শামির প্রশংসা করতে অভিধানে কোন শব্দ খুঁজে পাচ্ছেন না সৌরভ
প্রথম চার ম্যাচে একাদশে জায়গা পাননি মোহাম্মদ শামি। এরপর ফিরেই এমন পারফর্ম করা শুরু করেছেন তাতে নিজেকে এক লাফে তুলে নিয়েছেন সবার উপরে। ৬ ম্যাচ খেলেই ২৩ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ভারতীয় পেসার। বিধ্বংসী বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়া শামিকে ব্যাখ্যা করতে অভিধানে কোন শব্দ খুঁজে পাচ্ছেন না সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি।
বিশ্বকাপে এবার ৬ ম্যাচে ৪১.৫ ওভার বল করে মাত্র ৯.১৩ গড়ে তুলেছেন ২৩ উইকেট। প্রায় প্রতি ১০ বলে (১০.৯১) পাচ্ছেন এক উইকেট। ছয় ম্যাচের তিনটিতেই নিয়েছেন পাঁচ বা তার বেশি উইকেট। চার উইকেট নিয়েছেন একবার।
সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে দিতে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৫৭ রানে ৭ উইকেট নেন শামি। দুর্দান্ত সব গতিময় ইয়র্কার, ইনস্যুয়িং, আউটস্যুয়িংয়ের পসরায় মাত করে রেখেছেন তিনি।
ফাইনালের আগেও তাই ভারতের ট্রাম্পকার্ড ধরা হচ্ছে শামিকে। আনন্দবাজারের সঙ্গে সাক্ষাতকারে ফাইনাল দেখতে আহমেদাবাদে থাকা সৌরভ বুঝতেই পারছেন না এমন পেসারকে শুরুতে কীভাবে বসিয়ে রাখা হয়েছিলো, 'মোহাম্মদ শামিকে নিয়ে আমি মুগ্ধ, অভিভূত। কী বলব ওকে নিয়ে জানি না। ডিকশনারিতে ওকে নিয়ে নতুন শব্দ খুঁজতে হবে। আমি এরকম বোলার দেখিনি যে ওয়ানডেতে এত উইকেট তুলতে পারে। পাঁচ উইকেট নিচ্ছে, চার উইকেট নিচ্ছে। সাত উইকেট নিচ্ছে। সেমিফাইনালে সা-ত উইকেট! কী করে নেয় কে জানে। কী করে শুরুতে ওকে বসিয়ে রেখেছিল কে জানে!'
শামির পাশাপাশি জাসপ্রিট বুমহার, রবীন্দ্র জাদেজা, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজরাও আছেন দারুণ ছন্দে। ব্যাটিংয়ে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে সেরা অবস্থায় ভারতের তারকা ব্যাটাররা।
কোনরকম দ্বিধা ছাড়াই ফাইনালে ভারতকে অনেকখানি এগিয়ে রাখছেন ভারতের ক্রিকেট বদলে দেওয়ার নায়কদের একজন সৌরভ, 'অবশ্যই ভারত। কে খেলছে দলটা। দশে দশ করেছে। এগারোতে এগারো হলে কেউ অবাক হবে না। দলের এমন কেউ নেই যে খারাপ ছন্দে আছে।'
ভারতের উৎসব মাটি করে দেওয়ার সমস্ত রকম সামর্থ্যই আছে অস্ট্রেলিয়ার। অজি দলের অনেক অভিজ্ঞতার ভিড়ে সৌরভ বেশি বিপদজনক মনে করছেন ওয়ার্নারকে, 'ডেভিড ওয়ার্নারের কথা বলব। আর ওদের তিন পেসার স্টার্ক, কামিন্স ও হ্যাজেলউড। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ব্যাটিংয়ে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো কাউকে বাঁচতে হলে আমি ওয়ার্নারকে বাছব। বড় ম্যাচের খেলোয়াড় ও।'
ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনালের আগে সৌরভের কাছে আরেকটা প্রশ্নও যাচ্ছে অবধারিতভাবে। বিশ বছর আগে ২০০৩ সালে দারুণ খেলে অজিদের কাছেই ফাইনাল হেরেছিল ভারত। সেই দলটির অধিনায়ক ছিলেন সৌরভ। কষ্টটা কি এখনো তাকে পোড়ায় না? ভারতের প্রভাবশালী এই ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব জানালেন সেই কষ্টে পড়েছে সময়ের প্রলেপ, 'কুড়ি বছর অনেকটা সময়। এখন আর ভাবি না।'
Comments