সবকিছু ঘোরের মতো লাগছে কারানের
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপের ফাইনালে একজন বাঁহাতি পেসারই গড়ে দেন ব্যবধান। ১৯৯২ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সে কাজটা করেছিলেন পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম। এবার ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক হয়ে কিংবদন্তিদের পাশে বসলেন ২৪ পেরুনো আরেক বাঁহাতি পেসার স্যাম কারান। তবে জীবনে কত বড় ঘটনা যে ঘটে গেছে, এখনো ঠিক যেন বুঝে উঠতে পারছেন না এই বাঁহাতি।
ফাইনাল মঞ্চে রান তাড়ায় দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে তীরে ভিড়িয়ে সব আলো নিজের দিকে করে নেন বেন স্টোকস। আরও একটি বিশ্বকাপ ফাইনালে তার এক্সেলেন্সই কেড়ে নেয় আলোচনার সবটা। কিন্তু এই জয়ের ভিত যে গড়ে দিয়েছিলেন কারানই। ৪ ওভার বল করে স্রেফ ১২ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ৩ উইকেট। আউট করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, শান মাসুদ আর মোহাম্মদ নাওয়াজকে।
ক্যামেরার চোখ, মানুষের আলোচনা স্টোকসের দিকে ঘুরে গেলেও ম্যাচ সেরা কিন্তু হয়েছেন কারানই। ৬ ম্যাচে ১১.৩৮ গড়, আর ওভারপ্রতি মাত্র ৬.৫২ রান দিয়ে তিনি ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টও তিনি।
বাঁহাতি পেসে গতি তার জুতসই। বাঁহাতি হওয়ায় সহজাত অ্যাঙ্গেল তো আছেই, সঙ্গে যুক্ত হয় বিষাক্ত স্যুয়িং ও নিখুঁত নিশানা। আসরের সেরা বোলার ও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন কারো কোন দ্বিমত ছাড়া।
ম্যাচ শেষে ব্রডকাস্টারদের সঙ্গে আলোচনায় কারান জানান সব কিছু আপাতত ঘোরের মতো লাগছে তার, 'বিশ্বকাপ জিতেছি আর কিচ্ছু দরকার নেই, এতেই আমি খুশি। এখনো বুঝে উঠতে পারছি না, সময় লাগবে। সকালে ঘুম ভেঙে যখন মনে হবে আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তখন রোমাঞ্চ জাগবে।'
কারানের জীবনটা আসলে ঘটনাবহুল। বাবা ছিলেন জিম্বাবুয়ের জাতীয় দলের ক্রিকেটার। তিনি নিজেও বয়সভিত্তিক ক্রিকেট শুরু করেছিলেন জিম্বাবুয়েতে। ২০১২ সালে বাবার আকস্মিক মৃত্যু, রবার্ট মুগাবে সরকারের নিপীড়ন মিলিয়ে জিম্বাবুয়ে ছাড়তে বাধ্য হন তারা। তিন ভাই টম কারান, স্যাম কারান আর বেন কারান সুযোগ পেয়ে যায় ইংল্যান্ডের কাউন্টিতে। বদলে যায় জীবনের গতিপথ। বড় ভাই টম তার আগেই খেলেছেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলে। তবে স্যামই কারান পরিবারের হয়ে ছাপটা এখন রাখছেন বেশি।
নিজের দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্স নিয়ে আপাতত বেশি কিছু বলার অবস্থায় নেই কারান। জানালেন এখন শুধুই উদযাপনের সময়, 'উদযাপন হবে, তুমুল উদযাপন। কীভাবে করব তা আপনাদের বলছি না…(হাসি)।'
Comments