সাক্ষাৎকার

লেগ স্পিনার নিয়ে বাংলাদেশের কোচদের মনোভাব দেখে অবাক ইংলিশ স্পিনার

Jake Lintott
৫ উইকেট নেন জ্যাক লিন্টট। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

রিস্ট স্পিনারদের ঘাটতি এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রায় দুর্ভিক্ষের মতন। এই দুর্ভিক্ষের প্রভাব পড়ছে ব্যাটারদের দক্ষতাতেও। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলতে এসে ইংলিশ বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার জ্যাক লিন্টট টের পেয়েছেন এখানকার এই রোগ। তবে আকালের সময়ে লেগ স্পিন নিয়ে স্থানীয় কোচ, অধিনায়কদের মনোভাব তাকে করেছে অবাক। ফিরে যাওয়ার আগে দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন তার অভিজ্ঞতার কথা।

শুরুতে টানা হারে বিপর্যস্ত মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে বাঁহাতি লেগ স্পিন ঝলকে সুপার লিগে নেওয়ার অন্যতম নায়ক তিনি।  মোহামেডানের হয়ে এবার ৬ ম্যাচ খেলে ১৮.৩৫ গড়ে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচ সেরা।

স্কুল শিক্ষকতা ছেড়ে ২৬ বছর বয়েসে পেশাদার ক্রিকেট শুরু করার পর ইংল্যান্ডের ঘরোয়া পর্যায়ে মূলত টি-টোয়েন্টি খেলে বেড়ান লিন্টট। 'দ্য হানড্রেড' টুর্নামেন্টের ব্যস্ততার কারণে তার লিস্ট-এ অভিজ্ঞতা ছিল কেবল এক ম্যাচের। অর্থাৎ খুব একটা বড় পর্যায়ের স্পিনার হিসেবে এখনো নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। তবে তাতেও বাংলাদেশে এসে প্রভাব ফেলতে কোন সমস্যা হয়নি।

এর আগে বিপিএলে ফরচুন বরিশালে খেলে যাওয়ায় সাকিব আল হাসানের সঙ্গে একটা খাতির হয়েছে। এবার সাকিবের ডাকেই মোহামেডানের হয়ে খেলতে এসে বাড়িয়েছেন অভিজ্ঞতা, ঋদ্ধ করেছে নিজের পরিসংখ্যান। আর টের পেয়েছেন রিস্ট স্পিন বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাছে রীতিমতো এক ধাঁধার নাম,  'তারা (বাংলাদেশের ব্যাটাররা) জানে না কোন বল কোনদিকে বল ঘুরবে। এবং তারা বল বুঝতে কঠিন সমস্যায় পড়ে। সেজন্য আমি  গুগলি, লেগ স্পিন, স্লাইডারের মিশ্রণে বেশ কিছু সাফল্য পেয়েছি, ব্যাটারদের জন্য কঠিন করেছি পরিস্থিতি।'

রিস্ট স্পিনার যে বাংলাদেশে একেবারে নেই তা নয়। যে কজন আছেন তারা মূলত ম্যাচ খেলার সুযোগ পান না। একাদশে থাকলেও সেভাবে বোলিং পান না।  লিন্টটের মনে হচ্ছে অধিনায়ক ও কোচদের মানসিকতাই এখানে রিস্ট স্পিনারদের বিকশিত হতে দিচ্ছে না,  'তাদের সঙ্গে (কোচ) এসব নিয়ে কথা বলেছি। একদম প্রথম ম্যাচ থেকেই এখানে এসে খেয়াল করলাম, যদি একাধিক বাজে বল দেই তাহলে তারা খুব দ্রুত আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেয়। ছক্কা বা চার খেলে মনে হয় অপরাধ করে ফেলেছি। কিন্তু লেগ স্পিনারদের নিয়ে আপনাকে ধৈর্য ধরতে হয়।' 

লেগ স্পিনাররা মাঝে মাঝে রান দিয়ে দেবেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ধাপে উইকেট এনে খেলার পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেবেন। তাই তাদের উপর আরেকটু ভরসা করার কথা জানালেন তিনি,  'আমার মনে হয় পুরো বাংলাদেশেরই রিস্ট স্পিনারের জন্য আকুতি আছে। কারণ ঘরোয়া পর্যায়ের ব্যাটাররা এই ধরণের বলের বিপক্ষে সংগ্রাম করে। বাংলাদেশ খেলোয়াড় কোচ ও অধিনায়করা যদি তরুণ রিস্ট স্পিনারদের নিয়ে আরেকটু বেশি ধৈর্যশীল হয় তাহলে তারা আরও ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারবে, আরও সুযোগ তৈরি হবে।'

মোহামেডানে অবশ্য শেষ পর্যন্ত ভালো অভিজ্ঞতাই হয়েছে লিন্টটের। শুরুতে রান দিলেও পরে যখন টপাটপ উইকেট পাওয়া শুরু করলেন তার গুরুত্ব বুঝতে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্ট, 'আমার বোলিংয়ের ধরন নিয়ে পরে তাদের সঙ্গে খুব ভালো বোঝাপড়া হয়ে গিয়েছিল।'

সোমবার শেষ হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের রাউন্ড রবিন লিগ। ঈদের ছুটির পর ছয় দলকে নিয়ে হবে সুপার লিগ। যাতে মোহামেডানের অবস্থান পাঁচে। এই জায়গা থেকে শিরোপা জেতা বেশ কঠিন। সুবিধাজনক সূচি হলে আর মোহামেডানের দরকার হলে ফের বাংলাদেশে আসতে পারেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

2h ago