অবশেষে অ্যানফিল্ডে লিগ শিরোপা উদযাপন লিভারপুল সমর্থকদের

৩০ বছরের অপেক্ষার পর পাঁচ বছর আগে যখন প্রথম প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জিতে লিভারপুল তখন কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে অ্যানফিল্ডে উদযাপন করতে না পারেননি সমর্থকরা। এবারে আর কোনো সুযোগ নষ্ট করেনি। রোববার ফের প্রিমিয়ার লিগ বিজয়ের আনন্দে উল্লাসে ফেটে পড়ে তারা।

টটেনহ্যাম হটস্পারকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ২০টি ইংলিশ শীর্ষ লিগ শিরোপার রেকর্ড স্পর্শ করে লিভারপুল। আসল উচ্ছ্বাস শুরু হয় ২৪তম মিনিটে, যখন অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার দুর্দান্ত এক শটে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন। রোদ ঝলমলে অ্যানফিল্ডের গ্যালারি তখন থেকেই ম্যাচ শেষ হওয়া পর্যন্ত একটানা গানে গানে মুখরিত ছিল।

'সমর্থকদের সামনে এই প্রিমিয়ার লিগ জেতা সত্যিই বিশেষ কিছু, এক অবিশ্বাস্য অনুভূতি। পাঁচ বছর আগের চেয়ে এটা নিঃসন্দেহে অনেক ভালো। পাঁচ বছর পর আবার এটা করতে পারা সত্যিই অনন্য,' বলেন লিভারপুলের প্রাণভোমরা মোহামেদ সালাহ।

১৯৯০ সালে লিভারপুলের শেষ শীর্ষ লিগ জয়ী দলের ম্যানেজার কিংবদন্তি কেনি ডালগ্লিশও রোববার অ্যানফিল্ডের উৎসবে অংশ নেন। দ্বিতীয়ার্ধে একাধিকবার "চ্যাম্পিয়ন!" ধ্বনিতে মাঠ গর্জে ওঠে। এমনকি একসময় ম্যাচ থামিয়ে দিতে হয়, যখন মাঠের মধ্যে পড়ে থাকা একটি ফুটো প্রিমিয়ার লিগ ট্রফির বেলুন সরিয়ে নেওয়া হয়।

শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথেই লিভারপুলের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা টাচলাইনে থেকে মাঠে দৌড়ে এসে "ওয়ান কিস ইজ অল ইট টেকস" গানের তালে নাচে মেতে ওঠেন। এরপর তারা এক কাতারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে 'দ্য কপ'-এর সামনে দাঁড়িয়ে, অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক বলটি এক বাহুতে জড়িয়ে, সম্মিলিত কণ্ঠে গেয়ে ওঠেন "ইউ'ল নেভার ওয়াক অ্যালোন"। আবেগে স্টেডিয়ামের কর্মীরা পর্যন্ত চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।

'আমি চেয়েছিলাম, সমর্থকরা এখানে থাকুক — বিশ্বজুড়ে সব লিভারপুল ভক্তদের জন্য, এখানকার জন্য, আর আমাদের নিজেদের জন্যও," বলেন ফন ডাইক, যিনি ২০২০ সালের শিরোপাজয়ী দলেও ছিলেন।

ইউর্গেন ক্লপের অধীনে ২০২০ সালে লিভারপুল ৩০ বছর পর প্রথমবারের মতো শীর্ষস্থানীয় লিগ শিরোপা জিতেছিল। তবে তখন দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে শিরোপা ওঠানোয় অনেকেই মনে করেছিলেন, সেই উদযাপন যেন অসম্পূর্ণ ছিল।

'সমর্থকদের উপস্থিতিই একে বিশেষ করে তোলে। পাঁচ বছর আগে লিভারপুল লিগ জিতেছিল — এটা অবশ্যই দারুণ অর্জন ছিল। কিন্তু তখন সমর্থকরা ছিল না। তাই এবার তাদের উপস্থিতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তা অনুভব করা গেছে। আজ খেলোয়াড়রা, এমনকি সমর্থকরাও অসাধারণ কাজ করেছে,' বলেন বর্তমান ম্যানেজার আর্নে স্লট।

অ্যানফিল্ডে ইউর্গেন ক্লপের শেষ ম্যাচে বিদায়ের আগে ক্লপ নিজেই ভক্তদের অনুরোধ করেন স্লটকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করতে। স্লটও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রবিবার মাইক হাতে 'ইউর্গেন ক্লপ! না-না-না-না-না!' গান গেয়ে পুরো স্টেডিয়াম মাতিয়ে দেন।

যারা স্টেডিয়ামের ভেতরে ঢোকার সুযোগ পাননি, তারা বাইরে থেকেই উদযাপনে মাতেন। ম্যাচ শেষ হওয়ার আগেই আতশবাজি ও রঙিন ধোঁয়ায় আকাশ রাঙিয়ে দেন, আর রাতভর চলতে থাকা উৎসবে অ্যানফিল্ডের চারপাশ উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।

Comments

The Daily Star  | English

Tajia procession marks holy Ashura in Dhaka amid tight security

Crowds began gathering at the site from the early hours, with many attending alongside their families and children

2h ago