'যা চাইতে পারতাম, জীবন তার চেয়ে অনেক বেশি দিয়েছে'
'চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়, বিচ্ছেদ নয়
চলে যাওয়া মানে নয় বন্ধন ছিন্ন করা আর্দ্র রজনী
চলে গেলে আমারও অধিক কিছু থেকে যাবে
আমার না-থাকা জুড়ে।'
মাত্র ৩২ এই চির বিদায় নিয়েছিলেন রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ। কিন্তু রেখে গেছেন তার অমর কীর্তি। আনহেল দি মারিয়াকে অন্তত পাওয়া গেল ৩৬ বছর পর্যন্ত। বছর দুই আগে কাতার বিশ্বকাপ জিতেই শেষ করতে চেয়েছিলেন। সতীর্থদের অনুরোধে থেকে গিয়েছেন। সেই মারিয়া আরও একটি ফাইনালে। আর এই ফাইনাল দিয়েই ইতি টানছেন তার বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের।
এরমধ্যেই তাই বেজে উঠেছে বিদায় রাগিণী। আর কিছু ঘণ্টা পরই আর্জেন্টিনা ফুটবল থেকে অতীত হয়ে যাবেন দি মারিয়া। যার হাত ধরেই ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়েছে আর্জেন্টিনা। ৩৬ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে জিতেছে বিশ্বকাপও। আর্জেন্টিনার প্রতিটি জয়ের অন্যতম নায়কের নামই যে দি মারিয়া। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর প্রতিটি শব্দকে আরও জীবন্ত করেই এবার বিদায় নিচ্ছেন তিনি। কারণ মারিয়া বিদায় নিলেও তার কীর্তি আজীবন স্মরণ করবেন ফুটবল ভক্ত-সমর্থকরা।
বিদায় বেলায় এরচেয়ে ভালো আর কী চাইতে পারতেন? স্বয়ং দি মারিয়াই এ বিষয়ে সন্দিহান। ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে অপূর্ণতা বলতে কোনো শব্দ নেই। সম্ভাব্য সবকিছুই জিতেছেন। বিদায় বেলায় চাওয়া পাওয়ার হিসেব মিলাতে গিয়ে তৃপ্ত কণ্ঠেই সামাজিকমাধ্যমে লিখেছেন, 'আমি যা চাইতে পারতাম, জীবন আমাকে তার চেয়ে অনেক বেশি দিয়েছে।'
শুধু এইটুকুতেই ক্ষান্ত হননি দি মারিয়া, মেসি-দি পলদের সঙ্গে দেওয়া ছবিতে এই লেখার শেষে একটি ভালোবাসার চিহ্নও জুড়ে দিয়েছেন। আর তাকে যারা শুভ কামনা জানিয়েছেন তাদের অনেকের পোস্ট শেয়ারও করেছেন তিনি। যেখানে রয়েছে বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতিও।
আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে এখন পর্যন্ত ১৪৪টি ম্যাচ খেলেছেন দি মারিয়া। সেখানে গোল করেছেন ৩১টি। গোলের সংখ্যা অনেক না হলেও তার তিনটি গোলের স্মৃতি আজীবন থেকে যাবে আর্জেন্টাইন ভক্তদের মনে। তার গোলেই গত কপার ফাইনালে শিরোপা খরা কাটে আর্জেন্টিনার। এরপর ফিনালিসিমা ও কাতার বিশ্বকাপেও তার পুনরাবৃত্তি করেন এই কিংবদন্তি।
বাংলাদেশ সময় আগামীকাল সোমবার সকালে মায়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নামছে আর্জেন্টিনা। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া। কে জানে এই ফাইনালে গোল দিয়ে নিজেকে আরও উচ্চতায় তুলেই হয়তো বুট জোড়া খুলে রাখবেন দি মারিয়া।
Comments