চেন্নাই থেকে

শ্রীরামের মাঠ বলেই আশা বাংলাদেশের

Najmul Hossain Shanto & Sridharan Sriram
ছবি: একুশ তাপাদার

চেন্নাইর মাঠের কন্ডিশনে কে বেশি সুবিধা পাবে? উপমহাদেশের দল বলে বাংলাদেশকে বেছে নেওয়া স্বাভাবিক হতো। কিন্তু যদি বলা নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রা এই মাঠের নাড়ি নক্ষত্র বেশি জানেন। ভুল বলা হয় না। আবার বাংলাদেশ দলের ড্রেসিংরুমেও এমন একজন আছেন এই মাঠ যার চেনা শৈশব থেকে।

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে দুই দল আছে দুই মেরুতে। প্রথম দুই ম্যাচে দাপট দেখিয়ে টেবিলের উপরের দিকে কিউইরা। আফগানিস্তানকে হারালেও ইংল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হেরে ব্যাকফুটে বাংলাদেশ।

তবে টুর্নামেন্ট এখনো শুরুর দিকে থাকায় সমীকরণ তো যেকোনো সময় বদলেও যেতে পারে। দারুণ ছন্দে থাকলেও পা হড়কাতে চাইবে না নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ যেমন চাইবে যেকোনোভাবে ঘুরে দাঁড়াতে।

বৃহস্পতিবার চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ছিলো ঐচ্ছিক। এদিন তাই মাঠে আসেননি সাকিব আল হাসান, লিটন দাস ও মোস্তাফিজুর রহমান। সহ-অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে অনুশীলনে সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত দেখা গেছে শ্রীধরণ শ্রীরামকে। এই শহরেরই সন্তান তিনি। উইকেটের ধরণ, কোন সময়ে কেমন আচরণ করবে সবই তার জানা। স্থানীয় নেট বোলারদেরও তিনি নিজে বাছাই করে এনেছেন বাংলাদেশের অনুশীলনে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চেন্নাইতে বাংলাদেশ দলের তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এদিন বরং দেখা গেল অনেকটা সহকারির ভূমিকায়।

আউটার নেটের সামনে চটপটে শ্রীরাম শান্তর সঙ্গে লম্বা সময় ধরে আলাপ করার পর একে একে ছুটে গেলেন বাকিদের কাছে। পেসার থেকে স্পিনার উপস্থিত সবার কাছেই যেন বিশেষ কিছু বলার আছে তার। কার নেটে কি ধরণের নেট বোলার লাগবে সব জড়ো করলেন নিজ দায়িত্বে।  

শ্রীরাম আছেন, স্পিনাররা আছেন, কন্ডিশন আছে মিরপুরের আদলে। বাংলাদেশই তো বেশি সুবিধা পাওয়ার কথা। তবে প্রতিপক্ষের দিকে ভালোমতন নজর দিলে হিসেব এত সহজ মনে হবে না। উপমহাদেশের বাইরের দলগুলোর মধ্যে স্পিন এই সময়ে সবচেয়ে ভালো খেলছে নিউজিল্যান্ড। স্পিন আক্রমণেও ধারালো তারা।

বিশ্বকাপের আগেই বাংলাদেশে সিরিজ জিতে এসেছে তাও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন তারকাকে ছাড়া। শ্রীরাম যেমন আছেন বাংলাদেশ দলে। নিউজিল্যান্ডের আছেন ডেভন কনওয়ে, মিচেল স্ট্যান্টনাররা। আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসে খেলার সুবাদে চিদাম্বরম যে তাদেরও হোম ভেন্যু। সাম্প্রতিক সময়েই খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় এই মাঠের হালচাল ভালো জানার কথা তাদেরও।

এবার বিশ্বকাপে চিদাম্বরমে যে একটা ম্যাচ হয়েছে তাতে দাপট দেখা গেছে স্পিনারদের। রবীন্দ্র জাদেজা, রবীচন্দ্রন অশ্বিনের তোপে দুশোর আগেই গুটিয়ে যায় পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়নরা। ভারতকে শুরুতে অজি পেসাররা চাপে ফেললেও লাভ হয়নি।

আগের দিন নিউজিল্যান্ডের বোলিং কোচ শেন জার্গেনসন যেমন বললেন চেন্নাইতে স্পিনাররা যেমন সুবিধা পাবেন, পেসারদেরও এখানে কিছু না কিছু আছে। এসব সামলে ব্যাটারদেরও রানের খোঁজে থাকার পথ আছে। কৌশলে এগিয়ে থাকতে দুই দলেরই মধ্যেই চলছে হিসাব নিকাশ মিলানোর মিশন।

বাংলাদেশের হয়ে কথা বলতে এসে শান্ত জানান, কন্ডিশনের কারণেই আশাটা চওড়া হচ্ছে তাদের,  'হ্যাঁ অবশ্যই। আমরা এর আগে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ দেখেছি। উইকেটটা স্পিন নির্ভর ছিল। আমার মনে হয়, আমাদের স্পিনারদের অনেক সাহায্য করে এটা। উইকেট নিয়ে খুব বেশি ভাবছি না। আমাদের পরিকল্পনাগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন করতে হবে। আমাদের কী করতে হবে সেই সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।'

মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে তিন স্পিনার নিশ্চিত। খুব বিস্ময়কর না হলে তিন পেসারও খেলানো হবে। তবে তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসানকে বসিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজকে আবার মেইকশিফট ওপেনিংয়ে পাঠানো হবে কিনা এটা কৌতূহলের। মিরাজ ওপেন করলে একাদশে ঢুকে যেতে পারেন মাহমুদউল্লাহ। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার বৃহস্পতিবার সময় নিয়ে ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন।

চেন্নাইতে এখনো শীত পড়েনি, রাতের ম্যাচ হলেও তাই শিশিরের সমস্যা নাই। টস নিয়ে খুব বেশি ভাবনার জায়গা থাকবে না। তবে রাতের আলোয় পেসাররা পেতে পারেন স্যুয়িং, সিম মুভমেন্ট।

Comments

The Daily Star  | English

What are we building after dismantling the AL regime?

Democracy does not seem to be our focus today. Because if it were, then shouldn’t we have been talking about elections more?

11h ago