ক্ষুব্ধ সাফ জয়ী নারী ফুটবলার

‘দেশে মেয়েদের ফুটবলের আর কিছু আছে?’

'মেয়েরা কেন ফুটবল খেলবে? তাদের জন্য এখানে কিছু আছে?' সিরাত জাহান স্বপ্নার আকস্মিক অবসর নিয়ে এমন প্রতিক্রিয়া দিলেন সাফ জয়ী নারী দলের আরেক সদস্য সাজেদা খাতুন।

শুক্রবার মাত্র ২২ বছর বয়সে ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দেন সাফ জয়ী দলের ফরোয়ার্ড স্বপ্না। কাউকে অভিযোগ না জানালেও তার এভাবে ফুটবল ছেড়ে দেওয়া বাংলাদেশের ফুটবলে তৈরি করেছে নতুন বিতর্ক।

এর আগে ক্যাম্প থেকে বাদ পড়ার পর খেলে ছেড়ে দেন আনুচিং মগিনি আর সাজেদা। স্বপ্নার অবসরে সাফজয়ী দলের তিনজন ফুটবলার অসময়ে ছেড়ে দিলেন ফুটবল। স্বপ্নার অবসরের দিন নারী ফুটবলের কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনও দেন পদত্যাগের খবর।

সাফ চ্যাম্পিয়ন হলেও নারী ফুটবলারদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দিতে পারেনি বাফুফে, মাঠে আনতে পারেনি খেলা। সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা আর আগামী নিয়ে অনিশ্চয়তায় ঘিরে ধরেছে ফুটবলারদের।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপে সাজেদা ক্ষোভের স্বরে বলেন, বাংলাদেশে নারী ফুটবল নিয়ে আর কোন আশা নেই,  'আমাদের দেশে নারী ফুটবলের কিছু আছে? আমি জিজ্ঞেস করতে চাই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নারী ফুটবলারদের কিছু দিয়েছে। একটু অপেক্ষা করেন আরও অনেক মেয়েরা খেলা ছেড়ে দেবে। এখানে কোন আশা নাই।'

সাফ জিতে আসার পর বিপুল সংবর্ধনা পান নারী ফুটবলাররা। বিভিন্ন জায়গা থেকে পান পুরস্কারের ঘোষণা। অন্য অনেকে পুরস্কৃত করলেও বাফুফে থেকে অবহেলা পাওয়ার কথা জানান তিনি,   'ফেডারেশন কিছু দিছে নাকি? ঢাকা ব্যাংক দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের অনেক কিছু দিছেন। কিন্তু ফেডারেশন তো কিছু দেয়নি।'

সাফ চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের সুযোগ থাকার পরও অর্থের অভাব দেখিয়ে অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলতে পাঠায়নি বাফুফে। মেয়েদের নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবলের ঘরোয়া আসর আয়োজনের কথা বলা হলেও তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়।

মাঠে খেলা না থাকলে মেয়েরা কি করবে, প্রশ্ন সাজেদার,  'আমরা কেন ফুটবল খেলি…সারা জীবন শুধু ক্যাম্পই করব? সাফ জেতার পর ফুটবলারদের জন্য কিছুই আয়োজন করা হয়নি। আছি আমরা ফুটবলের জন্য, সেই ফুটবল খেলাই তো হয় না। অলিম্পিক বাছাই পর্বে খেলার সুযোগ ছিল। ফেডারেশনের অবহেলায় সেটাও হয়নি। তাদের জিজ্ঞেস করে দেখেন খালি এই সমস্যা, ওই সমস্যা বলবে। তাহলে কেন মেয়েরা আগামীতে ফুটবল খেলবে?'

'আমি সাত-আট  বছর ধরে ফুটবল খেলেছি। অনেক সাফল্যের সঙ্গী ছিলাম। আমি কেমন আমি জানি না, আপনারা বলতে পারবেন। কিন্তু এই যে স্বপ্না আপা চলে গেছে, দ্বিতীয় আরেকটা স্বপ্না আসবে না।'

'মেয়েদের ফুটবলের অর্জন হলে সেটা মেয়েদের কঠোর পরিশ্রমেই হয়েছে।'

স্বপ্নার অবসরের দিন বিদায়ের কথা জানান কোচ ছোটন। সবাইকে আগলা রাখা এই কোচের জন্যও হাহাকার ঝরছে সাজেদার,

'এটা খুব দুঃখজনক স্যার চলে যাচ্ছেন। তার মতন আরেকজন মানুষ পাবেন না।'

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

8h ago