‘অজেয়’ ব্রাজিলকে ‘অচেনা’ হারের তেতো অভিজ্ঞতা দিল আর্জেন্টিনা
বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে নিজেদের মাঠে খেলা মানেই ব্রাজিল 'অজেয়'। এতদিন ধরে এটাই হয়ে আসছিল। অপ্রতিরোধ্য কায়দায় ছুটছিল সেলেসাওরা। এবার উত্তাপ ছড়ানো ঘটনাবহুল এক লড়াইয়ে সেই ধারায় পড়ল ছেদ। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সফলতার নিরেট দুর্গে ফাটল ধরিয়ে দিল আর্জেন্টিনা।
বুধবার সকালে বিখ্যাত মারকানা স্টেডিয়ামে ব্রাজিল পেয়েছে 'অচেনা' হারের তেতো অভিজ্ঞতা। নিকোলাস ওতামেন্দির লক্ষ্যভেদে তাদেরকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপের দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইয়ে ঘরের মাঠে এটাই ব্রাজিলের প্রথম হার। এর আগে একটানা ৬৪ ম্যাচ তারা ছিল অপরাজিত! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন— ৬৪ ম্যাচ।
একমাত্র দল হিসেবে সবকটি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়ার রেকর্ড ব্রাজিলের দখলে। তারা ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরের সবচেয়ে সফলতম দলও। তাদের নামের সঙ্গে শোভা পায় রেকর্ড পাঁচটি শিরোপা। তবে বিশ্বকাপের প্রথম চারটি আসরে অংশ নেওয়ার জন্য তাদেরকে বাছাই পর্ব খেলতে হয়নি।
১৯৩০, ১৯৩৪, ১৯৩৮ ও ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিল সরাসরি জায়গা করে নিয়েছিল। এর মধ্যে ১৯৫০ সালে তারা ছিল আয়োজক। আর ১৯৩০ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের অভিষেক আসরের জন্য কোনো বাছাই প্রক্রিয়াই ছিল না। ফিফার আমন্ত্রণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাড়া দেওয়া দলগুলো খেলেছিল বিশ্বকাপ।
১৯৫৪ সালের বিশ্বকাপে ঠাঁই পেতে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলকে বাছাইয়ে অংশ নিতে হয়। এর আগে অবশ্য নানা কারণে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিতও হয়নি। তাছাড়া, প্রতিবারই একাধিক দল নাম প্রত্যাহার করে নিত। ফলে ওই অঞ্চলের অন্য দলগুলোকে এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হতো না।
১৯৫৪ সালেরই মার্চে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচটি খেলেছিল ব্রাজিল। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল চিলি। সেই থেকে শুরু। এরপর পেরিয়ে গেছে ৬৯ বছর। নিজেদের আঙিনায় একটি-দুটি করে টানা ৬৪ ম্যাচ না হারার পর শেষ হলো সেলেসাওদের অপরাজিত থাকার গৌরবময় যাত্রা। সেটাও আবার ঐতিহাসিক মারাকানাতে, 'চিরশত্রু' আর্জেন্টিনার বিপক্ষে।
এখানেই শেষ নয়। ২২ বছর পর টানা তিন ম্যাচ হারল ব্রাজিল। আর্জেন্টিনার কাছে পরাস্ত হওয়ার আগে বাছাইয়ে কলম্বিয়া ও উরুগুয়ের কাছে হেরেছিল ফার্নান্দো দিনিজের দল। ২০০১ সালে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে অবশ্য টানা চার ম্যাচ হেরেছিল সেলেসাওরা। তাদের প্রতিপক্ষ ছিল যথাক্রমে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, উরুগুয়ে ও মেক্সিকো।
Comments