যে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বেরিয়ে গেলেন সালাউদ্দিন

Kazi Salauddin
ফাইল ছবি

প্রশ্ন-উত্তরের পালা চলছিল। নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সাংবাদিকদের জবাব দিচ্ছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। দুর্নীতির দায়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদককে ফিফার নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য লজ্জার কিনা, এমন প্রশ্ন করতেই আর বসে থাকলেন না তিনি। কোন জবাব না দিয়ে সম্মেলন কক্ষ ছেড়ে যান এক সময়ের তারকা এই ফুটবলার।

শুক্রবার ফিফা বিবৃতিতে জানায়  তাদের দেওয়া ফান্ডের অপব্যবহার ও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন আবু নাঈম সোহাগ। যিনি দীর্ঘদিন ধরে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক। পরে ৫১ পৃষ্ঠার বিস্তারিত প্রতিবেদনও প্রকাশ করে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। যাতে স্পষ্টভাবে তারা দিয়েছে অনিয়মের প্রমাণ।

শনিবার দুপুরে ফেডারেশন ভবনে নিজেদের ব্যাখ্যা দিতে হাজির হন সালাউদ্দিন। ফিফার পাঠানো নথিপত্র এখনো পড়ে শেষ করতে পারেননি বলে জানান তিনি,  'আজকে আমরা সবাই একসাথে হয়েছি একটা দুঃসংবাদে, খারাপ সংবাদে। বাংলাদেশের ফুটবল ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। আপনারা যেমন গতকাল ডকুমেন্ট পেয়েছেন। আমিও গতকালই জানতে পেরেছি।  গতকাল পড়েছি,  আজকেও ডকুমেন্টস পড়েছি তবে শেষ করতে পারি নাই। তার বিরুদ্ধে যা যা করার ছিল যেমন ব্যান করা, এটা আপনারা দেখেছেন সেটা হয়ে গেছে।'

'আমি একটা জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছিলাম। তবে আমাদের ভাইস প্রেসিডেন্টদের মধ্যে দুইজন ভাইস প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে আছেন। তাই আমি বৈঠক ডাকতে পারিনি। ওনারা কাল পরশু দেশে এসে পৌছাবেন। সকলে এসে পৌছালে পরশু দিন আমরা বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত নেব।  এরপর আপনাদের জানিয়ে দেব পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে।'

এই ব্যাপারে ছুটি পার করে অফিস খোলার পর ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গেও কথা বলার কথা জানান সালাউদ্দিন,  'আপাতত ফিফা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমরা সেখানেই আছি। বাদবাকি বাফুফে কি সিদ্ধান্ত নেবে তার জন্য সকলকে দুদিন অপেক্ষা করতে হবে। সোমবার দিন ফিফা খুলবে এরপর আমি ফিফার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলবো। এরপর আমরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিব আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে।'

তদন্তের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কদিন আগে সুইজারল্যান্ডে ডাকা হয়েছিল সোহাগকে। তখনই সালাউদ্দিনেরও জানার কথা কি হতে চলেছে। যদিও বিস্তারিত জানতেন না বলে জানিয়েছেন তিনি,  'ওরা যখন জুরিখে গেছিলো তখন জানি যে একটা ইয়ে চলছে....। তখনও অফিশিয়ালি আমাকে কেউ জানায়নি। এখনও অফিশিয়ালি আমি ফিফা থেকে কোনও চিঠি পাই নাই।'

ফিফার এথিক্স কমিটির নেওয়া সিদ্ধান্ত তার কাছে চমকের আবার চমক না, এরকম একটা অস্পষ্ট কথা বলে নিষিদ্ধ সোহাগ ক্রীড়া আদলতে যাবেন বলে তথ্য দেন সালাউদ্দিন, 'এথিক্স কমিটির যে সিদ্ধান্ত নেয় হয়েছে এটা নিয়ে আমি সোহগের সঙ্গে কথা বলেছি গতকাল রাতে। সে আমাকে বলেছে, এথিক্স কমিটির যে সিদ্ধান্ত  সেটা তার উপর অবিচার করা  হয়েছে বলে সে (সোহাগ) মনে করে। এবং এটা নিয়ে কোর্ট অব অরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে যাবে বলে আমাকে জানিয়েছে।'

ফিফার প্রতিবেদনে আর্থিক অনিয়মের কথা বলা হলেও বাফুফে সভাপতি সেটা মানতেও নারাজ, 'ওরা কিন্তু বলে নাই আর্থিক অনিয়ম। ফিফার রিপোর্টে আর্থিক অনিয়ম বলা হয়নি। ওরা কোড অব এথিক্স এবং রেসপনসিবিলিটি নিয়ে বলেছে। যাই বলা হয়েছে সবই এখানে আসবে এখানে লুকানোর কিছু নাই। তবে কিছু বলার আগে আমার সকলের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমার সব ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং সিনিয়র মেম্বারদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং সিদ্ধান্ত যেটা হবে সেটাই আমি সকলকে জানাবো।'

এরপরই প্রশ্ন ছিল, এই পরিস্থিতি দেশের ফুটবলের জন্য লজ্জার কিনা, এরপর 'ধন্যবাদ' বলে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে চলে যান এক সময়ের কিংবদন্তি এই তারকা।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

3h ago