বড় শটের মহড়া আর খুনসুটি ভরপুর অনুশীলন

Shakib Al Hasan
শট মেরে সাকিব দাবি করছিলেন ছক্কা, বাকিরা নারাজ। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

পশ্চিম প্রান্তের গ্যালারিতে বসে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের ছবি তুলছিলেন এক সিনিয়র আলোকচিত্র সাংবাদিক। রনি তালুকদারের মারা একটা বড় শট তীব্র জোরে গেল তার মাথার পাশ দিয়ে। আৎকে উঠলেন তিনি।  খানিক পর পরই , 'বল', 'বল' চিৎকারের সতর্ক বার্তায় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়তে হলো গণমাধ্যম কর্মীদের। উত্তর-দক্ষিণ দুই পাশের নেট থেকেই ব্যাটারদের মারা কয়েকটি  শট উড়ে গেল গ্যালারিতে। কোনটি আবার গেল স্টেডিয়ামের বাইরে। পরে মাঝ উইকেটে নিজেদের মধ্যে ছক্কা পেটানোর এক প্রতিযোগিতাতেও মাতলেন দলের মূল ব্যাটাররা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলকে পাওয়া গেল এমন ফুরফুরে মেজাজে।

বুধবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সকাল ১০টা থেকে ছিল বাংলাদেশ দলের অনুশীলন। শুরুতে গ্রাউন্ড ফিল্ডিং ও ক্যাচিং অনুশীলন করেন সবাই। লিটন দাসকে কিপিং অনুশীলন করতেও দেখা যায়। দক্ষিণ প্রান্তের ড্রেসিংরুম লাগোয়া নেটে শুরুতে নামলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও রনি। ঠিক উল্টো পাশের নেটে তখন যান লিটন ও তৌহিদ হৃদয়।

নাসুম আহমেদ, তানভীর ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজদের বিপক্ষে খেলছিলেন রনি। শান্তকে শুরুতে সামলাতে দেখা যায় মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও নেট বোলার হিসেবে আসা মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে।

৮ বছর পর বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে ফিরে প্রথম আনুষ্ঠানিক অনুশীলনে আলাদা করে নজর কাড়েন রনি। সোজা শটগুলো বেশ জোরে সংযোগ করছিলেন তিনি। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে মনোযোগ দিয়ে তাকে পর্যবেক্ষণ করে পরে ছুটে গিয়ে দেন কিছু পরামর্শ, বদলে দেন টাস্ক। পাওয়ার প্লে ও পাওয়ার প্লের বাইরের ফিল্ড পজিশন চিন্তা করে খেলার লক্ষ্য দেওয়া হয় তাকে। কয়েকটি বল ছাড়া রনি বেশিরভাগ বলই বেশ জোরে মেরেছেন। নেট বদল করে পরে পেস খেলেছেন তিনি, স্পিনে দেখা গেছে শান্তকে।

দারুণ বল করতে দেখা যায় তানভীরকেও। প্রথমবার দলে আসা বাঁহাতি স্পিনার কিছুটা জোরের উপর বল করেন। লেন্থ থেকে অনেক বলই লাফিয়ে উঠছিল। তাকে সামলাতে কিছুটা হিমশিম খেতে হয় রনি-শান্তদের।

শান্ত-মিরাজ খুনসুটি

বাঁহাতি শান্তকে নিজের নেটে পেয়ে আগ্রাসী হয়ে উঠতে চাইছিলেন মিরাজ। প্রথম বলটাতে শান্ত পরাস্ত হলে, 'আগে পায়ে লেগেছে' বলে চিৎকার করে উঠেন তিনি। শান্তর জবাব, 'পায়ে, পায়ে তো লাগেইনি, ব্যাটে লেগেছে।' মিরাজের উপর পরে চেপে বসেন শান্ত। দারুণ সব কাট শট, স্লগ সুইপে উড়াতে থাকেন বারবার। শান্তর অগ্নিমূর্তি দেখে পরে মিরাজ কিছুটা দমে যান।

দুই নেটে হিটিং তাণ্ডব

দুই প্রান্তের দুই নেটেই চলছিল বড় শটের মহড়া। সেসব বল আবার উড়ে আসছিল গ্যালারিতে। যেখানে দাঁড়িয়ে অনুশীলন কাভার করছিলেন গণমাধ্যম কর্মীরা। কিন্তু স্বস্তিতে থাকার উপায় ছিল কম। দুই দিক থেকে বল উড়ে আসায় মনযোগ রাখা হচ্ছিল মুশকিল। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পরে মজা করে বললেন, 'আপনাদের তো সঙ্গে হেলমেট রাখা উচিত' 

Shakib Al Hasan
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ছক্কা মারার প্রতিযোগিতায় সবার আগে জিতলেন সাকিব

মাঝ উইকেটে ছক্কা মারার এক লড়াই শুরু হয় ব্যাটারদের। নিয়ম ছিল এমন, ট্রেনার ইফতেখার ইফতি ছুঁড়বেন বল। সেসব বলে মাঠের বড় দিকটায় ছক্কা মারতে পারলে পরে আরেকটি বল খেলার সুযোগ মিলবে। শুরুতে কেউই পারছিলেন না। সাকিবের মারা একটি গিয়ে পড়ল লাইনের খুব কাছে। সাকিবের দাবি ছিল সেটি ছক্কা, কিন্তু বাকিরা মানতে নারাজ। কয়েক সেকেন্ড হইচইয়ের পর সাকিবকে ঠেলে সরিয়ে দিলেন লিটন-হৃদয়রা। পরে সবার আগে সফল হয়েছেন সাকিবই। ছক্কা মেরে জোরে একটা আনন্দের চিৎকার দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সাকিবের পর সফল হতে দেখা যায় রনিকে। বেশ কয়েকবারের চেষ্টার পর সফল হন হৃদয়। পরে খেলার নিয়ম বদল করে কেবল লং অফের দিকে মারার নির্দিষ্ট এলাকা ঠিক করে দেওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

8h ago