এমন ঝড়ো জুটি আর দেখেনি বিশ্বকাপ
একপাশে একজন মারমুখী হলে আরেকজন ঝুঁকিহীন খেলে স্ট্রাইক বদলাবেন। মারমুখী হওয়ার সুযোগ করে দেওয়াই স্বাভাবিক। এখনও তেমনটা দেখা যায়, তবে আধুনিক ক্রিকেটের যুগে সেসবের ধার ধারে না কেউ খুব একটা। এপাশে মার, ওপাশেও মার, চলে সমানতালে! তবে সেরকম তো আর চাইলেই সম্ভব হয় না। দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ম্যাচেই যেমন মারকাটারি জুটির এক রেকর্ড হয়েছে তাই। যা গড়েছেন হেইনরিখ ক্লাসেন ও মার্কো ইয়ানসেন।
দুজনে মিলে ষষ্ট উইকেটে গড়েছেন ৭৭ বলে ১৫১ রানের জুটি। তাদের সে বিধ্বংসী জুটিতে রান রেট ছিল ১১.৭৬। বিশ্বকাপের মঞ্চে দেড়শ রানের বড় পার্টনারশিপ হয়েছে যেসব, তাতে এই রান রেটের বেশি থাকেনি কোনটিতেই। দেড়শ রানের জুটিতে সর্বোচ্চ রান রেট ওই ক্লাসেন-ইয়ানসেনের জুটির ১১.৭৬।
দেড়শ রানের বড় পার্টনারশিপ হয়েছে, সঙ্গে সে জুটিতে ওভারপ্রতি রান উঠেছে দশের উপরে। এরকম ঘটনা খুব কমই হয়েছে বিশ্বকাপের মঞ্চে। ক্লাসেন-ইয়ানসেন জুটির আগে তা আর মাত্র দুটি জুটিই করতে পেরেছিল। ২০১৫ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে শেন ওয়াটসন ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল করেছিলেন একটি। পঞ্চম উইকেট জুটিতে দুই অস্ট্রেলিয়ান খেলেছিলেন ১১.৭০ রান রেটে।
এত দ্রুত গতিতে খেলেও তারা ৮২ বলে এনে ফেলেছিলেন ১৬০ রান।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৩৭৬ রানের সংগ্রহ গড়েন অজিরা। সেখানে ৫৩ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাক্সওয়েল। ওয়াটসন খেলেন ৪১ বলে ৬৭ রানের ইনিংস। সিডনিতে লঙ্কানদের ৩১২ রানে অলআউট করে অজিরা পায় ৬৪ রানের জয়।
অপর যে জুটির এই নজির, সেটি গেল বিশ্বকাপেই হয়েছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড-আফগানিস্তানের মধ্যকার ম্যাচে। সে ম্যাচে এউইন মরগান ও জো রুট মিলে ১০২ বলে ১৮৯ রানের ঝড়ো জুটি গড়েছিলেন। অর্থাৎ, তৃতীয় উইকেটের সে জুটিতে দুজনে মিলে রান তুলেছিলেন ওভারপ্রতি ১১.১২ করে। ৩৯৭ রানের পাহাড়সম স্কোর গড়ার পথে মরগান খেলেন ৭১ বলে ১৪৮ রানের ইনিংস, জো রুট অবদান রাখেন ৮২ বলে ৮৮ রানের ইনিংস খেলে। ম্যানচেষ্টারে ১৫০ রানের জয় পায় ইংল্যান্ড।
ক্লাসেন-ইয়ানসেনের ১১.৭৬, ম্যাক্সওয়েল-ওয়াটসনের ১১.৭০, এউইন মরগান-জো রুটের ১১.১২। দেড়শর বেশি রানের জুটিতে রানরেটের হিসেবে এই ক্রম। এই তিন জুটির বাইরে আর কোনোটি কেন নয়? ধরতে পেরেছেন হয়তো। এই তিন জুটির বাইরে ওভারপ্রতি দশের বেশি করে রান উঠেছে, সঙ্গে দেড়শের অধিক রানও এসেছে, তা বিশ্বকাপের মঞ্চে হয়নি যে কখনোই।
Comments