চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দল থেকে বাদ পড়ার দিনই লিটনের বিস্ফোরক সেঞ্চুরি

ছবি: সংগৃহীত

ওয়ানডেতে দীর্ঘদিন ধরে রানখরায় থাকা লিটন দাসের জায়গা হয়নি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দলে। এমন দুসংবাদ পাওয়ার দিনই ঘরোয়া ক্রিকেটে ভিন্ন সংস্করণে বিস্ফোরক ইনিংস খেললেন ডানহাতি ব্যাটার। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে স্মরণীয় সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি।

রোববারের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তাণ্ডব চালিয়ে মাত্র ৪৪ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন লিটন। ১৬তম ওভারে শফিউল ইসলামের বলে লং-অফ দিয়ে চার মেরে ব্যক্তিগত মাইলফলকে পৌঁছান তিনি। বিপিএলে তো বটেই, স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতেই এটি তার প্রথম সেঞ্চুরি। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আগের ২২৬ টি-টোয়েন্টির ২২০ ইনিংসে লিটনের সর্বোচ্চ ছিল ৮৫ রান। ২৯টি ফিফটি থাকলেও ছিল না কোনো সেঞ্চুরি।

টস হেরে আগে ব্যাটিং পাওয়া ঢাকার হয়ে ইনিংস শুরু করতে নেমে পুরো ২০ ওভার খেলেন লিটন। বিপিএলে বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন তার দখলে। আগের দ্রুততম বাংলাদেশি সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন তামিম ইকবাল। তার লেগেছিল ৫০ বল। বিপিএলে ৪০ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে সবার ওপরে আছেন পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ।

এবারের আসরের প্রথম তিন ম্যাচে হতাশ করায় ঢাকার একাদশ থেকে বাদ পড়েছিলেন লিটন। এক ম্যাচ বাইরে থাকার পর গত শুক্রবার ফিরে নজর কাড়েন তিনি। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে খেলেন ৪৩ বলে ৭৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। ধারাবাহিকতা রেখে এদিন রীতিমতো জ্বলে উঠে চার-ছক্কার পসরা সাজিয়ে বসেন তিনি। তাকে থামানোর কোনো উপায় খুঁজে পাননি রাজশাহীর বোলাররা।

শুরু থেকেই সাবলীল থাকা লিটন পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এসএম মেহেরবের ওপর চড়াও হয়ে হাত খোলেন। টানা তিন বলে মারেন চার, ছক্কা ও চার। এরপর প্রতিপক্ষের বোলারদের স্রেফ কচুকাটা করতে থাকেন। ২৪ বলে ফিফটি ছুঁয়ে আরও বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেন তিনি। ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করার পথে তার ব্যাট থেকে আসে আটটি চার ও সাতটি ছক্কা। 

সেরা ছন্দ ও সামর্থ্যের পুরনো ঝলক দেখিয়ে শেষ পর্যন্ত লিটন অপরাজিত থাকেন ১২৫ রানে। টি-টোয়েন্টিতে যা তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। নিঃসন্দেহে বিপিএল ইতিহাসের সেরা ইনিংসগুলোর তালিকাতেও ওপরের দিকেই থাকবে এটি। ৫৫ বল মোকাবিলায় দশটি চার ও নয়টি ছক্কা মারেন তিনি। ১০৪ রানে থাকাকালীন যদিও সুযোগ দিয়েছিলেন। তবে সানজামুল ইসলাম হাতে জমাতে পারেননি সেই ক্যাচ।

বেঁচে যাওয়া লিটনের কাছে পরে পাত্তা পাননি রাজশাহীর সবচেয়ে আঁটসাঁট বোলার তাসকিন আহমেদ (৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে উইকেটশূন্য)। ১৯তম ওভারে টানা চার, ছক্কা ও চার আসে তার ব্যাট থেকে। ঢাকার ইনিংসের শেষ ওভারে কেবল শেষ বলটিতে স্ট্রাইক মেলে লিটনের। সেটিও লং-অন দিয়ে ছক্কা হাঁকান তিনি। এরপর এক হাতে ব্যাট ও এক হাতে হেলমেট নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

দুপুরে আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ দল ঘোষণা করা হয়। লিটনকে বাদ দেওয়ার পেছনে স্পষ্ট করেই ব্যাট হাতে ছন্দহীনতার যুক্তি দেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ৬৬ রান করার পর এই সংস্করণে ১৩ ইনিংসে ফিফটি নেই লিটনের। বাংলাদেশের জার্সিতে সবশেষ ৭ ওয়ানডেতে তিনি থামেন এক অঙ্কের ঘরে।

Comments

The Daily Star  | English

Wrap up polls preparations by December

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday ordered the authorities concerned to complete, by December, the preparations for the upcoming national election.

7h ago