ডি ককের পার্থক্য গড়ে দেওয়ার পেছনের কারণ ‘পিচ পড়তে পারা’
সেন্ট লুসিয়ায় আগের চার ম্যাচেই প্রথম ইনিংসে অন্তত ১৮০ রানের স্কোর হয়েছে। কিন্তু এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে হাই-স্কোরিং পিচে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের জন্য ব্যাটিং তুলনামূলক কঠিন হয়ে উঠেছিল। ধারাভাষ্যকারদের পাশাপাশি ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার অবাক হয়েছিলেন তাতে। তবে ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে আসা প্রোটিয়া ওপেনার কুইন্টন ডি কক একটুও বিস্ময় দেখাননি। বাঁহাতি এই ব্যাটারের পিচের আচরণ সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা ছিল।
কিছু মানুষ রাতের সঙ্গে দিনের পিচ মিলিয়ে ফেলার ভুল করেছে বলে মত দেন ডি কক। সঙ্গে জানান, তার পার্থক্য গড়ে দেওয়া ইনিংসের পেছনে কাজ করেছে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) খেলার অভিজ্ঞতা।
ড্যারেন সামি জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল শুক্রবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৮ বলে ৬৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন ডি কক। আগের ম্যাচেও যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ফিফটি হাঁকানো এই ব্যাটার ম্যাচসেরার পুরস্কার নিতে এসে বলেন, 'আমরা দুয়েকটি রাতের ম্যাচ দেখেছি এখানে। কিছু লোক ভুল করেছে (পিচ রাতের মতো আচরণ করবে ভেবে)। আমি কয়েকটি সিপিএলের ম্যাচ খেলেছি এখানে। নিশ্চিতভাবেই রাতে যেমন পিচ আচরণ করে, দিনে সেরকমভাবে করে না।'
এরপর সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, 'বাকিরা জানত কিনা আমি জানি না। কিন্তু আমার যথেষ্ট ধারণা ছিল। আমি এখানে ক্যারিবিয়ান লিগে কিছুটা খেলেছি এবং একই জিনিস হয়— উইকেট দেখতে সুন্দর লাগে। রাতে এটা ভিন্ন আচরণ করলেও দিনে ১৬০-১৭০ রানই জেতার মতো স্কোর। সাধারণত ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে এরকম হয়। আমার মনে হয়, রাতে কৃত্রিম আলো ও কিছুটা শিশির হয়তো বল বেশি ভালোভাবে (ব্যাটে) আসতে সাহায্য করে।'
সুপার এইটের দ্বিতীয় গ্রুপের ম্যাচটির পাওয়ার প্লেতে আগ্রাসী মনোভাবে ডি কককে ব্যাট করতে দেখা যায়। প্রথম ছয় ওভারে বিনা উইকেটে ৬৩ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। অপরপ্রান্তে রিজা হেন্ড্রিকস মন্থর গতিতে ১৬ বলে ১১ রান করলেও দলকে এগিয়ে নিয়ে যান ডি কক। পাওয়ার প্লেতে ২০ বল খেলে তিনি একাই এনে দেন ৪৯ রান। এই প্রসঙ্গে ডি কক বলেন, 'রান করার জন্য এখানে পাওয়ার প্লে হচ্ছে তুলনামূলক সহজ সময়। যখন বল পুরনো হয় এবং উইকেট ব্যবহৃত হতে থাকে, ব্যাটিং কঠিন হয়ে পড়ে।'
ডি ককের প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়ক বাটলার পিচ নিয়ে বলেন, 'দেখে (রাতের মতো) একই রকম উইকেট মনে হয়েছিল। তবে আমার মনে হয়, সকলের প্রত্যাশার চেয়ে পিচ কিছুটা ধীর গতির ছিল। ১৬০ রান ছিল পার স্কোরের কাছাকাছি। আমরা শেষ ১০-১৫ ওভারে খুব ভালো বোলিং করেছি।'
দক্ষিণ আফ্রিকার দেওয়া ১৬৪ রানের লক্ষ্যে নেমে ইংল্যান্ড আটকে যায় ১৫৬ রানে। পাওয়ারপ্লে তে দক্ষিণ আফ্রিকার ৬৩ রানের বিপরীতে ইংল্যান্ড আনে ১ উইকেটে ৪১ রান। ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়া পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে নায়ক ডি কক। তার ১৯৩ স্ট্রাইক রেটের ইনিংস নিয়ে বাটলার বলেন, 'ম্যাচে পাওয়ার প্লে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে বলে আমি অনুভব করেছি। আমার মনে হয়, যেভাবে কুইনি (ডি কক) শুরুতে খেলেছে, সত্যিই সেটা আমাদের অনেক চাপে ফেলে দিয়েছিল। সে দারুণ কিছু শট খেলেছে এবং আমরা সেরকমটা করতে পারিনি।'
Comments