নজরদারি-অস্ত্র তৈরিতে এআই ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এল গুগল

প্রতীকী ছবি। রয়টার্স

সামনের দশক ও শতাব্দীতে মানুষের সবচেয়ে বড় সঙ্গী ও হাতিয়ার হতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)। 

এই প্রযুক্তি অসৎ উদ্দেশ্য—বিশেষ করে যুদ্ধ, অস্ত্র তৈরি ও জনগণের ওপর নজরদারিতে ব্যবহার করা হতে পারে—এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগল দীর্ঘদিন তাদের নীতিমালায় অস্ত্র তৈরি ও নজরদারিতে এআই ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি রেখেছিল। 

কিন্তু সম্প্রতি গুগল এই প্রতিশ্রুতি প্রত্যাহার করেছে বলে আজ বুধবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

২০১৮ সালে প্রথম এআই নীতিমালা প্রণয়ন করে গুগল। এতে বলা হয়েছিল, সার্বিক ক্ষতির কারণ হতে পারে, বিশেষ করে অস্ত্র তৈরি ও 'আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নীতিমালা' লঙ্ঘন করে নজরদারিতে ব্যবহার হতে পারে এমন কোনো এআই প্রযুক্তি তৈরি করবে না তারা।

মঙ্গলবার গুগলের ঘোষিত নতুন নীতিমালায় এই অংশটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে বলা হয়েছে, 'আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার সম্পর্কিত' নীতিগুলো সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে 'দায়িত্বশীলভাবে' এআই প্রযুক্তি তৈরি করবে তারা।

গুগল ডিপমাইন্ডের প্রধান ডেমিস হাসাবিস এবং গবেষণা ল্যাবসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জেমস ম্যানিকা এক ব্লগ পোস্টে লিখেন, 'আমরা বিশ্বাস করি যে গণতান্ত্রিক দেশগুলো এআই উন্নয়নে নেতৃত্ব দেবে, যা স্বাধীনতা, সমতা ও মানবাধিকারের মতো মৌলিক মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত হবে।'

ধারণা করা হচ্ছে, এআই উন্নয়নে চীনের সাম্প্রতিক সাফল্যকে ইঙ্গিত করেই এ কথা বলেছেন তারা।

২০২৮ সালে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করতে এআই ব্যবহারের একটি প্রকল্পে কাজ করে গুগল। এর প্রতিবাদস্বরূপ কোম্পানির কিছু কর্মী পদত্যাগ ও হাজারো কর্মী একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করলে প্রথমবারের মতো এআই নীতিমালা প্রকাশ করে গুগল।

সেই বছর এআই নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ার পেন্টাগনের সঙ্গে ১০ বিলিয়ন ডলারের আরেকটি চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে গুগল।

যুক্তরাষ্ট্রের নবাগত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন, যেখানে এআই উন্নয়নে কিছু সুরক্ষামূলক নির্দেশিকা প্রবর্তনের কথা বলা হয়েছিল। এই আদেশ অনুযায়ী, নতুন এআই প্রযুক্তি বাজারে আনার আগে কোম্পানিগুলোকে সেই প্রযুক্তির নিরাপত্তা পরীক্ষার ফলাফল সরকারকে দেখাতে হতো।

গুগলের নীতিমালা পরিবর্তন এমন এক সময়ে এসেছে যখন প্রতিষ্ঠানটির সিইও সুন্দর পিচাই অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস এবং মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গকে নিয়ে ট্রাম্পের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সেই অনুষ্ঠানে ট্রাম্পের পরিবারের পেছনেই ছিলেন এই প্রযুক্তি মুগলরা। 

Comments

The Daily Star  | English

Iran media report explosions in country's north

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu said Israel had agreed to Trump's ceasefire proposal

2d ago