আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩

রেকর্ড হারে অস্ট্রেলিয়ার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ নেদারল্যান্ডসের

রানের ব্যবধানে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় জয়ের স্বাদ অস্ট্রেলিয়ার।

রেকর্ড হারে অস্ট্রেলিয়ার কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ নেদারল্যান্ডসের

বিশ্বমানের একটা দলের বিপক্ষে নিজেদের পরীক্ষা করার আরেকটি সুযোগ। ৪০০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে এর বাইরে আর কোন লক্ষ্যের কথা ভাবার সুযোগ ছিল না ডাচদের। কিন্তু সেটিও পারল না তারা শেষমেশ। ২১ ওভারেই অলআউট হয়ে পেয়েছে রানের ব্যবধানে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় হারের স্বাদ। তাদের ৩০৯ রানের সে হার ওয়ানডে ইতিহাসেও দ্বিতীয় বড় হার।

দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বিক্রমজিত সিংয়ের মচমচে শটে কয়েকটি চার পেয়ে যায় ডাচরা শুরুতেই। কিন্তু ২৫ রানে তাকে ফিরতে হয় ম্যাক্সওয়েলের ডিরেক্ট হিটে রানআউট হয়ে। তার আগেই ওপেনিং সঙ্গী ম্যাক্স ও'ডাউড ফিরে যান ৬ রানেই। এরপর কলিন অ্যাকারম্যান ও সিব্র‍্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট কিছুক্ষণ ক্রিজে কাটাতে পারেন। যদিও পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার আগেই অ্যাকারম্যানের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১১ রানেই। একইভাবে আম্পায়ারস কলের দুর্ভাগ্যে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফিরেন বাস ডি লিডিও।

৫৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে আরও দশ রান যোগ করার আগেই আরেকটি উইকেটের পতন! এঙ্গেলব্রেখট স্কয়ার লেগে ওয়ার্নারের দুর্দান্ত ক্যাচে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস ও তেজা নিদামানুরু মিলে উইকেটের মিছিল আটকান কিছু সময়ের জন্য। কিন্তু তাদের জুটি ২২ রানের বড় হতে না হতেই শুরু হয়ে যায় উইকেটের মিছিল।

১৪ রানে নিদামানুরুর বিদায়ের পর টানা দুই বলে উইকেটে হারিয়ে ফেলে ডাচরা। অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে লোগান ফন বিক কিপারে ক্যাচ দেওয়ার পর ফন ডার মারওয়ে হয়ে যান এলবিডাব্লিউ। জ্যাম্পা এসে আরিয়ান দত্তকে এলবিডাব্লিউয়ে শিকার করেন যখন, ডাচরা একশর গণ্ডি ছুঁতে ১০ রান দূরে। একপাশে তখনও এডওয়ার্ডস দাঁড়িয়ে, শেষ পর্যন্ত একপাশে থেকেছেন তিনি। নেদারল্যান্ডস অলআউট হয়ে গেছে ২৯ ওভার বাকি থাকতেই।

দিল্লিতে টস হেরে বোলিংয়ে নামা নেদারল্যান্ডস চতুর্থ ওভারেই পেয়ে যায় উইকেট। লোগান ফন বিকের বলে পুলে ক্যাচ তুলে দেন মার্শ, ১৫ বলে ৯ রানেই থেমে যায় তার ইনিংস। তবে ৭ ওভারে পঞ্চাশ রান তুলে ফেলে অজিরা। ৬৬ রানে পাওয়ারপ্লে শেষ করে স্মিথ ও ওয়ার্নার দুজনেই খেলতে থাকেন আত্মবিশ্বাসের সাথে। ১৮তম ওভারেই এরপর যখন অজিরা শতরান পেরিয়ে যায়, ওয়ার্নারও তার ফিফটি পেয়ে যান ৪০ বলেই। পরের ওভারে স্মিথও ফিফটি পূর্ণ করে ফেলেন ৫৩ বলে।

স্মিথ-ওয়ার্নার জুটিতে বড় স্কোরের দিকে চোখ রাখে অস্ট্রেলিয়া। তবে দলকে ১৬৮ রানে রেখে স্মিথ আউট হয়ে যান ৬৮ বলে ৭১ রান করে। ৯ চার ও ১ ছয়ের সে ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে পয়েন্টে ভ্যান দ্যার মারওয়ের অসাধারণ ক্যাচে। স্মিথ ফেরার পর নতুন ব্যাটার মারনাস লাবুশেন মারওয়ে, দত্তের স্পিনে দুর্দান্তভাবে বের করেছেন নিয়মিত বাউন্ডারি। ৩২তম ওভারে দুইশ পেরিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ৪২ বলে ফিফটি পাওয়ার পর বেশিক্ষণ যদিও টিকেননি লাবুশেন। ৪৭ বলে ৬২ রান করে আউট হয়ে যান মিডঅনে ক্যাচ দিয়ে।

লাবুশেনের যাওয়ার পর দ্রুত আরও দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। জস ইংলিস ১৪ রানেই ধরা খান বাউন্ডারিতে। ৯১ বলে সেঞ্চুরি পাওয়ার দুই বল পরই আউট হয়ে যান ওয়ার্নারও। ক্যামেরন গ্রিন এসে এক অঙ্কে রানআউট হয়ে গেলে ২৯০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে অজিরা। তখনও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেট যদিও বাকি!

এবং ম্যাক্সওয়েল যা করলেন, ডাচদের কিছুই করার ছিল না! প্রথমে স্ট্রেইট ড্রাইভ, কাভার ড্রাইভে চার মেরেছেন। পরে শুরু করেছেন তার মারদাঙ্গা ব্যাটিং। রিভার্স সুইপ, তাও পেস বলে! একবার নয়, চারবার বাউন্ডারিতে বল পাঠিয়েছেন রিভার্স সুইপে। দুটি ছক্কা, দুটি চার। ২৭ বলে ফিফটি ছুঁয়ে ফেলা ম্যাক্সওয়েল পরে দেখান পাওয়ার গেম! নেদারল্যান্ডসের বোলাররা নিরুপায় হয়ে পড়েছিলেন তার সামনে।

ওই ঝড়ের মাঝে সেঞ্চুরি এসে যায় ৪০ বলেই! ভেঙ্গে দেন চলতি বিশ্বকাপেই ৪৯ বলে এইডেন মার্করামের গড়া দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। সেঞ্চুরির পর ম্যাক্সওয়েলের তোলা ঝড় থামে গিয়ে ১০৬ রানে। ৪৪ বলের সে ইনিংসে ৯ চারের সাথে মারেন ৮টি ছয়। শেষ ওভারে ম্যাক্সওয়েল আউট হয়ে গেলে অজিদের সংগ্রহটাও আর চারশ ছাড়িয়ে যায়নি। তাতেই যদিও অসহায় আত্মসমর্পণই করেছে নেদারল্যান্ডস।

Comments

The Daily Star  | English

‘No room for politics under AL name, ideology’

Nahid Islam, adviser to the interim government, spoke with The Daily Star on the nation's key challenges and the way forward.

14h ago