ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ

১১ ম্যাচ ও ৯ বছর পর আবাহনীকে হারাল মোহামেডান

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ওপেনার আনিসুল ইসলাম ইমন খেললেন দারুণ ইনিংস। তার সঙ্গে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের বড় জুটি ভাঙার পর আর কেউ দায়িত্ব নিতে পারলেন না। তাই মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব আটকে গেল মাঝারি সংগ্রহে। সেই পুঁজি নিয়েই পেসার ইবাদত হোসেনের তোপে মর্যাদার ম্যাচে জিতল তারা। বিফলে গেল আবাহনী লিমিটেডের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর লড়াই।

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় দুই ঐতিহ্যবাহী দল। সেখানে ৩৯ রানে জিতেছে মোহামেডান। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ বল বাকি থাকতে ২৬৪ রানে অলআউট হয় তারা। জবাবে ১৬ বল আগেই আবাহনী গুটিয়ে যায় ২২৫ রানে।

লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে সব মিলিয়ে ১১ ম্যাচ ও প্রায় ৯ বছর পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাতে পারল মোহামেডান। শেষবার তারা আকাশি-নীলদের হারিয়েছিল ২০১৬ সালের মে মাসে। সেবারের ডিপিএলের লিগ পর্বে ৮ উইকেটে জিতেছিল সাদা-কালোরা। এরপর আবাহনীর বিপক্ষে জয়ের তৃপ্তি কেমন তা যেন ভুলে গিয়েছিল দলটি। এবার সেই অপেক্ষার পালা শেষ হলো।

লিগ পর্বে দ্বিতীয় হারের তেতো স্বাদ পেলেও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেই রইল আবাহনী। ১১ ম্যাচে তাদের অর্জন ১৮ পয়েন্ট। সমান ম্যাচে নবম জয়ে সমান পয়েন্ট পাওয়া মোহামেডানের অবস্থান দুইয়ে। কারণ, নেট রান রেটে পিছিয়ে তারা। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে সামনে সুপার লিগে খেলবে দল দুটি। সেখানে অংশ নেবে পয়েন্ট তালিকার সেরা ছয়টি দল।

লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া আনিসুলের এটি ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন তিনি ১১৪ রান করে। ১১৮ বল মোকাবিলায় ১৮ চারের সঙ্গে মারেন ২ ছক্কা। ব্যাট হাতে যেমন আনিসুল, তেমনি বল হাতে মোহামেডানের হয়ে নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখান ইবাদত। ৯.২ ওভারে একটি মেডেনসহ ৩৬ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। লিস্ট 'এ' ক্রিকেটে এটি তারও ক্যারিয়ারসেরা ফিগার।

 

লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় আবাহনী। ক্যাচ তুলে জিশান আলম টিকতে পারেননি। ১২ বলে ৩ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার হন তিনি। আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে বিপজ্জনক হতে দেননি ইবাদত। ১২ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ রানে থামেন তিনি। এরপর শান্ত ও মোহাম্মদ মিঠুনের প্রতিরোধ লড়াই দীর্ঘ হয়নি। ১৮ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৯ রান করা মিঠুনকে বোল্ড করেন মিরাজ।

৫৯ রানে ৩ উইকেট হারানো দলকে টানেন শান্ত ও মুমিনুল হক। চতুর্থ উইকেটে তারা গড়েন ৬৭ রানের জুটি। রান তোলার গতিও ছিল ভালো। এই জুটি ভেঙে মোহামেডানকে ব্রেক থ্রু দেন ইবাদত। মুমিনুল ৩৮ বলে ১ চারে ২৫ রানে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। এরপর তাইজুল ইসলামের বলে মাহফুজুর রহমান রাব্বি উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে ফের চাপে পড়ে যায় আবাহনী। তিনি করেন ৯ বলে ১ রান।

বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের আশার আলো হয়ে একপ্রান্ত আগলে খেলে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টেস্ট অধিনায়ক শান্ত। সঙ্গী হিসেবে তিনি পান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। তাদের জুটি যখন মোহামেডানের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল, তখনই আবার মঞ্চে আবির্ভূত হন ইবাদত। ৪৪ রানের জুটি ভেঙে দেন তিনি। মোসাদ্দেক ২১ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় করেন ২৪ রান। কিছুক্ষণ পর শান্তকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বোল্ড করলে আবাহনী একরকম ছিটকে যায় লড়াই থেকে। শান্ত ১১৩ বলে ৭ চারে করেন ৮০ রান।

মোহামেডানের জয়ের ব্যবধান কমে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর কারণে। তিনি শেষদিকে ৩৩ বলে ১ চারে করেন ২৪ রান। রিপন মণ্ডলকে ক্যাচ বানিয়ে ম্যাচের ইতি টানেন সেই ইবাদতই। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া স্পিনার মিরাজ ৩১ রানে ও পেসার সাইফউদ্দিন ৪৪ রানে পান দুটি করে উইকেট।

মোহামেডানের ব্যাটিংয়ের রিপোর্ট পড়ুন এখানে।

Comments

The Daily Star  | English
Barishal University protest

As a nation, we are not focused on education

We have had so many reform commissions, but none on education, reflecting our own sense of priority.

9h ago