ছয়ে মিলে খেলি লুডু
ছোটবেলার সাপলুডু খেলার কথা মনে আছে? কতই না ভয় ছিল সেই শেষ অজগরের পেটে যাবার!
লুডু খেলা ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন খেলাগুলোর মধ্যে একটি। ইতিহাস মতে, এটি ইউরোপীয়দের হাত ধরে ভারতবর্ষে এসেছে। ভারতের পচিঁশি বা পাশা খেলা থেকেই লুডু খেলার উৎপত্তি। এই উপমহাদেশেই এই খেলা অবসরে ঘরে ঘরে খেলা হতো।
ছোটবেলার সেই লুডু খেলা নতুন করে প্রাণ পায় করোনার কঠিন সময়ে। মানুষ লকডাউনের বন্দিজীবনে বিনোদন হিসেবে বেছে নিয়েছিল অনলাইনে লুডু খেলা। ভার্চুয়াল সেই লুডুর আসর জনপ্রিয়ও হয় অনেক।
তবে কখনো কি মনে হয়েছে এই খেলাকে আরেকটু ভিন্ন মাত্রায় নেওয়া যায় কিনা? আর্ট ও ক্রাফট পেইজ আরুনিকার প্রতিষ্ঠাতা অরুণিতা কিন্তু এমনটি ভেবেছেন। অনলাইনে লুডু খেলতে খেলতে তিনি এমন সব থিমের ব্যাপারে ভেবেছেন যা থেকে পরবর্তীতে তিনি তৈরি করেন কাঠের সব নান্দনিক লুডু বোর্ড। সেইসঙ্গে লুডুবোর্ডের নতুন ও ভিন্ন কাঠামোও দিয়েছেন তিনি।
শুধু ৪ জন কেন, ৫ কিংবা ৬ জন মিলে যাতে লুডু খেলা যেতে পারে সেই ভাবনা থেকে অরুণিতা পেন্সিলে আঁকিবুঁকি শুরু করেন। তার এই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেন তার জীবনসঙ্গী, পেশায় তিনি একজন আর্কিটেক্ট। ইঞ্জিনিয়ারের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে কাঠের নতুন ডিজাইনের লুডু বোর্ড তৈরি করেন তিনি।
হ্যারি পটার, গেম অব থ্রোনস, ফ্রেন্ডসের মতো জনপ্রিয় সিনেমা কিংবা টিভি সিরিজের থিমে লুডু বোর্ড তৈরি করে আরুণিকা। পাশাপাশি বোর্ডের ব্যাকসাইডে সাপলুডুও তৈরি করা হয়। গোল চারকোণা সব শেপের লুডু বোর্ডই আছে তাদের।
কাঠের তৈরি লুডু বোর্ডে আরুনিকা সব ধরনের ক্রেতার চাহিদাকেই প্রাধান্য দেয়। কারো প্রয়োজন বড় সাইজের লুডু, কারো পছন্দ ছোট সাইজ আবার কেউ এই লুডু বোর্ড ব্যাগে রাখে ভ্রমণ করতে চান। সব ধরনের লুডু বোর্ড এনেছেন তারা।
অরুণিতা বলেন, 'কাঠের তৈরি বোর্ড গেমসগুলো আগে আমাদের বিদেশ থেকে আনতে হতো। বাংলাদেশে তৈরি হওয়া কাঠের গেমস তেমন খুঁজে পাওয়া যেত না। আরুনিকাই প্রথম সেই উদ্যোগ নেয়।'
তিনি আরও বলেন, 'বাচ্চাদের জন্য আমাদের বিভিন্ন ব্যতিক্রমী থিম রয়েছে। জঙ্গল কিংবা সাগরের তলদেশের থিম। ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী কাস্টোমাইজ লুডু বোর্ডও তৈরি করি আমরা। অনেকে নিজের পরিবারের ছবি দিয়ে কিংবা বন্ধুদের ছবি দিয়েও লুডু বোর্ড বানিয়ে নেয়। কেউ কেউ এসব লুডুবক্স দারুণ সব কাঠের গিফট বক্সে উপহার দেন শৌখিন কারো বিয়ে বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। দেশীয় বিভিন্ন থিমের লুডু বিদেশে শিক্ষকদের জন্য উপহার নিয়ে যান উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। এভাবে আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কেও মানুষ জানতে পারছে।'
Comments