শান্ত কেন হয়েছিলেন এতটা আক্রমণাত্মক?
পার্টটাইমার গ্লেন ফিলিপসের বলে আউট। তাও কিনা ফুলটসে! সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসে ফিলিপসের ফুলটসেই উইকেট খুইয়ে বসেছিলেন নাজমুল হাসান শান্ত। যে আউটের পক্ষে কেউ বলার মতো কিছুই পাবে না। অমন আউটের কারণেই কি দ্বিতীয় ইনিংসে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে খেলেছিলেন তিনি? দুই ইনিংসেই অবশ্য আক্রমণাত্মক রূপ দেখা গেছে টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে প্রথমবারের মতো অধিনায়কত্বে নামা শান্তকে। সেই ভূমিকা নেওয়ার পেছনের কারণের সঙ্গে ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনার পুরোটাই শান্ত জানিয়ে দিলেন খোলামেলা।
শনিবার শেষ হওয়া সিলেট টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৫০ রানের স্মরণীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে শান্ত খেলেন ১৯৮ বলে ১০৫ রানের ইনিংস। টেস্টসুলভ ওই ইনিংসের শুরুতেও তিনি বেশ মারমুখী ছিলেন। মুখোমুখি হওয়া প্রথম ৪৫ বলে এনেছিলেন ৩৭ রান, মেরেছিলেন পাঁচটি চার। পরে খেলার ধরনে বদল এনে শেষমেশ পান সেঞ্চুরি। জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে শান্ত জানান দ্বিতীয় ইনিংসে তার ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনা, 'প্রথমত খেলাটা তো আমার একার না, পুরো দলের। দলের জন্য আমি কতটুকু ব্যাটিং করছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে কিন্তু ওরা একটু আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই আমার কাছে বিকল্প ছিল, বাউন্ডারির পথ আমি পাচ্ছিলাম। কারণ এই উইকেটে অনেক লম্বা সময় ধরে রক্ষণ করা সহজ নয়, আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে লেগেছে, যেহেতু সামনে অনেকগুলো ফিল্ডার ছিল, তো ওই সময় আমি আক্রমণ করেছি।
'আর যখন ওরা একটু ইন-আউট ফিল্ড সাজিয়েছিল, আমার ওই রক্ষণাত্মক শটগুলো খেলতে খুব কষ্ট হয়নি। তখন আমি আমার স্বাভাবিক খেলার পরিকল্পনায় সরে গেছি। আমি ওই রকম ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে যাইনি। ওরা আবার যখন আক্রমণ করেছে, তখন রানের জন্য গিয়েছি। পরিকল্পনা ওরকম ছিল, একেক সময় একেক রকম পরিকল্পনা হয়। ওইভাবে আমি এগিয়েছি। আমার প্রথম ইনিংসের কথা যদি বলি, তখন আমাকে অনেক আক্রমণ করেছে, সবগুলো ফিল্ডার উপরে রেখেছে। তো আমি ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যাটিং করেছি।'
প্রথম ইনিংসে ৩৫ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেন শান্ত। শুরু থেকেই যে ইনিংসে আগ্রাসী ছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। প্রথম ২৩ বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনটি, সঙ্গে দুটি চারও মেরেছিলেন। কিন্তু একদম নিরীহ বলে আউট হয়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে পরিকল্পনায় বদল আসে কিনা জানতে চাওয়া হলে শান্ত বলেন, 'না, এরকম কোনো কিছু ছিল না। কারণ আমি চিন্তায় খুবই পরিষ্কার ছিলাম। আপনি যদি ফিল্ড সাজানো দেখেন আমার বিপক্ষে, ওরা অনেক আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়েছিল। তো আমার যে শটগুলো দেখে মনে হয়েছে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ শট, সেসব খুবই কম ঝুঁকির শট ছিল আমার কাছে মনে হয়। আমার ব্যাটে যদি ভালোমতো সংযোগ না-ও হয়, ফিল্ডারের উপর দিয়ে গিয়ে বাউন্ডারি হতে পারে।'
'ওইটা আমার খেলার কৌশল ছিল, দ্বিতীয় ইনিংসে আসলে মনে হয়েছে যে, আমি অনেক দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করেছি। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেও আমার পরিকল্পনা একই রকম ছিল। যেহেতু ফিল্ডাররা পেছনে ছিল, তো আমার প্রয়োজন হয়নি ফিল্ডারের উপর দিয়ে ছয়-চার মারার। আমি কম ঝুঁকি নিয়ে স্বাভাবিক ব্যাটিং করে চালিয়ে গেছি। একেক সময় একেক রকম পরিস্থিতি থাকে, ওই অনুযায়ী শুধু ব্যাটিং করার চেষ্টা করেছি।'
Comments