বাংলাদেশকে লড়তে না দেখে লঙ্কান ব্যাটিং কোচই অবাক
লক্ষ্যটা পাহাড়সম। ম্যাচ জিততে হলে ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে যা হয়নি, সেটাই করার চ্যালেঞ্জ। ড্র করতে হলেও দুই দিনের বেশি টিকে থাকার প্রায় অসম্ভব চ্যালেঞ্জ। তাই বলে একদম হাল ছেড়ে দিয়ে আত্মাহুতির মিছিল? বাংলাদেশের ব্যাটারদের অদ্ভুত অ্যাপ্রোচে ব্যাট করতে দেখে শ্রীলঙ্কা ব্যাটিং কোচ থিলিনা কান্ডাম্বিও অবাক।
সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে নিশ্চিত হারের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। অতি নাটকীয় কিছু না হলে এই টেস্টের ফল আর ভিন্ন কিছু হওয়ার উপায় নেই।
দুই সেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কা ৪১৮ রান করার পর বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫১০ রানের। দিনের শেষ ১৩ ওভার ব্যাটিং পেয়ে পড়তে থাকে একের পর এক উইকেট। শুরুতে মাহমুদুল হাসান জয় আউট হন এলবিডব্লিউতে।
এরপর দ্বিতীয় ওভারে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে দেন স্লিপে ক্যাচ। আর আত্মঘাতী বিদায়ের চাপ সামলাতে না সামলাতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাকির হাসান ও শাহাদাত হোসেন দিপুও। দিপু আউটের পর ক্রিজে আসেন লিটন দাস। তিনি ছাড়িয়ে যান সবাইকে।
মুখোমুখি প্রথম বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কার চেষ্টায় যান ডানহাতি ব্যাটার। টাইমিং গড়বড় করে ক্যাচ দেন সহজে। ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে বাংলাদেশ।
স্বাগতিক দলের এমন অদ্ভুতুড়ে ব্যাটিং দেখে চমকে গিয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হয় লঙ্কান কোচের কাছে। দিনের খেলা শেষে কথা বলতে আসা কান্ডাম্বি জানান তারা এমনভাবে ম্যাচে প্রভাব তৈরি করতে পারবেন হয়ত সেটা ভাবতে পারেনি শ্রীলঙ্কা, 'এটা মাঝেমাঝে হয়ে যায়। দিনের খেলার শুরুতে চিত্রটা একদম ভিন্ন ছিলো। আমরা এমন শক্তভাবে খেলায় ফিরব তারা প্রত্যাশা করেনি। এটা একটা কারণ। বাংলাদেশ সাধারণত লড়াই করে, আমি নিজেও তাই একটু অবাক।'
অথচ এই টেস্টের শুরু থেকে সব কিছু পক্ষে ছিলো বাংলাদেশের। টস জিতে বোলিং বেছে ৫৭ রানে সফরকারীদের ৫ উইকেট ফেলে দেয়। ওই অবস্থা থেকে ২০২ রানের জুটিতে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস। দুজনেই করেন ১০২ রান করে। তাও ২৮০ রানেই থামে তারা।
জবাবে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৮৮ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ফের লঙ্কানদের হিরো ধনঞ্জয়া-কামিন্দু। এবার ১৭৩ রানের জুটি আনেন তারা। ধনঞ্জয়া করেন ১০৮, ১৬৪ রানের ইনিংস খেলেন কামিন্দু।
শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসের পরই মূলত ম্যাচের ছবি পরিস্কার হয়ে যায়। তবে ব্যাটাররা লড়াই করতে পারলে, ব্যক্তিগত কিছু ঝলক দেখাতে পারলেও পরের টেস্টের আগে মিলত আত্মবিশ্বাস। তারা আত্মঘাতী শটে নিজেদের নিবেদন করেছেন বরং প্রশ্নবিদ্ধ।
Comments