নির্বাচন, সংস্কার বিসিবি সভাপতির অগ্রাধিকারে নেই

aminul islam bulbul

অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে ফারুক আহমেদের জায়গায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হয়েছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ধারণা করা হয়েছিল যে তার প্রধান কাজ হবে বিসিবি সংবিধানে সংস্কার আনা এবং অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা। তবে বোর্ড পরিচালকদের নিয়ে প্রথম সভায় সংস্কার বা নির্বাচন নিয়ে কোন কথা হয়নি তার।

শুক্রবার বিসিবি সভাপতি হয়ে  প্রথম সংবাদ সম্মেলনে আসেন আমিনুল। অন্যান্য সভাপতিরা তাদের পরিচিতির সময় যা বলেছিলেন তার থেকে মৌলিকভাবে ভিন্ন কিছু প্রকাশ করেননি তিনি।

তবে, শনিবার তিনি একটি আনুষ্ঠানিক বোর্ড সভা করেন এবং সেখানে অগ্রাধিকারের তালিকা নির্ধারণ করেন। সেই তালিকায় নির্বাচন, সংবিধানে পরিবর্তন বা বোর্ডের কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মতো বিষয়গুলো ছিল না।

সভাপতি হিসেবে তার প্রথম দিনে তিনি বলেছিলেন যে তিনি বিসিবি সভাপতি হিসেবে 'কুইক টি-টোয়েন্টি ইনিংস' খেলতে চান, কিন্তু তিনি নিজের বক্তব্যকেই পরস্পর বিরোধী করে বলেছিলেন, তিনি কেবল তিন মাসের জন্য এখানে আসেননি।

রোববার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সঙ্গে দেখা করেন আমিনুল। সেখান থেকে পরে আসেন সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে। জানান ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপেও নির্বাচনের ইস্যু ছিলো না, 'আমরা আমাদের কার্য পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছি। নির্বাচন নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি।'

'দায়িত্ব নেওয়ার এখনো ৪৮ ঘণ্টাও হয়নি। এই বিষয়ে কথা বলতে হলে আমাদের আরও কিছু তথ্য দরকার।'

তার মনোযোগ ছিল ক্রিকেট প্রসারে সহায়ক পাইলট প্রকল্পগুলিতে। কিন্তু একটি সংক্ষিপ্ত 'টি-টোয়েন্টি ইনিংস', যেমনটা তিনি বর্ণনা করেছেন, তা কেবল প্রকল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না – এর মধ্যে একটি ন্যায্য নির্বাচন কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, কখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বোর্ডের কার্যক্রমে সততা ও ন্যায্যতা কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে, সে বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।

তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটে বিকেন্দ্রীকরণকে তার দৃষ্টিভঙ্গির অংশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, 'এখানে আমরা তিনটি কাজ... আমরা বলছি যে ট্রিপল সেঞ্চুরি করব। শতভাগ ট্রাস্ট, শতভাগ প্রোগ্রাম ও শতভাগ রিচ। বাংলাদেশের শতভাগ জায়গায় আমরা পৌঁছাব, আমাদের আস্থা থাকবে, আমাদের প্রোগ্রাম থাকবে।'

'এই ট্রিপল সেঞ্চুরি করার জন্য ক্রিকেট বোর্ড তিনটি প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছে। আমরা স্পিরিট অব ক্রিকেট আপগ্রেড করব। দ্বিতীয়ত, সবার জন্য হাই পারফরম্যান্স। শুধু ক্রিকেটার নয়, যারা বোর্ডের কর্মকর্তা আছে, তাদের কাজও যেন হাই পারফর্মিং হয়। তিন নম্বর হচ্ছে, ক্রিকেটটা সারা দেশব্যাপী কানেক্ট করব।'

'গতকাল (শনিবার) বোর্ড সভায় আমরা একটা তালিকা করেছি যা করতে চাই। সবারই নিজ নিজ দায়িত্ব আছে। তাদেরকে বলা হয়েছে ৩০ জুনের মধ্যে তাদের পরিকল্পনা নিয়ে আসতে।'

তিনি যে প্রোগ্রামগুলোর কথা বলেছেন এবং পরিকল্পনা করেছেন, সেগুলো  হাই পারফরম্যান্স এবং বিকেন্দ্রীকরণ সম্পর্কিত। আঞ্চলিক ক্রিকেটকে বাস্তবে রূপ দিতে সাংবিধানিক পরিবর্তন প্রয়োজন হতে পারে, যেখানে বোর্ডের কাঠামোতে আরও মৌলিক সমস্যা এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে। বোর্ডের ভেতরের কিছু মহলের বিরোধিতার কারণে বাংলাদেশে ক্রিকেটে বিকেন্দ্রীকরণ কার্যকর করা কঠিন হয়ে আছে।

গতকাল বুলবুল বলেন, 'এটা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের বিষয় নয় - আমরা ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাই।'

তবে, আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা বছরের পর বছর ধরে যে অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধের মুখোমুখি হয়েছে, বোর্ড তা কাটিয়ে উঠতে পারবে কিনা জানতে চাইলে তিনি আবারও তৃণমূল ক্রিকেটের দিকে মোড় নেন, 'যেহেতু এই [বিকেন্দ্রীকরণ] একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন। দরকার হলে আমরা কঠোর সিদ্ধান্ত নেব – তবে এটি সবার সমর্থনে হওয়া উচিত। যদি আমরা প্রতিরোধের মুখোমুখি হই, তাহলে আমরা ক্রিকেটের মাধ্যমে প্রচার শুরু করব এবং তারপর আঞ্চলিক কেন্দ্র স্থাপন করব। বর্তমানে, আমাদের মনোযোগ 'কানেক্ট অ্যান্ড গ্রো' প্রোগ্রামের উপর। আমরা আমাদের পরিচালকদের মাধ্যমে ক্রিকেটকে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে যাব। তবে এটি আমলাতান্ত্রিক উপায়ে করা হবে না - আমরা এটি খুব সহজ, ক্রিকেট-কেন্দ্রিক উপায়ে করব।'

যে বোর্ড সাংগঠনিক কার্যকারিতা কাজ না করায় ফারুককে অব্যাহতি দিয়েছে, সেই বোর্ডের জন্য কোচ বা ক্রিকেটার এবং তৃণমূল ক্রিকেটের উন্নয়ন তাৎক্ষণিক বিষয় নয়। যখন বিকেন্দ্রীকরণ বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কার্যকর করা যায়নি, এই অবস্থায় মনে হচ্ছে বুলবুল এমন সব শক্তির গভীরে প্রবেশ করছেন যার জন্য তিন মাস যথেষ্ট সময় নয়।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh trade deficit July-August FY25

Trade deficit narrows 2.6% in July-April

The country’s trade deficit narrowed by 2.60 percent in the first ten months of the current fiscal year compared to the same period a year ago, thanks to a rise in export earnings coupled with subdued imports..During the July-April period of fiscal year (FY) 2024-25, the trade gap was $18.

5h ago