এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ

পাওয়ারম্যান ডুয়াথলনে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন রাকিবুল

ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার রাজধানী পুত্রজায়াতে অনুষ্ঠিত পাওয়ারম্যান ডুয়াথলন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ১৭তম আসরে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন রাকিবুল ইসলাম (৩০)। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি।

রাকিবুল এর আগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। তবে দুবারই কাছাকাছি পৌঁছালেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি তিনি। 

এ বছর ২৯ ও ৩০ অক্টোবর দুইদিনব্যাপী পাওয়ারম্যান ডুয়াথলন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শনিবার ছোটদের প্রতিযোগিতার পর বড়দের প্রতিযোগিতা রোববার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর এই চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়নি।

ছবি: সংগৃহীত

ডুয়াথলন হচ্ছে একইসঙ্গে দুই ইভেন্টের সমন্বয়ে একটি প্রতিযোগিতা। প্রথমে ৫ কিলোমিটার দৌড়, এরপর ৩০ কিলোমিটার সাইকেল চালানো এবং শেষে আবার ৫ কিলোমিটার দৌড়াতে হয়। রাকিবুল ৩০-৩৪ বছরের বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে চ্যাম্পিয়ন হন। প্রতিযোগিতা শেষ করতে তার সময় লাগে ১ ঘণ্টা ২৭ মিনিট ১৪ সেকেন্ড।

এই অ্যামেচার প্রতিযোগিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য এশিয়ার ৩৫টি দেশ থেকে মোট ৪২০০ প্রতিযোগী নিবন্ধন করেন। তাদের মধ্যে ১৩২২ অ্যাথলেট রাকিবুলের ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণ করেন। রাকিবুল সামগ্রিক প্রতিযোগিতায় ১৩২২ জনের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান দখল করেন।

এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সামগ্রিকভাবে দ্বিতীয় স্থানে থাকায় আগামী বছর সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পাওয়ারম্যান ডুয়াথলন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সরাসরি অংশ নেবেন রাকিবুল। তার আগে আর কোনো বাংলাদেশি এই সুযোগ পাননি বলে জানান তিনি।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনুভূতির কথা জানতে চাইলে রাকিবুল বলেন, 'বিদেশের মাটিতে দেশকে সর্বোচ্চ আসনে নিতে পেরে ভালো লাগছে। আর মর্যাদার লড়াইয়ে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়ে গেল। ভবিষ্যতে আরও ভালো করতে চাই। সুযোগ পেলে বাংলাদেশের হয়ে ২০২৩ সাফ গেমসে ডুয়াথলন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে চাই।'

তবে আক্ষেপ নিয়ে তিনি যোগ করেন, 'বাংলাদেশে মাল্টিপল স্পোর্টস যেমন- দৌড়, সাঁতার কিংবা সাইক্লিং খুব একটা জনপ্রিয় নয় বিধায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আমাদের দেশ থেকে খুব কম প্রতিযোগী অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। দেশে বিভিন্ন সরকারি ফেডারেশন, অ্যাসোসিয়েশনে থাকলেও তারা দেশে তেমন কোনো প্রতিযোগিতামূলক ইভেন্টের আয়োজন করে না। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশি অ্যাথলেটদের অনেক ভালো করার সুযোগ থাকলেও সেটা হয়ে উঠছে না।'

'একজন অ্যাথলেট হিসেবে আমি চাই, দেশে সরকারিভাবে এসব খেলাধুলার বড় ইভেন্টের আয়োজন করা হোক। তাতে করে আরও অনেক বেশি খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ তৈরি হবে যারা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় গিয়ে বাংলাদেশকে গৌরবান্বিত করবে,' বলেন রাকিবুল।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার প্রত্যাশার কথাও জানান তিনি, 'পাশাপাশি আন্তর্জাতিক এই সব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা খুবই দরকার। কারণ, আন্তর্জাতিক এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের খরচ অনেক বেশি। এখন পর্যন্ত এসব প্রতিযোগিতায় নিজের খরচে বাংলাদেশ থেকে অ্যাথলেটরা অংশগ্রহণ করেন যা খুবই কঠিন।'

'মালয়েশিয়ার এই প্রতিযোগিতায় আসার জন্য বীকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড আমাকে স্পন্সর করেছে। সব ধরনের সহযোগিতা করেছে। কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ হবে সুইজারল্যান্ডে। সেই ক্ষেত্রে স্পন্সর পাব কিনা জানি না,' যোগ করেন রাকিবুল।

রাকিবুল চলতি বছর জাতীয় সাইক্লিং প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ জেতেন। এর আগে ২০১৬ সালে তিনি দিল্লিতে ট্রায়াথলন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হন। এছাড়া, ২০১৭ সালে ঢাকায় আয়োজিত ঢাকা চ্যালেঞ্জ ডুয়াথলনে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি।

পাওয়ারম্যান ডুয়াথলন এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে পাওয়ারকিডস ও পাওয়ারটিন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে এ বছর যে চার জন শিশু নিজ খরচে অংশগ্রহণ করে, তারা হলো আরওয়ান, অরিত্র (পাওয়ারকিডস) ও নুসাইবা (পাওয়ারটিন)।

Comments

The Daily Star  | English

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

12h ago