যা বলেছিলেন মাশচেরানো, তাই প্রমাণিত হলো

'ক্লাব বিশ্বকাপ হবে অত্যন্ত উচ্চমানের প্রতিযোগিতা। স্পষ্টভাবে বলি, আমরা সেই মানে নেই। এটা স্বীকার করতেই দোষ কোথায়?' ক্লাব বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে এমন রূঢ় বাস্তবতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাশচেরানো। তার এই মন্তব্য কিছু সমর্থকের শুনতে ভালো লাগেনি।

অনেকে ভেবেছিলেন এটা বুঝি নিজের উপর থেকে চাপ সরানোর কৌশল, কিন্তু আসলে মাশচেরানো কেবল নিজের দলের বাস্তবতা তুলে ধরেছিলেন। আর তা প্রথম ম্যাচেই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে মিশরের আল-আহলি। মাঝারী মানের এই দলের বিপক্ষেই গোলশূন্য ড্র।

ইন্টার মায়ামি মূলত ভরসা করেছিল লিওনেল মেসির একক নৈপুণ্য, সের্হিও বুস্কেতসের লং পাস এবং লুইস সুয়ারেজের গোলমেশিনে। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এই সাবেক বার্সা তারকারা বয়সের ভারে ক্লান্ত, আর সময়ের সঙ্গে লড়াইয়ে তারা আর আগের মতো ধারালো নন।

অন্যদিকে, আল-আহলি শুরুতেই তাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় আশুরকে হারালেও প্রথমার্ধেই গোল করার মতো একাধিক সহজ সুযোগ তৈরি করে ফেলে। তবে রিভেইরোর দলের গোলের সামনে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়ান ইন্টার মায়ামির গোলরক্ষক অস্কার উস্তারি। যিনি ত্রেজেগের একটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে প্রথমার্ধে বাঁচিয়ে রাখেন দলকে।

মায়ামির সবচেয়ে বড় সমস্যা তাদের রক্ষণভাগে। ফ্যালকন ও আভিলেসের সেন্টার-ব্যাক জুটি বেশ দুর্বল এবং অগোছালো। তারা মাঝমাঠে বারবার বল হারিয়ে প্রতিপক্ষকে সুযোগ দিয়েছে, যা বড় দল হলে ভয়াবহ ফল এনে দিতে পারত।

মাত্র কয়েকটি পাসেই আল-আহলি উস্তারির সামনে চলে এসেছে। ৩০ মিনিটের মধ্যেই দুটি বাধ্যতামূলক ফাউলের কারণে আভিলেস ও রেডোন্ডো হলুদ কার্ড দেখেন। এরমধ্যে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দিয়ে আভিলেস মাঠ ছাড়তেই পারতেন, কারণ তার ফাউলটি ছিল স্পষ্ট ও আঘাতমূলক। ৪২ মিনিটে সেগোভিয়ার একটি ভুল থেকে পাওয়া পেনাল্টিই ছিল প্রথমার্ধের সবচেয়ে বড় বিপদ।

দ্বিতীয়ার্ধে লিওনেল মেসি কিছুটা এগিয়ে এলেও, দল সামগ্রিকভাবে রক্ষণের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। যদিও কিছুটা সামাল দিতে পেরেছিল, কিন্তু সঠিক সমাধান ছিল না। শেষদিকে দুই দলই ম্যাচ জেতার সুযোগ তৈরি করেছিল—ইন্টার মায়ামি সেট পিস ও মেসির জাদুতে, আর আল-আহলি দ্রুত পাল্টা আক্রমণে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হার্ড রক স্টেডিয়ামে স্কোরলাইন গোলশূন্যই থেকে গেল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মাশচেরানো জানান, ক্লাবের কাছে নতুন খেলোয়াড় চেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু তারা কাউকে নিয়ে আসেনি। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে—যদি খেলোয়াড় আসতও, তা কি সত্যিই দলের চেহারা বদলাত?

এমএলএস কভার করা কিছু সাংবাদিকের মতে, এই মৌসুমে মায়ামির স্কোয়াড গত মৌসুমের চেয়ে দুর্বল। 'তাতা' মার্তিনোর অধীনে দল যেমন ছিল, এবার তেমন নয়। বরং ক্লাব এখন বেশি মনোযোগ দিচ্ছে ২০২৬ সালের নতুন মেগা স্টেডিয়াম 'মায়ামি ফ্রিডম পার্ক' নির্মাণ ও 'শো' উপস্থাপনের দিকে — কিছু জয় করার মতো স্কোয়াড গঠনে নয়।

শেষ পর্যন্ত মাশচেরানো বাস্তব কথা বলেছেন—এবং ক্লাব বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই তা প্রমাণিত হয়েছে। দুর্বল স্কোয়াড, রক্ষণের ভাঙন এবং বয়সের ভারে ক্লান্ত সুপারস্টারদের নিয়ে সামনের দিনগুলো যে কঠিন হবে, সে কথা আগেই বলে দিয়েছেন 'লিটল বস'।

Comments

The Daily Star  | English
Exporters to get Tk 108.5 for a dollar from Aug 1

Taka gains against dollar after several years

Taka gains ground as dollar influx rises, strengthening currency after years

2h ago