের মার্কেট হারায়।
তার মানে দুটি কোম্পানির একেবারে ভিন্ন বিজনেস মডেল ছিল?
মিয়াজাওয়া কাজুমাসা: ১৯৮০'র দশকে যখন সনির সুদিন ছিল, তখন তারা তাদের ওয়াকম্যান ও ৮-মিলিমিটার ক্যামকর্ডারের মতো শীর্ষস্থানীয় পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে টপ-ডাউন অ্যাপ্রোচ নিতো। অর্থাৎ, পণ্যগুলো তৈরির প্রতিটি ধাপ গভীরভাবে যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করা হতো। কারণ, ৮-মিলিমিটার ভিডিও ক্যাসেট এবং সেটাকে ঘোরানোর সিলিন্ডার তৈরির জন্য জটিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রয়োজন হতো। একটি নির্দিষ্ট ম্যানুফেকচারই পুরো পণ্যটি তৈরি করত। সে সময় উৎপাদনের ক্ষেত্রে এটাই ছিল জাপানে আদর্শ নীতি। টেয়োটা এবং হোন্ডাও নিজস্ব উৎপাদন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এর ফলে জাপানি উৎপাদনব্যবস্থার জন্য বাড়তি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল।
কিন্তু ১৯৯০ এর দশকে জাপানের এই উৎপাদনব্যবস্থা নিয়ে অতিমাত্রায় শঙ্কিত হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সরকার মনে করে, জাপানে যদি এই উৎপাদনব্যবস্থা অব্যাহত থাকে, তাহলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য মার্কিন সরকার ইন্টারনেটকে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়, যে প্রযুক্তিটি মূলত সামরিক বাহিনীর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ইন্টারনেট উন্মুক্ত করে দেওয়ার ফলে উদ্ভাবন প্রক্রিয়াও সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। এই নীতি জাপানের জন্য তাদের পরিকল্পনার পুরোপুরি বিপরীত ফলাফল দেয়।
শুধু কম্পিটারের কথাই যদি ধরি, তাহলে দেখব ইন্টেল সিপিইউ বানিয়েছে, অন্য এক প্রতিষ্ঠান হার্ডডিস্ক তৈরি করেছে আর মাইক্রোসফট সফটওয়্যার তৈরি করেছে। অথচ, জাপান এখনো এই ব্যবস্থাটি আত্মীকরণ করতে পারেনি। ফলে তারা বিচ্ছিন্নই আছে।
জাপানি উৎপাদকেরা স্থানীয়ভাবে সফল পণ্যগুলোকে আরও উন্নত করে বিদেশে বাজারজাত করতো। এটি একটি সফল ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছিল।
মিয়াজাওয়া কাজুমাসা: ১৯৮০'র দশকে জাপান তাদের প্রাযুক্তিক সক্ষমতা, ক্ষুদ্রাকার ও উচ্চ মানসম্মত পণ্য দিয়ে সারা দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্বায়নের যুগ শুরু হওয়ার পর উৎপাদনব্যবস্থা বহুমুখী হতে শুরু করল, যার সুযোগ অ্যাপলও নিয়েছিল। অ্যাপল তাদের পণ্যের ডিজাইন নিজেরা করতো, কিন্তু তাদের পণ্য উৎপাদিত হতো চীনের কোনো ফ্যাক্টরিতে। নিজস্ব ফ্যাক্টরি ছাড়াও যে উৎপাদন সম্ভব, বিশ্বায়ন ব্যবস্থায় সেটি প্রমাণিত হয়। একসঙ্গে অনেক পণ্য উৎপাদন করায় উৎপাদনের খরচও অনেক কমে যায়। ফলে মানসম্মত পণ্য তৈরি করায় জাপানি উৎপাদকরা যে বাড়তি সুবিধা ভোগ করতো, সেখানে টান পড়ে। প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে থাকে জাপান।
বাজারে জনপ্রিয় পণ্যগুলোর ডি ফ্যাক্টো স্ট্যান্ডার্ডও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। যেমন- অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে উইন্ডোজ এবং ভিডিও ফরম্যাটের ক্ষেত্রে ভিএইচএসকেই মানুষ স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ধরে নিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক প্রতিষ্ঠান তখন উইন্ডোজের মতো অত্যন্ত জনপ্রিয় পণ্য তৈরি করেছে এবং মানুষ সেগুলোকেই স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে বিবেচনা করেছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো আইএসও'র মতো অনেক আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করেছে। এখানে ২ ক্ষেত্রেই জাপান পিছিয়ে পড়েছে আর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ এগিয়ে গেছে। যখন ডিস্ট্রিবিউটেড লেবার বা কর্মীদের এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়ে কাজ করার যুগ চালু হয়েছে, তখনো জাপান সেই ট্রেন্ড সফলভাবে রপ্ত করতে পারেনি। আমার মনে হয় এটাই জাপানের ব্যর্থতার সবচেয়ে বড় কারণ।
