‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, কোয়ালিটি ইজ পার্মানেন্ট’

Litton Das
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে যখন দল ঘোষণার তোড়জোড় চলমান, তখন মূল মাঠের সেন্টার উইকেটে ব্যস্ত লিটন দাস। স্পিনার, পেসার মিলিয়ে কয়েকজন নেট বোলার নিয়ে লম্বা সময় ধরে চালালেন ব্যাটিং অনুশীলন। খানিক পর দল ঘোষণায় অবধারিতভাবেই এলো তার প্রসঙ্গ।

লিটনের বিশ্বকাপ দলে থাকা নিয়ে এমনিতে অনিশ্চয়তা ছিলো না, সাম্প্রতিক বাজে ছন্দের পরও অনুমিতভাবেই দলে আছেন তিনি। এমনিতে টি-টোয়েন্টিতে তিনি দেশের সফলতম ওপেনার। কিন্তু গত ১০টি টি-টোয়েন্টিতে কোন ফিফটি করতে পারেননি। ওয়ানডেও চলছিল একই দশা। 

তবে আরেকটু পেছনে গেলে এই লিটনের ব্যাটেই ছিলো রানের ফোয়ারা। সেই লিটন যেন এখন একদম অচেনা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে নেমে যেভাবে আউট হয়েছেন, সেটাও আভাস দেয় মানসিকভাবে নির্ভার অবস্থায় নেই তিনি।

Litton Das
লিটনকে নিয়ে কাজ করছেন খালেদ মাহমুদ সুজন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচে লিটনকে খেলানো হয়নি। ম্যাচ না খেলে তিনি কাজ করেছেন ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্পের সঙ্গে। লিটন প্রসঙ্গ উঠলে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বাস্তবতা তুলে ধরে দেন নিজের ব্যাখ্যা,  'সত্যি বলতে, ফর্মের ঘাটতি তো অনেক বেশি। এটা বাস্তব সত্য। ফর্ম পুনরুদ্ধারের জন্য ব্যাপক চেষ্টা করতে হবে। এই ফর্ম চলতে থাকলে অবশ্যই তা চিন্তার ব্যাপার। আমরা যেটা বলি যে, "ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, কোয়ালিটি ইজ পার্মানেন্ট,", আশা করতে পারি যে এটা আমাদের জন্য ঘটুক। তারা তাদের সামর্থ্য ফিরে আসুক, তাদের স্বমহিমায় ফিরে আসুক।'

লিটনের বিকল্প ভাবতে গিয়ে শুধু ওপেনিং নয়, কিপিং সামর্থ্যও বিবেচনায় নিতে হয়েছে বলে জানান লিপু, 'লিটনের পরিবর্ত ভাবতে গেলে উইকেটকিপিং সামর্থ্যও সেখানে এসেছে। কারণ, দুজন কিপার নিয়ে যেতেই হবে। কনকাশনের ব্যাপারগুলি আপনারা সবাই জানেন।'

'শুধু ওপেনিংয়ের বিকল্প বললে হয়তো অন্য নাম আসতো। এক্ষেত্রে (কিপার ও ওপেনার) এনামুল হক বিজয়ের নাম আমরা আলোচনা করেছি। কিন্তু ফর্মের ঘাটতির পরও লিটনের ওপর আমরা আস্থা রেখেছি। তাকে নিয়ে কিন্তু কাজ করা হচ্ছে।'

নিজের ভুলের চক্র থেকে বের হতে কাজ করছেন লিটন। রোববার পঞ্চম টি-টোয়েন্টির পর টানা দুই ঘণ্টা নেটে কাজ করেন। মঙ্গলবারও তাকে নিবিড় অনুশীলনে পাওয়া গেছে। একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যেই কাজ করা হচ্ছে বলে জানান প্রধান নির্বাচক। তাদের আশা ভুল থেকে বেরিয়ে ফুল ফুটাবেন লিটন,  'যে দুটি ম্যাচ যে তিনি খেলেননি, সেই সময় তাকে নিয়ে… তার আস্থার জায়গা কীভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়, সেই প্রচেষ্টা আমাদের কোচিং স্টাফ করে যাচ্ছে।'

'এটা তো আগে থেকে বলা যায় না… ডেলিভার করার পরই বলা যাবে, কতটুকু কী পুনরুদ্ধার করা যাচ্ছে…। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যে ঘাটতি আমরা তার লক্ষ্য করছি, শট নির্বাচনের ক্ষেত্রে, বল নির্বাচনের ক্ষেত্রে…সেই জায়গায় তাকে আরও পোক্ত করার জন্য আমাদের কোচিং স্টাফরা চেষ্টা করছে।'

লিটনকে দলে রাখার ক্ষেত্রে কাজ করেছে বড় মঞ্চে তার পারফরম্যান্সও। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ২৭ বলে ৬০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে জেতার দারুণ সম্ভাবনা জাগান লিটন। বিশ্ব মঞ্চে গিয়ে তিনি আবার এমন ছন্দে পারেন কিনা দেখার বিষয়।

Comments

The Daily Star  | English
Income inequality in Bangladesh

Growth obsession deepened rich-poor divide

Income inequality in Bangladesh has seen a steep rise over the past 12 years till 2022, according to official data, as economists blame a singular focus on growth rather than sorting out income disparities.

15h ago