গুগল স্টোরেজ ফুল হলে সমাধান যেভাবে
গুগল অ্যাকাউন্টে ১৫ জিবি ফ্রি স্টোরেজ দেওয়া হলেও বেশিরভাগ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীই কিছুদিন পর পর 'স্টোরেজ ফুল' নোটিফিকেশন পেয়ে থাকেন। ফোনে জমতে থাকা ইমেইল, ছবি, ভিডিও কিংবা বিভিন্ন ফাইল দ্রুত এই সীমা পূর্ণ করে ফেলে। ব্যবহারকারীরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও অনেক দরকারি তথ্য মুছে ফেলতে বাধ্য হন। কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনা ও কয়েকটি কৌশল ব্যবহার করে এই ১৫ জিবি স্টোরেজ দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা সম্ভব, কোনো অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই।
কীভাবে আপনার স্টোরেজ সঠিকভাবে ব্যবহার করবেন?
১। অবাঞ্ছিত মেইল মুছে ফেলা
আপনার জিমেইলের স্টোরেজের একটি বড় অংশ দখল করে রাখে ইমেইল। অবাঞ্ছিত ইমেইল, যেমন: প্রমোশনাল, স্প্যাম বা সাইজে বড় ফাইলগুলো মুছে ফেলা খুবই জরুরি। এজন্য কিছু সহজ ধাপ অনুসরণ করা যেতে পারে।
- বড় ফাইল খুঁজে মুছুন: জিমেইলের সার্চ বক্সে টাইপ করুন has:attachment larger:10M। এটি ১০ মেগাবাইটের বেশি সাইজের ইমেইলগুলো দেখাবে। সেগুলো রিভিউ করে যেগুলো দরকার নেই সেগুলো ডিলিট করতে পারেন।
- স্প্যাম ও প্রমোশন মুছে ফেলা: নিয়মিতভাবে স্প্যাম ও প্রমোশন ফোল্ডার চেক করে মুছে ফেলুন। এই ফোল্ডারগুলো অপ্রয়োজনীয় ইমেইলে ভরে যায়, যা আপনার স্টোরেজ দখল করে রাখে।
২। গুগল ড্রাইভে ফাইল ম্যানেজমেন্ট
গুগল ড্রাইভ বিভিন্ন ধরনের ফাইল সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এখানে অনেক বড় ফাইল জমা হতে পারে, যা স্টোরেজকে তাড়াতাড়ি পূর্ণ করে। কিছু টিপস আপনার গুগল ড্রাইভের জায়গা বাঁচাতে সাহায্য করবে।
- অপ্রয়োজনীয় ফাইল মুছুন: ড্রাইভ থেকে বড় ও পুরোনো ফাইলগুলো মুছে ফেলার জন্য 'স্টোরেজ' সেকশনে গিয়ে ফাইলগুলো সাইজ অনুসারে সাজিয়ে দেখুন এবং অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো ডিলিট করুন।
- ফাইল কমপ্রেস করুন: গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো কমপ্রেস করে বা জিপ ফরম্যাটে সেভ করে রাখতে পারেন। এতে ফাইলের সাইজ কমে যায় এবং একই স্টোরেজে অনেক তথ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়।
৩। গুগল ফটোসে ফটো-ভিডিও সংরক্ষণ
গুগল ফটোসে অনেক ফটো ও ভিডিও জমা হতে পারে, যা আপনার স্টোরেজ পূর্ণ করে ফেলে। স্টোরেজ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন নিম্নলিখিত উপায়ে:
- কোয়ালিটি অপশন সিলেক্ট করুন: গুগল ফটোসে ছবি আপলোডের সময় 'স্টোরেজ সেভার' কোয়ালিটি সিলেক্ট করলে কম রেজুলেশনের ছবি সংরক্ষণ করা হবে, যাতে স্টোরেজ কম খরচ করবে।
- ডুপ্লিকেট ফটো সরান: অনেক সময় একই ছবি বারবার আপলোড হয়, যা অপ্রয়োজনীয়ভাবে জায়গা নেয়। গুগল ফটোসে গিয়ে ডুপ্লিকেট ছবি খুঁজে বের করে ডিলিট করতে পারেন।
৪। গুগল ওয়ান দিয়ে স্টোরেজ অপ্টিমাইজ করুন
গুগল ওয়ান ব্যবহার করে আপনি আপনার স্টোরেজের বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন। এতে কোন ফাইল বা ফোল্ডার কত জায়গা নিচ্ছে তা জানা সম্ভব হয়। ফলে অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো সহজেই চিহ্নিত করে মুছে ফেলতে পারবেন। এ ছাড়া, আপনি চাইলে গুগল ওয়ান থেকে অতিরিক্ত স্টোরেজ সাবস্ক্রাইব করে নিতে পারেন।
স্টোরেজ বাঁচানোর কয়েকটি বাড়তি কৌশল
- ফাইল আর্কাইভ করুন: কম গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলোকে ক্লাউড স্টোরেজ বা অন্য ড্রাইভে ব্যাকআপ হিসেবে রেখে গুগল ড্রাইভ থেকে মুছে ফেলতে পারেন।
- টেম্পোরারি ফাইল এড়িয়ে চলুন: টেম্পোরারি ফাইল বা সফটওয়্যারের অপ্রয়োজনীয় ফাইলগুলো মুছে ফেলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- শেয়ার করা ডকুমেন্ট মুছে ফেলুন: অন্যের সঙ্গে শেয়ার করা বড় ফাইলগুলো রিমুভ করুন, যদি সেগুলোর আর দরকার না থাকে।
গুগলের ১৫ জিবি স্টোরেজের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে দীর্ঘ সময় ধরে আপনি কোনো স্টোরেজ ফি না দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। উপরে বর্ণিত কৌশলগুলো মেনে চললে, আপনার স্টোরেজ ব্যবস্থাপনা অনেক সহজ হবে এবং 'স্টোরেজ ফুল' সতর্কবার্তা থেকে রেহাই পাবেন।
Comments