জাপানি কোম্পানিগুলোর উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও গুরুত্ব হারানোর জন্য আপনি দেশটির বিনিয়োগ পরিবেশ এবং ট্যাক্স সিস্টেমকেও দায়ী করেছিলেন।
মিয়াজাওয়া কাজুমাসা: জাপানের অনেক বড় বড় কোম্পানি এতটাই স্থিতিশীল হয়ে গিয়েছিল যে, কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সেখানে দেখাই যাচ্ছিল না। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র খুবই প্রতিযোগিতাপরায়ণ দেশ। সেখানে ছোট বা বড়- যেমন প্রতিষ্ঠানই হোক না কেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যদি নিজেদের পরিবর্তন না করে, তাহলে সেটি দেউলিয়া হয়ে যাবে ও বাজারে আধিপত্য হারাবে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অনেক স্টার্ট-আপের জন্ম হয়েছে, যার সুফল পেয়েছে সে দেশের অর্থনীতি।
গুগল ও ফেসবুকের মতো কোম্পানিগুলোও প্রথমে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের অর্থায়নে স্টার্ট-আপ হিসেবেই আবির্ভুত হয়েছিল। এই দুটি প্রতিষ্ঠানই শুরুর দিকে প্রযুক্তির উৎকর্ষের জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছে। ফলাফল হিসেবে তারা অভাবনীয় উন্নতি ও সাফল্য পেয়েছে। আর অন্যদিকে জাপান মাত্র সম্প্রতি স্টার্ট-আপকে তাদের দেশের বিকাশের কৌশলের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর মধ্যে ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে!
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর স্টার্ট-আপের পেছনে প্রায় ৬৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ হচ্ছে। এর মধ্যে ৩৭০ বিলিয়ন বিনিয়োগই যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে, যা মোট বিনিয়োগের প্রায় ৬০ শতাংশ। জাপানে প্রতিবছর বিনিয়োগ যাচ্ছে মাত্র ৭.৩ বিলিয়ন ডলার, যা মোট বৈশ্বিক বিনিয়োগের মাত্র ১ শতাংশ। এমনকি যুক্তরাজ্যভিত্তিক সফটব্যাংক ভিশন ফান্ড, যারা চীনা, মার্কিন ও ভারতীয় শত শত স্টার্টআপে বিনিয়োগ করেছে, তারা মাত্র ৩টি জাপানি স্টার্টআপে বিনিয়োগ করেছে।
জাপানের ট্যাক্স নীতিও একটি বড় সমস্যা। যেমন- ভার্চুয়াল কারেন্সির উপরেও এখানে খুব উচ্চমাত্রায় ট্যাক্স দিতে হয়। যখন একটি কোম্পানি ভার্চুয়াল কারেন্সি ইস্যু করে, তখন সেই কারেন্সির বিপরীতে তার কিছু সম্পদ থাকতে হয়, যার ওপরও কিন্তু ট্যাক্স প্রযোজ্য। উদাহরণস্বরুপ- আপনি যদি ১ বিলিয়ন ইয়েন ডিজিটাল কারেন্সি ইস্যু করেন, তাহলে আপনার ৩০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০০ মিলিয়ন ইয়েন ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে। এমনকি সেই ইস্যুকৃত কারেন্সি কোনো বাণিজ্য বা লেনদেনে ব্যবহার না করলেও! স্টার্ট-আপগুলোর জন্য এই নিয়ম একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। ফলে ডিজিটাল কারেন্সি ইস্যু করে, এমন অনেক জাপানি প্রতিষ্ঠান তাদের সদর দফতর সিঙ্গাপুর বা সুইজারল্যান্ডে স্থানান্তর করেছে। এতে করে জাপানের ব্লকচেইন ইন্ডাস্ট্রি মেধাবী কর্মী সংকটে পড়েছে।
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য জাপান কি কৗশল নিতে পারে?
