হামজা-সোহেলের গোলে ভুটানকে হারাল বাংলাদেশ

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অনেকটা স্বপ্নের মতোই ঘরের মাঠে অভিষেক হলো হামজা দেওয়া চৌধুরীর। অভিষেক ম্যাচেই পেলেন গোল। আর দর্শকদের জন্যও ছিল জাদুকরী এক সন্ধ্যা। কারণ হামজার গোলের যোগানদাতা ছিলেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। সব মিলিয়ে দারুণ এক দিন দেশের ফুটবলের জন্য। 

বুধবার ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিফা প্রীতি ম্যাচে ভুটানকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের হয়ে গোল দুটি করেছেন হামজা ও সোহেল।

প্রথমার্ধের প্রায় শুরুতেই গোল পেয়ে যান হামজা। আর দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সোহেল রানার দুর্দান্ত এক গোল। তাতে ভুটানকে সহজেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে প্রস্তুতিটা ভালোভাবেই সেরে নিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। 

প্রায় সাড়ে চার বছর পর জাতীয় স্টেডিয়ামে নেমে দাপুটে ফুটবলই খেলে বাংলাদেশ। যদিও দল গোল পেয়েছে দুটি। তবে ফরোয়ার্ডরা আরও নিখুঁত হলে স্কোরলাইন হতে পারতো ভিন্ন। অন্যদিকে ম্যাচের অধিকাংশ সময় দাপট দেখালেও শেষদিকে পরীক্ষা দিয়েছে গোলরক্ষক মিতুল মারমাকে। যদিও তা ভালোভাবেই উতরেছেন তিনি। 

হামজার ঘরের মাঠে অভিষেকের ম্যাচে অভিষেক হয়েছে আরেক প্রবাসী খেলোয়াড় ফাহামেদুল ইসলামেরও। অভিষেকে দারুণ খেলেছেন তিনিও। বেশ কয়েকটি দারুণ ক্রস দিয়েছেন, শটও নিয়েছেন। তবে নজর কেড়েছেন গতি আর ক্ষিপ্রতায়।  

ষষ্ঠ মিনিটে জামাল কর্নার থেকে অসাধারণ এক ক্রস বাড়ান, যেটিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন হামজা। ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার দারুণ টাইমিংয়ে হেডে বলের সঙ্গে নিখুঁত সংযোগ ঘটান, যা ভুটান গোলরক্ষকের বাড়ানো হাত ছুঁয়ে জালে জড়িয়ে যায়। সেই গোলেই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

২১তম মিনিটে তারিক কাজির ভুলে গোল হজম করতে পারতো বাংলাদেশ। কিংমা ওয়াংচুককে আটকাতে গিয়ে তপু বর্মন প্রথম দফায় না পারলেও দ্বিতীয় দফায় বল ক্লিয়ার করলে বেঁচে যায় তারা।

নয় মিনিট পর রাকিবের পাস থেকে কাজেম বল বাড়ান ফাহামিদুলকে। তার কোণাকোণি ঠেকান ভুটান গোলরক্ষক। একটু পর ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন জামালও। কিন্তু লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি তিনি।

৩৯তম মিনিটে হামজার বাড়ানো বল থেকে তাজের ক্রসে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার ঠিকভাবে ক্লিয়ার করতে না পারলে ফাঁকায় বল পেয়ে যান জামাল। ভালো শটও নেন। কিন্তু তার ডিফেন্ডার এসি গাইয়েলতেসেনের গায়ে লেগে ব্লকড হলে ব্যবধানে বাড়েনি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তিনটি পরিবর্তন আনেন কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা। সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে হামজাকে তরাতাজা রাখেই হয়তো তাকে নামিয়ে ফেলেন। সঙ্গে কাজেম ও জামালকে তুলে নেন তিনি। তাদের পরিবর্তে মাঠে নামান মোহাম্মদ ইব্রাহিম, শেখ মোরসালিন ও মোহাম্মদ হৃদয়কে।

তবে হামজাকে ছাড়াও গোল পেতে মাত্র চার মিনিট সময় নেয় বাংলাদেশ। ৪৯তম মিনিটে প্রতিপক্ষ ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে বা পায়ের বুলেট গতির শটে লক্ষ্যভেদ করেন সোহেল। তবে পরের মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি রাকিব।

৫৯তম মিনিটে ফাহামেদুল ও রাকিবকে তুলে ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ও আল আমিনকে মাঠে নামান কাবরেরা। তাতে শীর্ষ অপেক্ষার পর অভিষেক হয় আল আমিনের। গোল না পেলেও অল্প সময়ে নিজের সামর্থ্য দেখিয়েছেন দারুণ পারফরম্যান্স করে।

৭৪তম মিনিটে ইয়েসির হেড অল্পের লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচের শেষ দিকে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন ইব্রাহিম পারেননি। তার শট সহজেই আটকান ভুটান গোলরক্ষক গাইয়েলতসেন জাংপো।

ম্যাচের যোগ করা সময়ে দারুণ এক সেভে জাল অক্ষত রাখেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। জিগমে নামগায়েলের শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকান তিনি। জিগমের ফিরতি শট বাইরে গেলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।  

Comments

The Daily Star  | English

Familiar Dhaka in an unfamiliar mood

The familiar city now appears in an unfamiliar form—no traffic jams, no honking, no packed footpaths

3h ago