ইনিংস ব্যবধানে জিতেই বাংলাদেশের প্রতিশোধ

সিলেট টেস্টে নিজেদের প্রত্যাশা মতো পারফরম্যান্স করতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই পিছিয়ে থেকে সেই টেস্টে হেরে বসে টাইগাররা। সেই হারের প্রতিশোধ চট্টগ্রামে পরের টেস্টেই নিলো বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

সাগরিকায় বুধবার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনে এসে জিম্বাবুয়েকে ইনিংস ও ১০৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে সিরিজে সমতা আনলো দলটি। প্রথম ইনিংসে ২১৭ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১১ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের তাদের প্রথম ইনিংসে করে ৪৪৪ রান।

বাংলাদেশের এই জয়ের মূল নায়ক অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। তার সেঞ্চুরিতেই বড় লিড পায় টাইগাররা। এরপর তুলে নেন ফাইফার। সাকিব আল হাসান ও সোহাগ গাজীর পর তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে একই টেস্টে কোনো ইনিংসে  পাঁচ উইকেট ও সেঞ্চুরি পেলেন মিরাজ।

তবে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে জোড়া আঘাত হানেন আগের ইনিংসে ছয় উইকেট নেওয়া তাইজুল ইসলাম। ব্রায়ান বেনেটকে (৬) দ্বিতীয় স্লিপে সাদমান ইসলামের ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। একই ওভারে নিক ওয়েলচকেও ফেরান এই স্পিনার। তার অফ স্টাম্পে রাখা  ডেলিভারি না খেলে ছেড়ে দেন ওয়েলচ। বল প্যাডে লাগলে জোরাল আবেদন করলেও সাড়া মিলেনি আম্পায়ারের কাছ থেকে। তবে রিভিউ নিলে রিপ্লেতে দেখা যায়, স্টাম্পে লাগত বল। খালি হাতে ফেরেন ওয়েলচ।

এরপর বল হাতে নিয়েই জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত হানেন নাঈম হাসান। তার অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরের বল ডিফেন্স করতে গেলে শন উইলিয়ামসের (৭) ব‍্যাটের কানায় লেগে চলে যায় দ্বিতীয় স্লিপে দাঁড়ানো সাদমানের হাতে। দলীয় ২২ রানে তিন উইকেট হারিয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিনকে নিয়ে দলের হাল ধরেন বেন কারান। ৪৭ রানের জুটি গড়ে ভালো কিছুর আভাসও দিচ্ছিলেন এই দুই ব্যাটার। কিন্তু এ জুটি ভেঙ্গেই উইকেট প্রাপ্তির শুরু করেন মিরাজ।

মিরাজের বলে ক্রিজ ছেড়ে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। এর আগে ব্যক্তিগত ১৬ রানে জীবন পেয়েছিলেন এই মিরাজের বলেই। তবে সেবার বেঁচে গেলেও তার সদ্ব্যবহার করতে পারেননি আরভিন। শেষ পর্যন্ত ৫৬ বলে করেন ২৫ রান। সে ওভারের শেষ বলে ওয়েসলি মাধেভেরেকেও তুলে সফরকারীদের বড় চাপে ফেলে দেন মিরাজ। তার অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে ভেতরে ঢোকা বলে ডিফেন্স করতে গেলে লাইন মিস করে লাগে প্যাডে। আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েছিলেন মাধেভেরে। কাজ হয়নি, খালি হাতে ফিরতে হয় তাকে। 

পরের ওভারে ফিরে টাফাডজোয়া সিগাকেও ফেরান মিরাজ। আগের বলেই আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচেছিলেন সিগা। কিন্তু পরের বলেই শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে ফিরে যান এই ব্যাটার। তৃতীয় ব‍্যাটসম‍্যান হিসেবে শূন্য রানে ফিরলেন সিগা। স্কোরবোর্ডে ২০ রান যোগ হতে বড় শটের চেষ্টায় কাটা পড়েন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা।

তবে এক প্রান্ত আগলে জিম্বাবুয়েকে আশা দেখাচ্ছিলেন কারান। তবে শেষ পর্যন্ত ফিফটি তুলে নেওয়ার আগেই তাকে ফেরান মিরাজ। একই সঙ্গে পূরণ করেন নিজের ফাইফারও।  তার স্টাম্পের একই বাইরে রাখা বলে খোঁচা মেরে উইকেটরক্ষক জাকের আলীর হাতে ক্যাচ দেন কারান। ১০৩ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৪৬ রান করেন এই ওপেনার। এরপর রিচার্ড এনগাভারাকে ছাঁটাই করেন তাইজুল। আর ভিনসেন্ট মাসেকেসা রানআউট হলে শেষ হয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। ইনিংস জয় পায় টাইগাররা। 

এর আগে সকালে আগের দিনের ৭ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ তিন উইকেট হারিয়ে এদিন আরও ১৪৭ রান যোগ করে টাইগাররা। যার মূল কৃতিত্ব মেহেদী হাসান মিরাজের। অবশ্য ভালো সহায়তা পেয়েছেন তাইজুল ইসলাম তানজিম হাসান সাকিবের। তাইজুলের সঙ্গে ৬৩ রানের জুটির পর তানজিমের সঙ্গে গড়েন ৯৬ রানের জুটি।

শেষ পর্যন্ত ১০৪ রানের ইনিংস খেলে মাসেকেসার বলে আউট হন মিরাজ। ১৬২ রানের ইনিংসটি ১১টি চার ও ১টি ছক্কায় সাজান এই অলরাউন্ডার। ৮০ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪১ রানের ইনিংস খেলেন তানজিম। তাইজুল করেন ২০ রান।  

Comments

The Daily Star  | English
bad loans rise in Bangladesh 2025

Bad loans hit record Tk 420,335 crore

It rose 131% year-on-year as of March of 2025

12h ago