মিয়াজাওয়া কাজুমাসা: প্রথমেই আমাদের এমন ব্যবস্থা চালু করতে হবে যেখানে উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্র বিভিন্নভাবে সমর্থন দেবে। তাদেরকে পৃরস্কৃত করতে পারি, পেটেন্ট সংস্কান্ত জটিলতা কমাতে পারি। প্রাধিকারভিত্তিক ট্যাক্স নিয়ম চালু করতে হবে। আরও বেশি সরকারি অর্থায়ন প্রয়োজন।
প্রাইভেট সেক্টরে বড় বড় করপোরেশন ও ভেঞ্চার কোম্পানির মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়ানো উচিত। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন উদ্ভাবন অনেক কঠিন। ভেঞ্চার করপোরেশনগুলো যদি অর্থ যোগানে ব্যর্থ হয়, তাহলে উপযুক্ত কর্মী নিয়োগ দিতে পারবে না এবং নতুন নতুন উদ্ভাবন করতে পারবে না। আমাদের এমন নীতি নিতে হবে যাতে বড় বড় করপোরেশন ও ভেঞ্চার ব্যবসাগুলো সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারে। প্রাইভেট সেক্টরের অসমন্বিত ও বিশৃঙ্খল নীতি নতুন উদ্ভাবনের জন্য সহায়ক নয়।
করপোরেট নের্তৃত্ব অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে অর্থায়ন ও জনশক্তি বরাদ্দ নতুন উদ্ভাবনের জন্য জরুরি। যোগ্য নের্তৃত্ব ছাড়া এই অর্থায়ন ও নিয়োগ সম্ভব নয়।
কোন দিকে আমাদের বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত?
মিয়াজাওয়া কাজুমাসা: জাপানের সবচেয়ে সংকটের জায়গাটি হচ্ছে স্মার্ট টেকনোলজি। ভবিষ্যতেও এটি বড় সংকট সৃষ্টি করতে পারে। অন্যান্য দেশের তুলনায় আইটি ও ইন্টারনেট খাতে জাপান অনেক কম বিনিয়োগ করে। জাপানোর পুরো সমাজকেই ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে। আমার আশঙ্কা হচ্ছে জাপান দিন দিন আরও পিছিয়ে পড়বে। আগেও যেটি উল্লেখ করেছি, জাপানের সেরা সব প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশে চলে গেছে। আমরা হয়তো অচিরেই আবারও গতানুগতিক মেনুফেকচারিং ইন্ডাস্ট্রির দেশে পরিণত হতে যাচ্ছি।
ভবিষ্যতে টিকে থাকতে হলে আমাদের সর্বোচ্চটা করতে হবে। আমি মনে করি, সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আমলারার মিলে এখনই গভীরভাবে ভাবতে হবে যে ভবিষ্যতে আমাদের কী কী করতে হবে।
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
Comments