মাহমুদউল্লাহর ফিফটি ও অলরাউন্ডার রিশাদে জিতল বরিশাল
দুই ওভার আগেই সহজ একটি ক্যাচে ছেড়েছিলেন ডেভিড মালান। শেষ ওভারে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই মালানই ধরলেন দুর্দান্ত এক ক্যাচ। তাতে আউট খুলনা টাইগার্সের শেষ ভরসা মোহাম্মদ নাঈম শেখ। এরপর আমির জামাল এসে শেষ দুই বলে পেলেন পাঁচ রান। তাতে তীরে এসে তরী ডোবে খুলনা টাইগার্সের। দারুণ জয় পায় ফরচুন বরিশাল।
বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিপিএলের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে খুলনা টাইগার্সকে ৭ রানে হারিয়েছে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬৭ রান তোলে বরিশাল। জবাবে নিজেদের নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬০ রানের বেশি তুলতে পারেনি খুলনা।
মাঝারি পুঁজি নিয়েও বরিশাল জয় পেয়েছে বোলারদের দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। তবে এই মাঝারি পুঁজি পাওয়াও এক পর্যায়ে বেশ কঠিন ছিল তাদের জন্য। তা মিলেছে মাহমুদউল্লাহ ও ব্যাটার রিশাদ হোসেনের কল্যাণে। এরপর বাকি কাজ করেন বোলাররা।
তবে শেষ দিকে দলকে জয়ের আশা দেখালেও খুলনা চাপে পড়েছিল নাঈমের ব্যাটেই। প্রায় পুরো ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু রানের গতি সে অর্থে বাড়াতে পারেননি। স্লগ ওভারের আগে তার পরিসংখ্যান ছিল ৪৪ বলে ৩৫ রান। তাতেই চাপে পড়ে যায় দলটি। এরপর চেষ্টা করেও আর পারেনি তারা।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই ইমরুল কায়েসকে হারায় খুলনা। পড়ে অধিনায়ক মিরাজকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন নাঈম। কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাট ৫১ বলে ৫৯ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। এরপর আলেক্স রসের সঙ্গে নাঈমের জুটিতে আসে মাত্র ৯ রান। কিন্তু বল খেলেন ১৭টি। যেখানে নাঈম ৯ বলে করেছেন মাত্র ৫ রান। মূলত এখানেই পিছিয়ে যায় দলটি।
আফিফ হোসেন নেমে দ্রুত রান তুলে চেষ্টা করেছিলেন। তার সঙ্গে জেগে ওঠার চেষ্টা করেন নাঈমও। ২৭ বলে ৫৫ রানের জুটিও গড়েন তারা। সহজ জীবন পেলেও আফিফ খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ব্যর্থ হয়েছেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও। শেষদিকে নাঈম ৮ বলে ২০ রান তুললেও তা যথেষ্ট হয়নি। ৭ রান দূরেই থামে তারা।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন নাঈম। ৫৯ বলের ইনিংস ৪টি চার ও ৬টি ছক্কা মারেন এই ওপেনার। ২৯ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন মিরাজ। ১৭ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৭ রান করেন আফিফ। বরিশালের পক্ষে ২০ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন জাহান্দাদ খান।
এর আগে টস জিতে বরিশালকে ব্যাটিংয়ে নামিয়ে বল হাতে শুরুটা দারুণ করেন খুলনা অধিনায়ক মিরাজ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে তামিম ইকবাল ও ডেভিড মালানকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন তিনি। পরের বলে ডিফেন্স করে হ্যাটট্রিক আটকালেও দলের হাল ধরতে পারেননি মুশফিকুর রহিম। ব্যক্তিগত ৫ রানে রানআউটে কাটা পড়ে দলকে আরও বিপদে ফেলে যান তিনি।
দলীয় ১৬ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলের হাল ওপেনিংয়ে নামা তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চতুর্থ উইকেটে ৪৪ বলে ৪৭ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। তাওহিদকে বিদায় করে এ জুটিও ভাঙেন মিরাজ। এক বলের ব্যবধানে বিদায় নেন মোহাম্মদ নবিও। তাকে শিকার করেন সালমান ইরশাদ। আর দলীয় ৮৭ রানে ফাহিম আশরাফ আউট হলে লেজ বেরিয়ে আসে দলটির।
আটে নামা রিশাদ হোসেন অবশ্য ভালো সঙ্গ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহকে। ৪৭ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। ২৮ বলের জুটিতেই প্রতিরোধ গড়ে দলটি। মাহমুদউল্লাহ বিদায় নেন ফিফটি তুলেই। এরপর রিশাদের সঙ্গে জাহান্দাদ খান ও তানভির ইসলামের ছোট দুটি ক্যামিও ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি মিলে দলটির।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। ৪৫ বলের ইনিংসে ৩টি চার ও ২টি ছক্কা মারেন এই ব্যাটার। রিশাদ করেন ১৯ বলে ৩৯ রান। ৫টি চার ও ১টি ছক্কা দিয়ে সাজান নিজের ইনিংস। ৩৬ রান আসে তাওহিদের ব্যাট থেকে। তানভির ৪ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ১২ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেন। খুলনার পক্ষে ৩৫ রানের ৩টি উইকেট নেন মিরাজ। ২টি শিকার সালমানের।
Comments