১৪ বছরে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েও শোকস্তব্ধ নীড়

Manon Reja Neer

বয়স মাত্র ১৪ বছর। এই বয়সেই বাঘা বাঘা দাবাড়ুদের পেছনে ফেলে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত শিরোপা জয় করেছেন ফিদে মাস্টার মনন রেজা নীড়। দাবার নতুন এই জাতীয় চ্যাম্পিয়নের তবু আনন্দ করার অবস্থা নেই। গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমানের আকস্মিক মৃত্যু যে তাকে তাড়া করছে।

নীড়ের উঠে আসার পেছনে ভূমিকা আছে জিয়ার। জিয়ার কাছেই দাবার অনুশীলন করেছেন তিনি। জিয়াকে তাই 'স্যার' ডাকতেন এই কিশোর।

চ্যাম্পিয়নশিপ নিশ্চিতের পর রোববার দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়েই নিয়ে আসেন জিয়ার প্রসঙ্গ,  'দুই রাউন্ড বাকি থাকতেই আমার চ্যাম্পিয়নশিপ এক রকম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এখন আমি স্তব্ধ, জিয়া স্যারের মৃত্যুর পর অনুভূতি প্রকাশের কোন ভাষা পাচ্ছি না।'

শুক্রবার খেলতে খেলতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন জিয়া। পুরো দাবা অঙ্গন স্বজন হারার বেদনায় হয় আক্রান্ত। চ্যাম্পিয়ন হয়ে নীড় তাই শিরোপা উৎসর্গ করেছে জিয়াকে। ১৯৮৮ সালে জিয়াও মাত্র ১৪ বছর বয়েসেই জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন।

Manon Reja Neer
জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দাবার বোর্ডে মনন রেজা নীড়

নীড় মনে করেন তাকে জিততে দেখলে ভীষণ খুশি হতেন জিয়া,  'এই চ্যাম্পিয়নশিপে জিয়া স্যার আমার নিটকবর্তী প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। আমি কেবল এক পয়েন্টে এগিয়ে ছিলাম। আমার জয় দেখে তিনি খুশি হতেন কারণ তিনি আমাকে ১১ দিন ট্রেনিং করিয়েছিলেন।'

কিশোর জিয়া দেশের ১৬তম দাবাড়ু হিসেবে জিতলেন জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। ১৪ বছর বয়েসে জিতলেও গড়তে পারেননি রেকর্ড। মাত্র ১৩ বছর বয়েসে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড এখনো নিয়াজ মোরশেদের দখলে।

১৩ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সবাইকে এবার চমকে দেন নীড়। তিন গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ, জিয়া ও এনামুল হোসেন রাজিবের সঙ্গে করেন ড্র।

গত এপ্রিলে ব্যাংককে দাবা ক্লাব ওপেনে ৬.৫ পয়েন্ট অর্জন করেন নীড়ই। এই পারফরম্যান্স তাকে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো করতে সাহায্য করেছে বলে মনে করেন তিনি,  'জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার শুরু থেকেই আমার লক্ষ্য ছিলো চ্যাম্পিয়ন হওয়া। থাইল্যান্ডে ভালো পারফর্ম করা আমাকে সাহায্য করেছে।'  ব্যাংকক দাবা ক্লাব ওপেনে প্রথম আন্তর্জাতিক মাস্টার নর্ম পান নীড়।

থাইল্যান্ডে টুর্নামেন্ট খেলতে যেতে বিমান টিকেট দিয়েছিলেন ক্রিকেট বোর্ড পরিচালক তানভীর আহমেদ টিটু, সেজন্য তাকে ধন্যবাদ দেন তিনি। রোববার দুটি টুর্নামেন্ট খেলতে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার আগে দ্য ডেইলি স্টারকে ক্ষুদে দাবাড়ু জানিয়ে যান বড় স্বপ্নের কথা, 'আমার মূল লক্ষ্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া। যেটা কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। আমার পরের টার্গেট দুই বছরের মধ্যে দেশের ৬ষ্ঠ গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া। এজন্য আমার অর্থনৈতিক সাহায্য দরকার, স্পন্সর দরকার।'

Comments

The Daily Star  | English

Can't afford another lost decade for education

Whenever the issue of education surfaces in Bangladesh, policymakers across the political spectrum tend to strike a familiar chord. "Education is our top priority," they harp

3h ago